একজন সফল মানুষ তারাই যারা এই দুটি কাজ সঠিক সময় সমপন্ন করেতে পারেন । সেটা কি করে করতে পারেন । বা এই দুটি গুণ যদি সবার থাকতো তাহলে সবাই ভালো জীবন যাপন করেতে পারতো । 

আমারা যদি ইতিহাসের দিকে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো যে কিছু মানুষ দিনে আয় করছে তিন (৩০০০) হাজার ডলারের চেয়েও বেশী । তাদের মধ্যে দুজন ছিলেনে ওয়ালটাড় ক্রাইসলার এবং চার্লস সোয়াব । তাহলে কি এরা চরম প্রতিভাবান ? নাকি সবজন্তা সমসের ? কেন ইতিহাসে এরা সবচেয়ে বেশী টাকা মাইনে পেল? হ্যাঁ অবাক হাবার মত ব্যাপার । সোয়াব কাজ করতো ইস্পাত কারখানায় । তাহলে কি ইস্পাত ভাল কি করে তৈরি করতে হয় সে ব্যাপারে সে সবার চাইতে অনেক অনেক বেশী জনতো ? কিন্ত সোয়াব বলেছিল না আমার চেয়েও অনেক আছেন যারা বেশী জানে । তাহলে কী করে আপনি বেশী মাইনে পাচ্ছেন ? এমন প্রশ্নের জবাবে এক সক্ষাতকারে তিনি  আমেরিকার টাইম ম্যাগাজিনে বলেছিলেন আমাকে এই মাইনে দেওয়া হতো বিশেষ করে মানুষের সাথে বিশেষভাবে ব্যাবহার দক্ষতার জন্য । টাইম ম্যাগাজিনের সাক্ষাতকার জনতে চেয়েছিলেন এটা তিনি কেমন করে করে করেন । তিনি নিজের মুখে বলেছিলেন যেটা চীরকাল মনে গেথে রাখার মত কথা। তিনি যে কথা গুলো বলেছিলেন সেটা চীরকালিন সম্পদের মত প্রতিটা বাড়ী, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়,  দোকান -পাত, আদালত, অফিস, সাংস্কৃতিক মঞ্চ, সব কর্মস্থলে সোনায় ঢালায় করে টাংঙ্গিয়ে রাখা উচিত । দক্ষিণ এশিয়ায় শিশুরা ইংলিশ ব্যাকরণ শিখতে গিয়ে যে সময় ও টাকা নষ্ট করে তার পরিবর্তে যদি এই কথা গুলো মনে গেথে রাখতে পারে ও মেনে চলতে পারে  তাহলে আমার বা আপনার জীবন ধারাও পালটে দিতে পারে ।  

চার্লস সোয়াব বলেছিলেন " আমি মনে করি মানুষের মধ্যে উৎসাহ জাগিয়ে তোলার ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে আমার যা কিছু সম্পদ । এটাই আমার সম্পদ , আমি বিশ্বাস করি মানুষের মধ্যে সবচেয়ে শীর্ষ বস্তু অর্জনের শ্রেষ্ঠ পথ হলো তাকে  প্রশংসা করা উৎসাহ  দেওয়া । আমি কোন অবস্থাতেই নিম্ন পদস্থ থেকে উচ্চ পদস্থ অবস্থানে লোকদের সমালোচনা করিনা । আমি সবসময় সবার প্রশংসা করেতে  সজাগ থাকি , কারো দোষ খুঁজে বেড়ায় না  আর আমি এটা মন থেকে ঘৃণা করি  কারোর দোষ খোঁজা ।  আমি শুধু মাত্র কোন মানুষকে কাজ করতে উৎসাহ দেওয়াতে বিশ্বাসী । আমি যা পছন্দ করি তা হলো আমার কাজে আমি আনন্দ ভোগ করি আর প্রশংসা করি প্রকট ভাবে  জোড় গলায় ।  " 

