কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্তকরণ নীতিমালা

সরকারি ভূমি অফিসে ৮নং রেজিস্ট্রারের এক নম্বর খতিয়ানভুক্ত সকল জমিই খাসজমি। ৮ই মার্চ ১৯৯৫ তারিখে প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেট এর মাধ্যমে। খাসজমিকে ভূমি মন্ত্রণালয় দুই ভাগে ভাগ করেছে। (১) কৃষি খাসজমি এবং (২) অকৃষি খাসজমি।।
 কৃষি খাসজমি
১৬ই এপ্রিল, ১৯৯৭ তারিখে জারিকৃত কৃষি খাস জমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত। নীতিমালা অনুযায়ী দেশের সকল মেট্রোপলিটন এলাকা, সকল পৌর এলাকা এবং । সকল জেলা/উপজেলা সদর এলাকাভূক্ত সকল প্রকার জমি ব্যতিত এর বাইরে অবস্থিত কৃষিযোগ্য সকল খাসজমিই কৃষি  খাসজমি হিসেবে বিবেচিত। কৃষি খাসজমি ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে বিতরণ করা হয় ।



 অ-কৃষি খাসজমি।
 ভূমি মন্ত্রণালয়ের ৭ই মার্চ ১৯৯৫ তারিখ জারিকৃত অকৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত নীতিমালার ২.০(ক) অনুচ্ছেদ অনুসারে সকল মেট্রোপলিটন এলাকা, সকল পৌর এলাকা এবং সকল উপজেলা সদর এলাকভুক্ত সকল প্রকার খাসজমি অ-কৃষি খাসজমি। এ সকল এলাকাভুক্ত কৃষিযোগ্য খাসজমি ও অ-কৃষি  খাসজমি হিসেবে বিবেচিত হবে। এর বাইরে অবস্থিত কৃষিযােগ্য জমি বাদে অন্যান্য সকল প্রকার জমি অকৃষি খাসজমি হিসেবে বিবেচিত হবে।
ভুমিহীন পরিবারের বৈশিষ্ট্য (যারা খাস জমি বন্দোবস্ত পাবে)। ১. যে পরিবারের বসতবাড়ি ও কৃষি জমি কিছুই নাই, কিন্তু পরিবারটি কৃষি নির্ভর। ২. যে পরিবারের ১০ শতাংশ পর্যন্ত বসতবাড়ি আছে, কিন্তু কৃষিযোগ্য জমি নেই, এরূপ কৃষি নির্ভর পরিবারও ভূমিহীন হিসেবে গণ্য হবে।
ভুমিহীন বাছাই প্রক্রিয়ার নিয়মাবলী। ১. ভূমিহীনগণ উপজেলা কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটির সদস্য-সচিব।
ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট নির্ধারিত ফরমে দরখাস্ত দাখিল করবেন। ২. সদস্য সচিব প্রাপ্ত দরখাস্তগুলো ইউনিয়ন অনুযায়ী বাছাই করবেন।। ৩. উপজেলা কমিটি প্রতিটি ইউনিয়নের মাধ্যমে সরাসরি আবেদনকারীদের সামনে । জিজ্ঞাসা ও পরীক্ষা করে প্রাথমিক বাছাই করবেন। ৪. প্রাথমিক বাছাইয়ের পর প্রয়োজনে সরেজমিনে যাচাই করে প্রকৃত ভূমিহীন পরিবার
বাছাই করবেন।। ৫. আবেদনকারী ওয়ার্ড মেম্বার/চেয়ারম্যান কর্তৃক ২ কপি ছবি সত্যায়িত করে স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানাসহ আবেদনপত্র জমা দেবেন; ৬. আবেদনের সহিত ইউপি চেয়ারম্যান কর্তৃক নাগরিকত্ব সনদ জমা দিতে হবে।। ৭. একান্নভুক্ত পরিবার একাধিক সদস্যকে খাসজমি দেওয়া যাবে না।
 ৮. বন্দোবস্তকৃত জমি স্বামী-স্ত্রী ২ জনের যৌথ নামে প্রদান করা হবে, বিধবা বা বিপত্নীক হলে একক নামেও দেয়া যাবে। ৯. কোন পরিবারকে সর্বোচ্চ ১.০০ (এক) একর জমি দেয়া যাবে। তবে দেশের উপকূলীয় চরাঞ্চলের জন্য খাস জমির প্রাপ্যতা অনুযায়ী অনুধর্ব ১.৫০ (দেড়) একর পর্যন্ত জমি ভূমিহীনদের বন্দোবস্ত দেয়া যাবে।
