মানুষ মাত্রই আরমপ্রিয় , শিশুদের বেলায় এটা অনেক বেশী খাটে তাই বর্তমানে মোবাইল, মুঠোফনে, টেলিভিশনে সামনে বিভিন্ন কার্টুন দেখিয়ে  শিশুকে রেখে খাবার খাওয়ানো অনেক বেশী দেখা যাচ্ছে ।  শিশুরাও মুঠোফনে, টেলিভিশনে বিভিন্ন কার্টুন দেখে খাবার খেতে পাছন্দ করছে । যার ফলে খালাধূলার মত সবচেয়ে বড় অংশ শিশুরা আজ ভুলে যাচ্ছে । অপর দিকে শিশুদের হালাকা পাতলা শরীর যেখানে স্বাভাবিক ভাবে থাকার কথা সেখানে থাকছে মোটা স্থুলতা শরীর । সময়ের সাথে সাথে অনেক কিছুর পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে কিন্তু সাস্থ্য পরিবর্তন হচ্ছে না ।


 চলুন তাহলে দেখি শিশুদের মোটিয়ে যাওয়ার পিছনে কি কী কারণ থাকতে পারে ঃঃ

বিজ্ঞানসম্মত ভাবে সাধারনত শিশুর শরীরের ওজন এবং তার উচ্চতার একটা আনুপাতিক হিসেব করে শিশুর মোটা হয়ে যাওয়া সঠিকভাবে নির্ণয় করা হয় । যদি একটি শিশুর শরিরে অতিরিক্ত চর্বি জমে এবং বয়সের তুলনায় তা অতিরিক্ত হয় তখন শিশুটি মোটা হয়ে যায় । ইট পাথর আর লোহার আবরনে ঢেকে যাচ্ছে শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত। যেখানে পূর্বে থাকতো খোলা মেলা অনেক জায়গা এখন আর তেমন দেখা যাচ্ছে না । সব চার দেওয়ালের মধ্যে বন্দি হয়ে যাচ্ছে সব কিছু । প্রধান কারণ হচ্ছে যথেষ্ঠ কায়িক পরিশ্রম  অভাব, তার তুলনায় বেশী বেশী খাবার খাওয়ানো। বেশী বেশী করে শর্করা জাতীয় খাবার খাওয়ানো যার মধ্যে আছে ভাত, মিষ্টি, কোমল পানীয়, চর্বিযুক্ত খাবার,  তাছাড়া জাঙ্ক ফুডে আসক্তি । এছাড়াও রয়েছে বংশগত কারণ, শরীরে হরমোন জনিত সমস্যা, থায়রয়েড হরমোন ঘাটতি, বেশি সময় ধরে স্টেরয়েড জাতীয় মেডিসিন গ্রহন, মেয়েদের পলিসিস্টিক ও ওভারী সমস্যা এছাড়ও বডীতে করটিসল হরমোনের আধিক্য ও স্থুলতায় ভূমিকা রাখে । 

স্থুলতা/মোটিয়ে যাওয়ার কারণে কী কী হতে পারে ঃঃ

@ অতিরিক্ত মোটা শিশুদের খুব কম বয়সে উচ্চরক্তচাপ, ডায়বেটিস হবার ঝুকি থাকে সবচেয়ে বেশী । 

@ স্থুলতার কারণে রক্তে চর্বি বেড়ে যায় এবং করনারী রক্তনালী সমস্যা ও স্ট্রোক হবার ঝুকি বেড়ে যায় । 

@ অতিরিক্ত ওজনে হাতে ব্যাথা; পা বাঁকা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে ।  

@  অতিরিক্ত ওজনের ফলে রাতে ঘোমানোর সময় শ্বাস নেওয়া কষ্ট হয়, হাপানি রোগ দেখে দিতে পারে 

@ ঘাড়ের চমড়া কালো হয়ে যায় । 

@ শিশুর কাজকর্মে কম সময়ে ক্লান্ত হয়ে যায় । অলস হয়ার প্রবনতা অনেক বেশী থাকে । 

@ অনেকের যকৃতে চর্বি জমে ফ্যাটি লিভার নামক একধরনের রোগের সৃষ্টি হয়ে । 

@ বিভিন্ন খালাধূলাতে অনিহা প্রকাশ , পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়া , মনযোগী হয়ে কোন ভালো কিছু করতে না চাওয়া, নিজেকে অনমন্সক্য রাখা, খিট খিটে স্বভাবের হওয়া  এমন অনেক সমস্যার সম্মুখীন হওয়া । 

কী করে এই স্থুলতা/মোটিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায় ঃঃ

*দৈনিক খাবারের সময় নির্ধারণ করে বাসার সবাই যতদুর সম্ভব একসাথে বসে খাবার খেতে হবে যেন শিশুদের মনে অভ্যাসে পরিণত হয় ।

* সাস্থ্যকর ও অসাস্থ্যকর খাবারের বিষয়ে শিশুকে সচেতন করতে হবে । 

* জোর করে খাওয়ানো যাবেনা । মুঠোফন, টেলিভিশন দেখিয়ে খাওয়ানোর অনুশীলন বন্ধ করতে হবে । 

* শিশুরা খেতে চাইলেই শুধু সাস্থ্যকর খাবার দিন এবং খেতে যখন চাইবে তখন শুধু খাবার দিন ।

* শিশুদের নিজে নিজে খেতে অভ্যাস করুন হাতে হাতে খাইয়ে দেওয়ার অভ্যাস পরিহার করুন । 

*প্রতিদিন নিয়মিত খেলাধুলা করা সময় নির্ধারন করে দিন সাথে কায়িক পরিশ্রম করতে উৎসাহিত করুন ।

* অতিরিক্ত চিনি যুক্ত খাবার অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত দোকানারে খাবার থেকে বিরত রাখুন আপনার শিশুকে । চিনিযুক্ত কোমল পানীয় থেকে দূরে রাখুন । 

* ভালো শাকসবজি, ডাল, মাছ  ইত্যাদি শিশুর চাহিদা অনুযায়ী খাবার বাড়ীতে  বানিয়ে খাওয়াতে হবে । 

সর্বপরী শিশুর মোটিয়ে যাওয়ার আগে থেকেই শিশুর প্রতি খেয়াল রখতে হবে যদি এমন হয় তাহলে একজন ফিজিসিয়ান বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে আর শুরু করতে হবে সঠিক চিকিৎসা । যেখান থেকে পূর্ব জটিলতা শুরু হওয়ার আগে থেকেই নিতে হবে প্রতিকারের ব্যাবস্থা ।  


Post a Comment

Please do not link comment any spam or drive spams content

Previous Post Next Post