ফুসফুস ক্যান্সারের যে ৯টি প্রাথমিক লক্ষণেই সতর্ক হতে হবে

ধরুন আপনি জগিংয়ে বের হলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই আপনার দম শেষ হয়ে গেল এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে গেল। পরিস্থিতি আরো ভয়ানকও হতে পারে। সামান্য শারীরিক তৎপরতাতেও যদি আপনার নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনার ফুসফুস আশানুরুপ স্বাস্থ্যবান নয়। এমনকি তা হতে পারে ফুসফুস ক্যান্সারেরও লক্ষণ।

ফুসফুসের ক্যান্সার সবচেয়ে মারাত্মক ক্যান্সারগুলোর অন্যতম একটি। প্রাথমিক স্তরেই যদি এই ক্যান্সার সনাক্ত করা না যায় তাহলে কিন্তু মৃত্যু অবধারিত। সুতরাং আসুন জেনে নেওয়া ফুসফুস ক্যান্সারের প্রাথমিক ৯টি লক্ষণে সম্পর্কে যেগুলো দেখা দেওয়া মাত্রই সতর্ক হতে হবে।

১. ক্রমাগত কাশি

এলার্জি, ঠাণ্ডা-সর্দি, ফ্লু-র মতো সাধারণ কিছু রোগের লক্ষণ হতে পারে কাশি। ফলে লোকে হয়তো কাশি হলে খুব একটা চিন্তিত নাও হতে পারেন। কিন্তু আপনার যদি দুই মাসের বেশি কাশি হয় এবং ওষুধ খাওয়ার পরও তা ভালো না হয় তাহলে তা ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ।

২. মরিচা রঙের কফ

কফের রঙ যদি মরিচা বা লালাভ হয় তাহলে বুঝতে হবে কফের সঙ্গে রক্ত বের হচ্ছে। এটিও ফুসফুস ক্যান্সারের প্রাথমিক একটি লক্ষণ।

৩. বুকে ব্যথা

গ্যাস্ট্রিসাইটিস, অবসাদ, রক্তশুন্যতা, স্ট্রেস সহ নানা কারণে বুকে ব্যথা করতে পারে। নিঃশ্বাস গ্রহণের সময় যদি তীব্র ব্যথা হয় অথবা হাসি বা কাশির দেওয়ার সময় বুকে ব্যথা হয় তাহলে তা হতে পারে ফুসফুস ক্যান্সারের প্রাথমিক একটি লক্ষণ।

৪. অনবরত অবসাদ বা ক্লান্তি

ব্যস্ত জীবনের কারণে ক্লান্ত ও দুর্বল অনুভূতি হতে পারে। এছাড়া পুষ্টির ঘাটতি, স্ট্রেস থেকেও অবসাদ দেখা দিতে পারে। কিন্তু ক্রমাগত অবসাদ, যা দীর্ঘমেয়াদি এবং প্রতিদিনের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটায় তা হতে পারে ফুসফুস বা অন্য কোনো ক্যান্সারের লক্ষণ।

আরও পড়ুন: প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যানসার নির্ণয়ের উপায়

৫. গলার স্বরের পরিবর্তন

স্বাভাবিক ভাবে কথা বলার সময়ও যদি গলার স্বর কর্কশ বা ফেঁসফেঁসে শোনায় তাহলে তা হতে পারে ফুসফুস ক্যান্সারের লক্ষণ। ফুসফুসে ক্যান্সার কোষ জন্ম নেওয়ার পর তা শ্বসন প্রক্রিয়ার অন্যান্য অংশ সহ ভোকাল কর্ড বা স্বরতন্ত্রীকে আক্রমণ করে। ফলে গলার স্বর বদলে যায়।

৬. দীর্ঘমেয়াদে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ

আপনার যদি ব্যাকটেরিয়াজনিত কাশি, ঠাণ্ডা, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া হয় এবং ওষুধ খাওয়ার পরও ভালো না হয় তাহলে তা ফুসফুস ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ। ফুসফুস ক্যান্সার শ্বাস গ্রহণ প্রক্রিয়াক দুর্বল করে দেয় যার ফলে এই ধরনের সংক্রমণ হয়।

আরও পড়ুন: ব্রেস্ট ক্যান্সারের অন্যতম কারণ ?

৭. স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা

মস্তিষ্কের কিছু অংশের সঙ্গে ফুসফুসের সংযোগ রয়েছে। মস্তিষ্কের শিরা-উপশিরাগুলোর মাধ্যমে ও সংযোগ স্থাপিত হয়। ফলে ফুসফুস ক্যান্সার হলে মস্তিষ্কেও প্রভাব পড়ে। বসা থেকে উঠতে গিয়ে যদি সমস্যা হওয়া, কাঁধের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়া ইত্যাদি ফুসফুস ক্যান্সারের সঙ্গে যুক্ত।

৮. গাইনেকোমেস্টিয়া

পুরুষদের স্তনে অতিরিক্ত টিস্যু জন্মানো এবং প্রায় নারীদের মতো বড় স্তনের আকার ধারন করার নাম গাইনেকোমেস্টিয়া। হরমোনগত ভারসাম্যহীনতা এবং বংশসূত্রেও এই সমস্যা হতে পারে। তথাপি এটি ফুসফুস ক্যান্সারের একপি প্রাথমিক লক্ষণও হতে পারে। ফুসফুস স্তনের টিস্যুগুলোর কাছাকাছি জায়গায় থাকার ফলে স্তনের টিস্যুগুলোকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। আর পুরুষদের মধ্যে এই লক্ষণটি বেশি স্পষ্ট হয়ে দেখা দেয়।


৯. চোখের পাতার দুর্বলতা

ফুসফুসের একেবারে ওপরের অংশে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়লে চোখের পাতা দুর্বল হয়ে আসে। কেননা ফুসফুসের ওই অংশের স্নায়ুগুলো চোখের পাতার স্নায়ুগুলোর সঙ্গে যুক্ত থাকে। ফলে চোখের পাতা দুর্বল হওয়াও ফুসফুস ক্যান্সারের প্রাথমিক একটি লক্ষণ।

সূত্র সি এম সি ভেলোর অনলাইন ক্যান্সার প্রতিকার কর্নার । 

Post a Comment

Please do not link comment any spam or drive spams content

Previous Post Next Post