 উপকূলীয় জেলা সমূহ হল:। খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পিরোজপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা,  ভোলা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চট্রগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ থানা এবং  কক্সবাজার জেলার সদর,কুতুবদিয়া, মহেশখালী, টেকনাফ ও চকোরিয়া থানা।।
খাসজমি বন্দোবস্ত পাওয়ার অগ্রাধিকার সমূহ:
 ১. দুঃস্থ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার।। ২. নদী ভাঙ্গা পরিবার (যার জমি  নদীতে বিলীন হয়েছে)। ৩. সম পুত্রসহ বিধবা বা স্বামী পরিত্যক্তা পরিবার। ৪. কৃষি জমিহীন ও বাস্তু ভিটাহীন পরিবার। ৫. ১০ শতাংশ বসতবাটি আছে কিন্তু কৃষিযোগ্য জমি নেই এরূপ কৃষি নির্ভর পরিবার।। ৬. অধিগ্রহণের ফলে ভূমিহীন হয়ে পড়েছে এমন পরিবার।
 খাস জমির উৎস।
খাসজমির বিবরন সংশ্লিষ্ট মৌজার রেকর্ডের ১ নং খতিয়ান এবং ইউনিয়ন ভূমি। অফিসে রক্ষিত ৮ নং রেজিষ্টার পাওয়া যাবে। বিভিন্ন সময় স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ১৯৫০। সালের জমিদারী অধিগ্রহণ এবং প্রজাস্বত্ব আইনের ৮৬, ৮৭, ৯০, ৯১, ৯২ ও ৯৩ ধারা মোতাবেক ব্যক্তি  মালিকানার জমিও খাসজমি হিসাবে গণ্য হতে পারে। সুতরাং প্রজাস্বত্ব আইনের উল্লেখিত ধারাসমূহ খাসজমির উৎস হিসাবে গণ্য। উক্ত ধারাসমূহ।
 মোতাবেক ব্যক্তি মালিকানার জমি খাসজমি হিসাবে গণ্য হওয়ার সংক্ষিপ্ত বিবরন ও ১। ৮৬ ধারা মোতাবেক  সকল সিকস্তি জমি, সিকস্তি হওয়ার ৩০ বছরের পরেও পয়স্তি না হলে তা খাসজমি হিসাবে গণ্য হবে । ২। ৮৭ ধারা মোতাবেক সকল পয়স্তি জমি নতুন চরের জমি খাসজমি হিসাবে গণ্য হবে। ৩। ৯০ ধারার বিধান লংঘন করে অর্জিত জমির মালিকানা এবং জমি রাখার সিলিং ' বহির্ভূত জমি খাসজমি হিসাবে গণ্য হবে।
 ৪। ৯১ ধারা মোতাবেক জমি রাখার সিলিং অতিক্রম করে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমি খাসজমি হিসাবে গণ্য হবে।। ৫। ৯২ ধারা মোতাবেক ভূমি মালিক  উত্তরাধিকার না রেখে মারা গেলে, সরকারের নিকট জমি সমর্পন করলে, বাড়ি-ঘর ত্যাগ করে যেয়ে ৩ বছর পর্যন্ত অনাবাদি। রেখে খাজনাদি না দিলে এবং উত্তরাধিকার সূত্রে মালিক হয়ে ৫ বছর যাবত | চাষাবাদের ব্যবস্থা না করলে তার স্বত্ব বিলোপ হয়ে  জমিটি খাসজমি হিসাবে গণ্য হবে। ৬। ৯৩(১) ধারার বিধান ভংগ করে জমি প্রজাপত্তন দিলে ৯৩(২) ধারা মোতাবেক
উক্ত জমি খাসজমি হিসাবে গণ্য হবে। ৭। ভূমি কর পরিশোধ না  করলে সার্টিফিকেট কেইসে সরকার কর্তৃক নিলামে ক্রয়কৃত জমি খাসজমি হিসাবে গণ্য হবে।
উপজেলা খাসজমি ব্যবস্থাপনা নির্বাহী কমিটির গঠন
