রোগমুক্ত থাকতে চান? নিয়মিত খেতে হবে ১০টি খনিজ পুষ্টি

স্বাস্থ্যবান হৃদপিণ্ড থেকে শুরু করে শক্তিশালী হাড় পাওয়ার জন্য প্রতিটি মানবদেহেরই দরকার পড়ে কিছু জরুরি খনিজ পুষ্টির। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এই অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এর যুগে আমরা প্রায়ই আমাদের দেহের চাহিদাকে অগ্রাহ্য করি। তারচেয়ে বরং আমরা শুধু স্বাদের ওপর জোর দেই। ফলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ কমে যায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক ১০টি খনিজ পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার সমুহের কথা যেগুলো নিয়মিত খেলে রোগমুক্ত থাকতে পারবেন।

১. সোডিয়াম

এই খনিজ পুষ্টি উপাদানটি রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি আমাদের দেহের নানা ধরনের তরল পদার্থের মধ্যকার ভারসাম্য বজায় রাখে। তবে বেশি মাত্রায় সোডিয়াম খেলে আবার ক্ষতি হতে পারে।

লবণ, আচার, ভাজা ও লবণাক্ত বাদাম, ঘোল, বেগুন, এবং তরমুজে সোডিয়াম পাওয়া যায়।

২. পটাশিয়াম

পটাশিয়াম এর আরেক নাম ইলেকট্রোলাইট। যা প্রোটিন গড়তে সহায়ক এবং কার্বোহাইড্রেটসকে আরো ভেঙ্গে ফেলতে কাজ করে। এবং হৃদপিণ্ডকে সচল রাখতে সহায়ক।

আলু, টমেটো, ব্রোকোলি, লাল মাংস, মুরগী এবং কমলায় পটাশিয়াম থাকে প্রচুর।

আরো পড়ুন ঃ ক্যান্সারের যে ৫টি লক্ষণ পুরুষদের অগ্রাহ্য করা উচিত নয় 

৩. ফসফোরাস

হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করা, হরমোনগত ভারসাম্য রক্ষা, এবং হাড়কে শক্তপোক্ত করতে কাজ করে এই খনিজ পুষ্টি উপাদানটি।

শীম, ডাল, টোফু, ব্রোকোলি, ব্রোকোলি, কর্ন, বাদামের মাখন এবং চিয়া বীজে আছে ফসফোরাস।

আরও পড়ুন: ফুসফুস ক্যান্সারের যে ৯টি প্রাথমিক লক্ষণেই সতর্ক হতে হবে

৪. জিঙ্ক

ঠাণ্ডা-সর্দি এবং ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে খুবই কার্যকর জিঙ্ক। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায়। এছাড়া প্রজনন উর্বরতাও বাড়ায় এটি।

হিজলি বাদাম, ছোলা, দই, ওটমিল, মুরগী, বুকের দুধ এবং সবুজ মটরশুটিতে পাওয়া যায় এই খনিজ পুষ্টি উপাদানটি।

আরো পড়ুন ঃ একটুও স্বাস্থ্যকর নয় বিস্কুট, হতে পারে ক্যান্সারও!

৫. ম্যাগনেশিয়াম

আমাদের দেহের জন্য আরেকটি জরুরি খনিজ পুষ্টি উপাদান হলো ম্যাগনেশিয়াম। গ্লুকোজের বিপাকীয় প্রক্রিয়া এবং হৃদপিণ্ডের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে ম্যাগনেশিয়াম। ম্যাগনেশিয়ামের ঘাটতি হলে হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয় এবং দেহের ইনসুলিন সংবেদনশীলতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

ফ্ল্যাক্সসীড বা শ্বেতবীজ, হিজলি বাদাম, কাজু বাদাম এবং ডার্ক চকোলেট খেতে হবে।

৬. আয়রন

রক্তের হিমোগ্লোবিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিমোগ্লোবিন। ফুসফুস থেকে রক্তে অক্সিজেন স্থানান্তরে প্রধান ভুমিকা পালন করে হিমোগ্লোবিন। মানব দেহে আয়রন বা লৌহ এর ঘাটতি হলে রক্তশুন্যতা বা রক্তাল্পতার মতো মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয়।

ছোলা, কুমড়ো বীজ, কিশমিশ, ডাল, কচু এবং সিসেম বীজ খেতে আয়রনের জন্য।

আরও পড়ুন: ক্যান্সারের যে ৫টি লক্ষণ পুরুষদের অগ্রাহ্য করা উচিত নয়

আরো পড়ুন ঃ যে খাবার এক সাথে খেলে তাৎক্ষণিক পেটে ব্যথা, পেট ফাঁপা, গ্যাস, বমিবমিভাব, বমি হয়

৭. আয়োডিন

থাইরয়েড হরমোন তৈরির জন্য মানবদেহের আয়োডিন দরকার হয়। আর আয়োডিনের ঘাটতি হলে অবসাদ, ক্লান্তি, কোলেস্টেরলের উচ্চমাত্রা এবং থাইরয়েড গ্রন্থির স্ফীতি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়।

চিংড়ি, লবণ, শুকনো আলুবোখারা, সেদ্ধ ডিম, স্ট্রবেরি, ডেডার বা চেষর পনির এবং দই খেতে হবে আয়োডিনের জন্য।

৮. কপার

কোলাজেন গঠনের সহায়ক কপার। যা আমাদের দেহের টিস্যুগুলোর স্বাস্থ্য ভালো রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। এছাড়া দেহের যথাযথ বৃদ্ধি এবং হৃদপিণ্ডের ছন্দ ঠিক রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

মাশরুম, কিডনি বিন, হিজলি বাদাম, অ্যাভোকাডো শুকনো আলু বোখারা এবং সিসেম বীজ খেতে হবে কপার পেতে চাইলে।

আরও পড়ুন: প্রস্রাবে ফেনা হতে পারে ভয়ানক কোনো রোগের লক্ষণ!

৯. কোবাল্ট

এটি ভিটামিন বি ১২ এর একটি জরুরি অংশ। এর আরেক নাম কোবালামিন। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, মানবদেহের যথাযথ সচলতার জন্য খুবই সামান্য পরিমাণে কোবাল্ট দরকার হয়। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, এটি নিয়ে অবহেলা করা যাবে।

ডিম, দুধ, মাংস, মাছ, বাদাম, ব্রোকোলি, স্পিনাক এবং ওটস খেতে হবে কোবাল্ট পেতে চাইলে।

১০. ক্যালসিয়াম

আমরা জানি দাঁত এবং হাড় শক্ত-পোক্ত করার জন্য দরকার হয় ক্যালসিয়াম। ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে অস্টিওপোরোসিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে।

দুধ, পনির, দই, স্পিনাক, ডুমুর, কচু এবং ছোলাতে পাওয়া যায় ক্যালসিয়াম।

---এন্ডিটিভি 



Post a Comment

Please do not link comment any spam or drive spams content

Previous Post Next Post