মধুপুর
গড়ে আদিবাসীদের উপর সবচেয়ে
ভয়াবহ নিপীড়ন
রাবার চাষের নামে
মধুপুর গড়ে আদিবাসী মান্দিদের উপর সবচেয়ে ভয়াবহ নিপিড়ন নেমে আসে । যা ছিল তৎকালীন
সরকারে পরিক্ষামূলক একটি পরীক্ষার মাধ্যমে । আপনাদের সকলেরই জানা ১৯৮৬ সালে মধুপুর
বনে প্রথম রাবার চাষ শুরু হয় । এর আগে ১৯৪৫-৫৫ খ্রীষ্টাব্দে সর্বপ্রথম পাকিস্তান
সরকার পরীক্ষামূলক ভাবে এখানে রাবার চাষ
শুরু করেছিল এবং পরে তা চট্টগ্রাম থেকে সিলেট পর্যন্ত বিস্তার লাভ করে ।
এখানে
উল্লখ্য যে ব্যাক্তি মালিকানাধীন উদ্যোক্তা যারা পরবর্তীকালে অনেক জমির মালিক হয়,
তাদেরকেই এই বাগান প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব দেওয়া হয় । আদিবাসীদের বেশ কিছু দলিলী ও
ভোগদখলীয় স্বত্বের জমি কোনো ক্ষতিপূরণ ছাড়াই জোরপূর্বক এই প্রকল্পের জন্য নেয়া হয়
। পূর্ণ সাংমা নামের এক মহিলা যার নামে সাড়ে তিন একর বৈধ জমি ছিল, তাকে ১৯৮৫ সালের
১২ ডিসেম্বর তার নিজ জমি থেকে উৎখাত করা হয় ।
এখানে চরম ভাবে
স্বীকার করা বাধ্যতামূলক
যে রাবার চাষের ফলে শালবনের প্রাকৃতিক পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয় । প্রাচীন
শাল ও সেগুন গাছ উজাড় হয়েছে বন জুড়ে, অনেক আদিবাসী তাদের জমি হারিয়েছে আর বনের
জীববৈচিত্র হয়েছে বিলীন । মধুপুর গড়ের ধরাতী গ্রামের আদিবসীদের ২০০ একর জমিতে
জোরপূর্বক রাবার বাগান করা হয়েছে এবং ২ টি গারো আদিবাসীদের বসত ভিতে সহ জ্বালিয়ে
দেয়া হয় ও উচ্ছেদ করা হয়, যেখানে কোন ক্ষতি পূরণ দেওয়া হয় নি ।
অত্যান্ত
পরিতাপের বিষয় এই রাষ্ট্র ও সমাজব্যবস্থায় আদিবাসীদের সামান্য জমি থাকাও যেন
অন্যায় । আদিবাসীদের জমি থাকা যাবেনা, জমি থাকলে জমি নিয়ে সমস্যা বাঁধিয়ে রাখতে
হবে, কাগজ পত্রের ঝামেলা জিয়ে রাখতে হবে ও খাস করে দিতে হবে । কখনো কখনো কোন কাগজই দেওয়া যাবেনা, যাতে করে সময়ে
সময়ে ঘোষ টাকা চাওয়া যাই ।
বনের আদিবাসীদের অবৈ্ধ ঘোষনা করে সরকারের চিরাচরিত
রেওয়াজে পরিনত হয়েছে । রাবার বাগান, সামাজিক বনায়ন প্রকল্প, সংরক্ষিত বন বা এলাকা,
পার্ক ইত্যাদির নামে ওদের উচ্ছেদ করতে হবে এই হলো সরকারের সঙ্গে মান্দিদের
আদিবাসীদের যুগ যুগান্তরের সম্পর্ক ।
Post a Comment
Please do not link comment any spam or drive spams content