হ্যা ঠিক এটাই করেন সোয়াব আর তাতেই ইস্পাত কম্পানীর মালিক তাকে দিনে (৩০০০) তিন হাজার ডলার দিয়ে থাকেন । কিন্তু সাধারন আমরা মানুষেরা কি করি ঠিক এর  উল্টোটা । যদি দেখা গেল কোন দোষ খুঁজে পেয়েছে তাহলে চিৎকার করে কেন এটা হলো  কেন দোষটা করা হলো চেচামেচিতে যেন মরা মানুষকে জাগাতে চায় । কিন্তু ভালো কিছু থাকলে মুখ যেন খোলে না । 
সোয়াব আরো বলেছিলেন " আমি এই জীবনে  বিভিন্ন জায়গায় যাবার এবং ঘুড়ে বেড়ানোর সময় অনেক বিখ্যাত এবং  নামী দামী  মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছে  তাদের মধ্যে এমন কাউকে খোঁজে পাইনি যে প্রশংসা করলে খুশি হয়েছে এবং ভালো কাজ করেন নি কিন্তু সমালোচলনা করলে ক্ষুব্ধ হয়নি এমন কাউকে পাইনি । " আমরা ইতিহাসে যদি তাকাই তাহলে দেখবো জনসংযোগে বিখ্যাত ও সাফল্য পেয়েছিলেন রকফেলার । তারো একটি দক্ষতা ছিল আন্তরিকভাবে যে কাউকে প্রশংসা করতে পারতেন । তাঁর একজন অংশীদার বেডফোর্ড দক্ষিণ আমেরিকাতে ব্যাবসা করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১২ থেকে ১৫ লক্ষ ডলার ক্ষতি করে বসলেন। এতে রকফেলার কিন্তু চরমভাবে সমালোচনা করতে পারতেন। কিন্তু রকফেলার কিন্তু তা করেনি । রকফেলার সুন্দর করে বলেছিলেন "বেডফোর্ড আপনি যা হোক তুমি ষাট ভাগ তো বাঁচাতে পেরেছো সেটা অনেক বেশী আমাদের জন্য । "এ কাজ সত্যিই চমৎকার । অনেক উচ্চ গুণ সমপন্ন চালাক লোক ও এমন করতে পারতোনা যেটা তুমি করেছো । " 

আমার নানাভাবেই আমাদের ছেলেমেয়েদের, বন্ধু বান্ধব বা কর্মচারীদের শরীরের জন্য যত্নের ব্যাবস্থা করি । কিন্তু কদাচিৎ আমরা তাদের আত্মবিশ্বাসের যত্ন নিতে চাই না । আমারা তাদের মাংস, বাহারি সবজি, ডাল, আলু খাইয়ে শক্তি বাড়াতে সাহায্য করি কিন্তু চরম কষ্টের ও দুঃখের কথা তাদের কাজের জন্য প্রশংসার বাণী শোনাতে আমাদের অবহেলা অফুরন্ত । আমরা বুজতে চাই না যদি আমারা দিনে একবার হলেও ভালো ভাবে প্রশংসা করি তাহলে রকেটের বেগে তাদের মন ও কাজ সব ভালো থাকবে এমনকি মনের কষ্টটাও দূর হবে । এই প্রশংসা প্রভাত প্রার্থনার মত চিরজাগ্রত থাকবে অবিচল  চিরদিন । 
ইতিহাসের দিকে আমার যদি তাকাই আরো দেখবো জিগফিল্ড কে, তিনি একজন সবসেরা প্রমোদ সংগঠক । তিনি সুনামের অধিকারী হয়ে উঠেন আমেরিকান মেয়েদের গৌরবান্বিত করে তোলার কাজে সুক্ষ্ন ক্ষমতা অর্জন করে । জিগফিল্ড কাজ করতেন ,যাদের দিকে কেউ দুবার ফিরে তাকাই না এমন সাধারন মেয়েদের তিনি মঞ্চে বার বার নিয়ে এসে ক্রমে তাদের রহস্যময়ী ও লাবন্যময়ী করে গড়ে তুলতেন । প্রশংসা আর আত্নবিশ্বাসের মূল্য তিনে জানতেন বলেই তিনি মেয়েদের তাঁর সাহসিকতা ও বিবেচনাবোধ দিয়ে এই বিশ্বাস জাগাতেন যে তাঁর সুন্দরী । তিনি ছিলেন বাস্তববোধের মানুষ; তিনি কোরাসের মেয়েদের মাইনে ত্রিশ ডলারের বদলে একশো পচাত্তর ডলারে তুলে দেন । এছাড়া প্রতি অনুষ্ঠানের আগে টেলিগ্রামে শুভেচ্ছা জানাতেন এমনি রক্তগোলাপ উপহার দিতেন । 
তাই আসুন শুধু আন্তরিক আর ভালো প্রশংসা করি , অন্যকে সমর্থন করলে হাসিমুখে সেটা করি আর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠি । তাহলেই দেখবেন আপনার কথা মনে রাখবে আর সেটা আকড়ে রেখে সারাজীবন মনে রাখবে । আপনি তা ভুলে গেলেও বহু বছর পরও তাঁরা সেটা মনে রাখবে ।  
আমরা সাবাই প্রশংসা ও আত্নবিশ্বাস  এই দুটির মধ্যে ডুবে থাকতে চাই। সবাই জীবনের চলার পথে সবার সাথে ভালো ব্যবহার ভালো বন্ধুত্ব ভালো সম্পর্ক গড়ে প্রশংসা পাবার জন্য নিরন্তর এই মায়াবি  সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ থাকে।  

Post a Comment

Please do not link comment any spam or drive spams content

Previous Post Next Post