চেয়ারম্যান। ১. উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা; সদস্য। ২. উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। ৩. ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা। ৪. উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা। ৫. বন বিভাগের সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ অফিসার। ৬. ইউ.পি চেয়ারম্যান (সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের জন্য) ৭. বিত্তহীন সমবায় সমিতির ১ জন প্রতিনিধি (জেলা প্রশাসক কর্তৃক মনোনীত) ৮. উপজেলা কৃষক সংগঠনের একজন প্রতিনিধি (মাননীয় ভূমি মন্ত্রী কর্তৃক | মনোনীত) ৯.  স্থানীয় সৎ, নিষ্ঠাবান ও জনহিতকর কার্যে উৎসাহী একজন গণ্যমাণ্য ব্যক্তি (জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যদের সহিত পরামর্শক্রমে মনোনয়ন দিবেন।) ১০. স্থানীয় কলেজ কিংবা হাই স্কুলের প্রধান একজন (জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যদের সহিত পরামর্শক্রমে মনোনয়ন দিবেন)। ১১, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংগঠনের একজন মুক্তিযোদ্ধা প্রতিনিধি  (মাননীয় ভূমি মন্ত্রী কর্তৃক মনোনীত)। সদস্য-সচিব
১১. সহকারী কমিশনার (ভূমি)
খাসজমি পেতে ধাপসমূহ
 ধাপ খাসজমি পাওয়ার ধাপসমূহ। ১ উপজেলা খাসজমি বন্দোবস্ত কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত মোতাবেক উক্ত
কমিটির সভাপতি স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর উপজেলা ভূমি অফিস। কর্তৃক খাসজমির তালিকা প্রকাশ করা হয়। উল্লেখ্য যে, তালিকা ছাড়াও আবেদন করা যায়। উপজেলা ভূমি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (আবেদন ফরম জমির দাগ, খতিয়ান নং সহ অন্যান্য) সংগ্রহ করা। আবেদনকারী যে প্রকৃত ভূমিহীন এ সংক্রান্ত সার্টিফিকেট সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট থেকে সংগ্রহ করা। ৪ সঠিকভাবে খাসজমির আবেদন ফরম পূরণ করা, দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ফটোগ্রাফ/ছবি, জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি ও প্রকৃত ভূমিহীন এই মর্মে প্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যানের সার্টিফিকেট সংযুক্ত করে তা
উপজেলা ভূমি অফিসে অফিস জমা দেয়া । ৫ উপজেলা ভূমি অফিস কর্তৃক দরখাস্ত যাচাইকরণ;
 ৬ দরখাস্ত বাছাইকরণঃ উপজেলা ভূমি সংস্কার কমিটির প্রাথমিক সভা এ দায়িত্ব পালন করেন, তারা সভায় মিলিত হয়ে অসম্পূর্ণ বা ত্রুটিযুক্ত দরখাস্ত বাদ দেন। প্রাথমিক বাছাইয়ের পর উপজেলা কমিটি প্রয়োজনে সরেজমিনে তদন্ত। করে আবেদনকারীর বিষয়ে সঠিকতা যাচাই করেন এবং এভাবে চূড়ান্ত
তালিকা তৈরী করেন। ৮ কাননগো ভূমিহীন পরিবারকে কোন প্লট দেয়া হবে তা নির্ধারণ করেন এবং এক্ষেত্রে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট তহশীল অফিস এ কাজের দায়িত্ব পালন করেন। ১ বাছাইয়ের মাধ্যমে টিকে থাকা প্রতিটি দরখাস্তের জন্য একটি করে ।বন্দোবস্ত কেইস তৈরী করা (উপজেলা ভূমি অফিস কর্তক)। ১০ উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সংশ্লিষ্ট সহকারী কমশিনার (ভূমি) এ কাজের দায়িত্ব পালন করেন, প্রতিটি আবেদনের বিপরীতে একটি করে কেইস রেকর্ড তৈরী করেন এবং এ প্রস্তাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট পেশ করেন। 
