তার স্ত্রীর নাম কাজলী হাদিমা, ছোট মেয়ের নাম সোনিয়া হাদিমা, ওর বয়স যখন ২
মাস তখন সোনিয়ার বাবাকে টেলকী বাজার থেকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল বন পুলিশ । সেদিনো নাকি
সিরিন নকরেক মজূরির কাজ করছিল । কাজলী হাদিমা বলছিলেন ভ্যানগাড়িতে একটি গরুকে
যেভাবে বেধে নিয়ে যাওয়া হয় ঠিক একিভাবে পুলিশ দড়ি দিয়ে বেঁধে বুকে ইট চাপা দিয়ে
ভ্যানে করে নিয়ে যায় ।
দোখলা |
সিরিন নকরেকের কয়টি মামলা আছে ? তা তার স্ত্রি, মা , বাবা কেউ বলতে পারে না
। তারা বলেন দিনে দিনে মামলা বাড়তে থাকে । এমন কি জেলে থাকার পর ও মামলা বাড়তে
থাকে । বিষয়টা এমন টাংগাইল জেলে থেকে সিরিন রাতে জঙ্ঘলে এসে গাছ কাটে । কত যে কেস
কি করে হিসেব রাখবে কে চালাবে, টাকা কোথায় পাবে । ৪০/৪২ কেস; কি করে এই এতো কেস
চালাবে টাকা নাই, উকিল এত কেস নিতে চাই না, কিভাবে হাজিরা দেবে । সাজা কেতে চলে
আসুক । সিরিনের শ্বাশড়ি বলেন “ আপিল করতে লাগে ১০ টাকা, গেট খুলতে লাগে ১০ টাকা,
একজন পুলিশকে দিতে হয় ১০ টাকা এ পর্যন্ত প্রায় ১৬/১৭ হাজার টাকা খরছ হয়ে গেছে ।
আনারস বাগান ৮ বছরে জন্য মেদি(মেয়াদি) বিক্রি করেছি । ফরেষ্ট অফিসার তার চাকরি
বাঁচানোর জন্য বলদির সময় কেস দিয়ে যায় । ভোটার লিস্ট দেখে কেস দেয় । যারা টাকা দেয়
তাদের ধরে না কোনদিন ।” উল্লেখ্য বনের
অফিসারদের বদলির সময় নাকি গাছের হিসাব দিতে হয় । তারা যত দিন বনে চাকরি করে ততদিন
ইনকাম করে গাছ লোপাট করে নির্বিচারে তাই মানুষের ওপর কেসের মাধ্যমে দিয়ে যায় ।
গাছের হিসেব মিলিয়ে দিয়ে যায় কেস করে নিরিহ আদিবাসীদের উপর ।
কাজলী হাদিমার দাদু মধুপুর গড়ে তার দেখা বন সম্পর্কে
বলেন “বনে মহিষ ছিল, বনে শুকর ছিল, বাঘ ছিল, হরিন ছিল, খরগোশ, বন মুরগী, বিভিন্ন
প্রজাতির প্রাণী ছিল । এই যে পাকা সড়ক এই সড়ক ব্রিটিশ আমলে আমরা কাজ করেছি ।
পঞ্চাশ পয়সা মজুরি ছিল । বনে আগে কোন ফরেস্ট অফিসারা গাছ কাটার সাহস পেত না । কারণ
বন এত গ্রিমসিসি অর্থাৎ গভির ছিল যেমন সুপারী গাছ সারি সারি থাকে তেমনি ভাবে
গাজারী শাল গাছ ছিল সারি সারি । ফরেস্ট গার্ডরা খুব ভয় পেত । আমাদের পূর্ব পুরুষ
যখন ছিল তখন কোন বন বিভাগ ছিল না ।
পরে সিরিন নকরেক বন থেকে ছাড়া পায় ।
কিন্তু তার বিরুদ্ধে যে ৪০ টি অধিক মামলা হয় তাতে বনরক্ষীরা সাক্ষী দিতে যান না ।
সাক্ষী দিতে গেলেও উকিলের জেরার সময় তারা আদিবাসীদের চিনতে পারে না । মিথ্যা
বানোয়াট মামলায় এই ভাবেই নিরীহ আদিবাসীদের
হায়রানী হতে হচ্ছে কিছু লোভী বনখেকো ফরেস্ট অফিসারদের মিথ্যা মামলার জন্য ।
Post a Comment
Please do not link comment any spam or drive spams content