ব্যাবিলন ও ইজিপ্টের  প্রাচীন কাব্যে সুগন্ধি দ্রব্যের উৎস   হিসাবে বালসামোডেনড্রন ও কমিফোরা গণের উল্লেখ আছে । শালাই উদ্ভিদের সুগন্ধি গন পণ্য দ্রব্য হিসাবে ভারত থেকে আরবে রপ্তানি হতো । হেলেন ও আলেকজার (খ্রীষ্টপূর্ব ৩৩৬ অব্দ) সময় থেকে ক্লিওপেট্রার (খ্রিষ্টপূর্ব ৪০-৩০ অব্দ)    রাজত্বকাল পর্যন্ত উদ্ভিজ্জ সুগন্ধি ছিল আভিজাত্য প্রতিক ।  ইজিপ্টের ফারাহ ৩য় তিথমনিস প্রাচ্যের ভেষজ বাণিজ্যের একটি তালিকা প্রস্তুত করে খ্রিস্টপূর্ব ১৪৫ অব্দে ২৫৭ টি ভেষজ উদ্ভিদ প্রজাতি সিরিয়ায় নিয়ে যান ।
 প্রাক বাইবেল যুগে দেবদেবীর অবয়ব তৈলাক্ত করার জন্য যে  সব উদ্ভিজ তেল ব্যবহার করা হত তার সবকটি তেলই  তেল ও সুগন্ধি গদ ।  এর মধ্যে আছে বালসামোডেনড্রনের গদ,  দারুচিনির তেল, সুগন্ধি বচ জলপাই বীজের তেল ইত্যাদি ।
বাইবেলে উল্লেখিত উদ্ভিজ্জ সুগন্ধি সমুহ ঃ  
পবিত্র বাইবেলে উল্লেখ আছে জটামাংশী, স্যাফরন, বচ,দারুচিনি, শালাই ইত্যাদি । ১৯৫২ খৃষ্টাব্দে এন, হ্যারোল্ড মল্ডেনক ও তার  সহযোগিরা তাদের সমীক্ষায় বাইবেলের পূরাতন ও নূতন টেস্টামেন্টে উল্লেখিত উদ্ভিদ ও উদ্ভিজ্জের বিস্তারিত করেছেন। এইসব উদ্ভিদ প্রজাতির মধ্যে চন্দন, গাব, তুল্য, সকলি প্রভৃতির মত বহু ভারতীয় উদ্ভিদের উল্লেখ আছে যা হিন্দু সংস্কৃতিতে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে । 
কোরানে উল্লেখিত উদ্ভিদ ও উদ্ভিজ্জ ।
পবিত্র কোরাণে যে সকল উদ্ভিদের উল্লেখ আছে তার মধ্যে খেজুর, আঙ্গুর, বেদানা, ডুমুর, দ্রোস, হে জলপাই, বর, কু, সফরুন, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মেহেন্দি, ইউফরবিয়া, প্রভৃতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ।
 এখানে উল্লেখ করা যায় ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে মোঃ ইকতেদার  হোসেন ফারুকি তাঁর “Plants of  Quran” পুস্তকে তুলসি গাছের কথাও উল্লেখ করেছেন।
ব্যবিলনের শূন্য উদ্যান ও সুগন্ধি উদ্ভিদ প্রজাতির জেনিটিক রিসোর্স :
রাজা নেবুচাদনেজ্ঞা তাঁর মহিষী অমিটেসের জন্য পৃথিবীর সকল  সুগন্ধি উদ্ভিদ প্রজাতি সংগ্রহ করেন । এই সব উদ্ভিদ প্রজাতি থেকে প্রসাধনী সুগন্ধি পাওয়ার জন্য রাজা নেবুচাদনেজ্জা ব্যাবিলনের শূন্য উদ্যান রচনা করেন  সেখানে  ঐ সব প্রজাতি রোপন করেন।  
গ্রিক ও রোমান সভ্যতার উদ্ভিদ ও উদ্ভিজ্জ :
খ্রীষ্টপূর্ব ৪৬০ অব্দে কচ দ্বীপের অধিবাসী প্রথম গ্রীক চিকিৎসক  হিপোক্রেটিস (Hippocrates) জুপিটার পরে মন্দির  থেকে  ডোরেমা এমোনিকাম (Dorema ammonicum)  নামক উদ্ভিদের সুগন্ধি গদ প্রথম সংগ্রহ করেন । খ্রিষ্টপূর্ব ৩৭২ অব্দ থেকে ২৮৭ অব্দের মধ্যে অ্যারিস্টটলের ছাত্র থিওফ্রাস্টাস ভারতীয় ধান, মম কা কাঁঠাল, গাৰ তুলা ঐ সময় গ্রীস ও রোমে  ব্যবহার হত বলে উল্লেখ করেছেন । তিনি আরো মন্তব্য  করেছেন গ্রীস ও রোমের সব চেয়ে প্রাচীন সব্জি সায়নেরা   স্কলিমাস (Cynara scholymas) । খ্রষ্টীয় ৬০ অব্দে অ্যান্টনি, ক্লিওপেট্রী ও নিরোর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডায়স্করিডিস ৬০০-র  মতো ভেষজ উদ্ভিদ প্রজাতির  উল্লেখ করেছেন, যে সকল উদ্ভিদ প্রজাতি দিয়ে তিনি তার চিকিৎসা পদ্ধতি পরিচালনা  করতেন । হোমার তার কবিতায় দুঃখ ভোলার জন্য ডায়স্করিডিসের দেয়া  বোরগো অফিসিনালিস (Borogo  officinalis) এর নাম ক্কাথ পানীয় সঙ্গে ব্যবহার করতেন বলে উল্লেখ করেছেন। 