১১ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কেইসগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জেলা প্রশাসকের নিকট পেশ করেন;  ১২। জেলা প্রশাসক প্রস্তাব পাওয়ার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জেলা কমিটিতে । পেশ করেন এবং জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত প্রস্তাব অনুমোদন-করতঃ সংশ্লিষ্ট উপজেলা  নির্বাহি অফিসে ফেরৎ পাঠান। ১৩। অনুমোদিত প্রস্তাব ফেরৎ  পাওয়ার পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) অবশ্যই। ১ (এক) টাকা সেলামীর বিনিময়ে বন্দোবস্ত প্রাপকের অনুকূলে কবুলিয়ত সম্পাদন করে দেবেন এবং বন্দোবস্ত প্রাপকের নামে খতিয়ান খুলে দেবেন। ১৪। কবুলিয়ত সম্পাদনের পর উপজেলা কমিটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রাপকের অনুকুলে বন্দোবস্তকৃত জমির দখল বুঝিয়ে দেবেন এবং খাসজমিপ্রাপ্ত ব্যক্তি তা মিউটেশন/খারিজা করে নেবেন।
ক) কমিটি গঠিত হওয়ার ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উপজেলার বন্দোবস্তযোগ্য কৃষি খাসজমি চিহ্নিত করিবেন এবং থমিকভাবে যাচাই বাছাই করিবেন এবং এই মর্মে ব্যাপক প্রচারনার ব্যবস্থা নিবেন। খ) প্রাথমিক তালিকায় প্রকাশিত কোন জমি সম্পর্কে কাহারও কোন আপত্তি থাকিলে তালিকা প্রকাশের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে লিখিতভাবে উপজেলা কমিটির নিকট আপত্তি পেশ করিতে হইবে। উপজেলা কমিটি পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে সকল আপত্তি সম্পর্কে শুনানী গ্রহণ করিবেন এবং কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষাক্রমে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবেন এবং চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ।
করিবেন। গ) উপজেলা কমিটির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত প্রদানের ১৫ দিনের মধ্যে জেলা কমিটির নিকট আপীল করা যাইবে। জেলা কমিটি পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে। আপীল সম্পর্কে শুনানী গ্রহন করিবেন ও কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষাক্রমে
সিদ্ধান্ত প্রদান করিবেন। ঘ) জেলা কমিটির সিদ্ধান্ত প্রদানের ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাহী কমিটির নিকট আপীল করা যাইবে। জাতীয় নির্বাহী কমিটি পরবর্তী ৬০ (ষাট)। দিনের মধ্যে আপীল সম্পর্কে শুনানী গ্রহণ করিবেন এবং কাগজপত্র পরীক্ষানিরীক্ষাক্রমে সিদ্ধান্ত প্রদান করিবেন। জাতীয় নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে। ১) উপজেলা কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটি বন্দোবস্তযোগ্য কৃষি
খাসজমি চিহ্নিতকরণ ও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের এক মাসের মধ্যে। | বন্দোবস্তপ্রার্থী ভূমিহীনদের নিকট হইতে আবেদনপত্র গ্রহণ করিবেন।। ২) আবদেনপত্র প্রাপ্তির এক মাসের মধ্যে উপজেলা কমিটি প্রকৃত ভূমিহীন বাছাই কার্যক্রম সম্পন্ন করিবেন এবং বাছাইকৃতদের নামে জমি বরাদ্দের পরিমাণ নির্ধারণ করিবেন।