 চীন সভ্যতায় উদ্ভিদ ও উদ্ভিজ্জ 
চীনা সাহিত্যে কপি, কমলালেবু, কুল, কাকি (একজাতীয় গাব), লিচু, চা, চালমুগরা  সয়াবিন, জিংসিং (Panax quinaquefolius) এর মত বহু উদ্ভিদের উল্লেখ আছে। ১৮৭১ খাত - স্মিথ তাঁর পুস্তকে মাখনা (Eur@yle ferox) দীর্ঘ ৩০০ বছর ধরে চীনা ভূখণ্ডে শ্বেতসার খাদ্যের উৎস হিসাবে চাষ হয় বলে উল্লেখ করেছেন । ১৮৮২ খৃস্টাব্দে ই. ব্রেস্টসিণ্ডার (E. Bretschneider) খৃস্টপূর্ব ১৬৩ থেকে ৮৫ অব্দ পর্যন্ত  প্রাচীন চীনের প্রাচীন পুঁথিপএ, পাণ্ডুলিপি অনুশীলন করে মন্তব্য করেন যে চীন সংস্কৃতিতে ধান, গম, কাউন (Panicum miliaceum) সোয়া (Solaria italica) এবং সয়াবিন এই দানা শস্যের প্রভাব ব্যাপক। তিনি আরো মন্তব্য করেছেন যে  চীনাদের বিবাহ অনুষ্ঠানে গিংগো বাইলোবা ।  " (Gingo biloga) একটি মাঙ্গলিক উদ্ভিদ ও প্রিয় খাদ্য বস্তু । 
দক্ষিণ আমেরিকায় পেরু সভ্যতার উদ্ভিদ ও উদ্ভিজ্জ :
যে সকল উদ্ভিদ বিজ্ঞানী আজকের পৃথিবীর কৃষিজ ও অর্থকরী উদ্ভিদের উৎস অনুসন্ধান করতে ব্রতী হয়েছেন তারা সকলেই দেখেছেন পেরু ও বলিভিয়া, গোলআলু, (Solanum  tuberosum) টমেটো (Lycopersicon esculentum), লংকা, (Capsicum frutescens), কোকো (Theobroma caco)
প্যারাগুয়ের চা (Hex Paraguariensis), সিনকোনা  (Cinchona officinalis) ব্রাজিলিয়ান রাবার (Hevea brasiliensis) প্রভৃতির মত বহু অর্থকরী উদ্ভিদের হয় আদি বাসভূমি নতুবা প্রথম আবাদভূমি । এই সকল উদ্ভিদ আজ পৃথিবীর বহু দেশে আবাদিত প্রধান প্রধান অর্থকরী উদ্ভিদ হিসাবে পরিচিত।
প্রত্ন লোক উদ্ভিদবিদ্যা বিষয়ে ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দে ফারুক, এ লোন, মারসুদ খান এবং জি, এম, বুথ । প্রকাশিত "Plants and ancient man in  kashmir " নামক পুস্তকের উল্লেখ করা যেতে পারে । এই পুস্তুকে তাঁরা অড়হর, শতমূলী, ওট, বেথুয়া, স্বর্ণলতা, ধুরা, যব, আখরোট, লোলিয়াম, বনমেথি, খাম, মটর এবং সক্রেটিসকে যে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করা হয়েছিল সেই বিয়ের উৎস হেমলক কোনিয়াম । উদ্ভিদের মত বিষাক্ত উদ্ভিদ এবং এনিমনি, একোনিটামের মত বিষাক্ত উদ্ভিদেরও উল্লেখ করেছেন ।
collected from 
Glimses of Indian Ethnobotany - S. K. Jain 21. Economic Botany in the Tropics 2nd End - S. L. Kochhar
I Botany for Degree students, Vol - V. Gymnosperm - P. C. Vashishta 81 Bangladesh Geoscience Journal (Vol - 9 - 2003) a Bangladesh Journal of Geology Vol - 9. Dhaka - 1990 y Review of palaeobotany & Palynology 113 (2001) 91 Studies in Palaeobotany - Henry N. Andrews Jr. 1 Cryptogamic Botany - Vol 11 - G. M. Smith.


1 Comments

Please do not link comment any spam or drive spams content

Post a Comment

Please do not link comment any spam or drive spams content

Previous Post Next Post