৩) উপজেলা কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটি কর্তৃক ভূমিহীন বাছাই ও জমি বরাদ্দের পরিমাণ নির্ধারণ করার ২১ (একুশ) দিনের মধ্যে সহকারী কমিশনার (ভূমি) বন্দোবস্ত কেইস রেকর্ড পূর্বক গৃহীত প্রস্তাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট পেশ করিবেন। ৪) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রস্তাব পাওয়ার ২১(একুশ) দিনের মধ্যে উহা জেলা প্রশাসকের নিকট প্রেরণ করিবেন।
 ৫) জেলা প্রশাসক প্রস্তাব পাওয়ার পর ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উহা জেলা কমিটিতে পেশ করিবেন এবং জেলা কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে প্রস্তাব অনুমোদন করতঃ সংশ্লিষ্ট সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট ফেরৎ পাঠাইবেন। ৬) অনুমোদিত  প্রস্তাব ফেরৎ পাওয়ার পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) অবশ্যই ১৫ দিনের মধ্যে এক টাকা সেলামীর বিনিময়ে বন্দোবস্ত প্রাপকের অনুকুলে কবুলিয়ত সম্পাদন করিয়া দিবেন এবং বন্দোবস্ত প্রাপকের নামে খতিয়ান খুলিয়া দিবেন।। ৭) কবুলিয়ত সম্পাদনের ১৫ দিনের মধ্যে থানা কমিটি বন্দোবস্ত প্রাপকের অনুকুলে বন্দোবস্তকৃত জমির দখল বুঝাইয়া দিবেন।
। ৮) কোন মৌজার কৃষি খাসজমি সংশ্লিষ্ট মৌজার ভূমিহীন প্রার্থীদের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বরাদ্দ প্রদান করিতে হইবে। ঐ মৌজার প্রার্থীদের মধ্যে বরাদ্দ প্রদানের পর আরও জমি থাকিলে পার্শ্ববর্তী মৌজার ভূমিহীনদের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া যাইবে এবং এই ব্যাপারে কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিবেন।। ৯) ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাসজমি বন্টনের বিষয়ে থানার বড় বড় হাট-বাজারে লোক সমাগমের দিনে মাইকযোগে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করিতে হইবে। তাহাছাড়া থানার প্রতিটি গ্রামে মাইকযোগে কিংবা  ঢোল শহরতের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করিতে হইবে। 
 থানা নির্বাহী অফিসার এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করিবেন। ১০) থানা পর্যায়ের সকল সরকারী, আধা সরকারী ও বেসরকারী অফিস এবং ইউনিয়ন পরিষদ এর নোটিশ বোর্ডে ভূমিহীনদের মধ্যে কৃষি খাসজমি বন্টনের বিষয়ে নোটিশ টানাইতে হইবে। ১১) প্রকৃত ভূমিহীন বাছাইয়ের বিষয়ে থানা কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটির সকল সিদ্ধান্ত সর্বসম্মত হওয়া বাঞ্চনীয়। 
তবে কোন ক্ষেত্রে দ্বি-মত দেখা দিলে সভাপতি বাদে উপস্থিত সকল অফিসিয়াল ও নন-অফিসিয়াল সদস্যদের প্রত্যক্ষ সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে সিদ্ধান্ত গৃহীত হইবে। উভয়পক্ষে সমান সংখ্যক ভোট পড়িলে সভাপতি নির্নায়ক  (কাষ্টিং) ভোট দিবেন। ১২) ভূমিহীনদের নির্বাচন এবং তালিকা  প্রণয়নের বিষয়ে সার্বিক সতর্কতা ও কঠোর। নিরপেক্ষতা অবলম্বন করিতে হইবে।৩। বনভূমি হিসাবে নোটিফিকেশনকত খাসকষি জমি এবং চিংড়ি ও লবন চাষোপযোগী খাসজমি এই  নীতিমালার আওতায় বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে না।
 ১৪) নদী পয়স্তি জমি বা চর ভূমির ক্ষেত্রে দিয়ারা জরিপ না হওয়া পর্যন্ত এই নীতিমালার আওতায় বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে না। দিয়ারা জরিপ না হওয়া। পর্যন্ত এই সকল জমি ভূমি ব্যবস্থাপনা ম্যানুয়েলের বিধান অনুযায়ী ডিসিআর। ভিত্তিতে একসনা ইজারা দেওয়া যাইবে । তবে এই ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট এলাকার। ভূমিহীন কৃষকদের দিতে হইবে।। ১৫) আদর্শ গ্রাম প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচিত খাস কষিজমি এই নীতিমালার আওতায়।
বন্দোবস্ত দেওয়া যাইবে না। বর্তমানে আদর্শ গ্রাম সৃজনের জন্য অনুস্বঃত নীতিমালা/বিধি মোতাবেক অনুরূপ জমিতে আদর্শ গ্রাম সুজন/প্রতিষ্ঠা করা। হইবে; ১৬) কৃষি খাসজমি বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য কোন ভূমিহীন প্রার্থী আবেদনপত্রে কোন ভুল তথ্য উপস্থাপন করিলে কিংবা কোন তথ্য গোপন করিলে তাহাদের আবেদন বাতিল বলে গণ্য হইবে এবং প্রয়োজনে তাহাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হইবে।
 ১৭) বন্দোবস্ত প্রাপ্তির পর কোন বন্দোবস্ত গ্রহীতা ভূমি সংক্রান্ত সরকারের কোন। আইন/অধ্যাদেশ বা আদেশ লংঘন করিলে তাহার বন্দোবস্ত বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে এবং জেলা ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুরোধক্রমে থানা ব্যবস্থাপনা কমিটি বন্দোবস্তকৃত জমি পুনরায় খাস হিসাবে পুন:গ্রহণ করতঃ খাস খতিয়ানে সংরক্ষণ করিবেন।
 ১৮) এই নীতিমালার আওতায় ভূমিহীনদের মধ্যে খাস কৃষিজমি বন্দোবস্তের ক্ষেত্রে কোথাও কোন বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক বিষয়টি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সচিবের নিকট লিখিত আকারে উপস্থাপন করিবেন। 
সদস্য সচিব বিষয়টি কমিটির সভায় পেশ করিবেন এবং এই ব্যাপারে জাতীয় নির্বাহী কমিটি কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে। ১৯) সকল কমিটির সভায় সংশ্লিষ্ট কমিটির অন্তত:১৩ ভাগ সদস্য উপস্থিত থাকিলে সভার কোরাম হইয়াছে বলিয়া বিবেচিত হইবে।
 কোন কোন সদস্য পর পর তিনটি সভায় অনুপস্থিত থাকিলে তাহার সদস্য পদ বাতিল বা প্রত্যাহারের জন্য। সংশ্লিষ্ট নিয়োগ/মনোয়নকারী কর্তৃপক্ষকে অবহিত করিতে  হইবে। ২০) কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত সংক্রান্ত গঠিত কমিটিগুলি সর্বদা পারস্পরিক সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হইবেন। ২১) জাতীয় কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা নির্বাহী কমিটি প্রয়োজনে জনস্বার্থে এই নীতিমালার যে কোন ধারা/উপ-ধারা সংশোধন কিংবা পরিবর্তন-পরিবর্ধন করিতে পারিবেন।  

Post a Comment

Please do not link comment any spam or drive spams content

Previous Post Next Post