দীর্ঘমেয়াদি কোমর ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়
কোমর ব্যথা এমন এক ব্যথা যা সহজে মুক্তি দিতে চায় না। উঠতে, বসতে, ঘুমাতে গেলেও জানান দেয় ব্যথাটা। সারাক্ষণ বসে বসে কাজ কোমর ব্যথার অন্যতম কারণ। সে অফিসেই হোক কিংবা বাড়িতে। কম্পিউটারে সামনে বসে কাজ করতে করতে কখন যে কোমর ব্যথাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন তা হয়তো আপনিও জানেন না। যাদের বয়স প্রায় চল্লিশ, তাদের মধ্যে ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশি কোমরের ব্যথায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন।
কোমর ব্যথার যত কারণ
লাম্বার স্পনডোলাইসিস: কোমরে পাঁচটি হাড় আছে। এই হাড়গুলো যদি বয়সের কারণে বা বংশগত কারণে ক্ষয় হয়ে যায়, তখন তাকে লাম্বার স্পনডোলাইসিস বলে।
এলআইডি: কোমর ব্যথার অন্যতম কারণ এলআইডি। ৩০ থেকে ৪০ বছর যাদের বয়স তাদের এ সমস্যাটি হতে পারে। মানুষের হাড়ের মধ্যে ফাঁকা জায়গা থাকে। এই ফাঁকা জায়গাটি পূরণ থাকে তালের শাঁসের মতো ডিস্ক বা চাকতি দিয়ে। এই চাকতি যদি কোনো কারণে বের হয়ে যায়, তখন স্নায়ুর ওপরে চাপ পরে। এর প্রভাবে কোমরে ব্যথা হতে পারে।
নন স্পেসিফিক লো ব্যাক পেইন: এর কারণ অনেক কিন্তু চিকিৎসকেরা বলে থাকেন অনির্দিষ্ট। মূলত অনির্দিষ্ট কারণে হাড়, মাংসপেশি, স্নায়ু তিনটি উপাদানের সামঞ্জস্য নষ্ট হলে এই ব্যথা হয়। এটি তরুণ বয়সে তুলনামূলক বেশি হয়ে থাকে।
অন্যান্য কারণ: এছাড়া বিভিন্ন কারণে কোমরে ব্যথা হতে পারে। মেরুদণ্ডে টিউমার ও ইনফেকশন হলে কোমরে ব্যথা হতে পারে। মাংসপেশি শক্ত হয়ে গেলে বা মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়লে কোমরে ব্যথা হতে পারে। শরীরের ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণেও কোমরে ব্যথা হয়। একটানা হাঁটলে বা দাঁড়িয়ে থাকলে কিংবা দীর্ঘসময় কোলে কিছু বহন করলেও কোমরে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কোমর ব্যথা থেকে দূরে থাকবেন যেভাবে
একই স্থানে বেশিক্ষণ বসে থাকবেন না। জায়গা ছেড়ে মাঝে মাঝে উঠে পড়ুন।
ফোনে কথা বলার সময় হেঁটে হেঁটে কথা বলুন। দিনে যত বেশি হাঁটবেন, তত দীর্ঘদিন শরীরের অবস্থা ভালো থাকবে।
কোমর ভাঁজ করে হালকা শরীরচর্চাও করতে পারেন।
মাটিতে বসে কাজ করবেন না। এবং নরম মেট্রেস বা ফোমের বিছানায় কখনোই শোবেন না।
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ খাবেন না।
কোমর ব্যথায় ঘরোয়া চিকিৎসা
সেঁক দিন: কোমরের যেখানে ব্যথা সেখানে সেঁক দিলে যন্ত্রণা থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া যাবে।
আদা: আদাতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। এই পটাশিয়ামের অভাবের ফলে নার্ভের সমস্যা দেখা দেয়। প্রতিদিন নিয়ম মেনে আদা খেলে কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
হলুদ: দুধের সঙ্গে নিয়ম করে হলুদ খেলে কোমরের ব্যথা অনেকটাই কমতে পারে।
মেথি বীজ: গুড়াঁ দুধের সঙ্গে মেথি বীজের মিশ্রণ তৈরি করে ব্যথার জায়গায় ম্যাসাজ করলে উপকার পাবেন।
লেবুর শরবত: লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। ভিটামিন সি যন্ত্রণা উপশমে খুবই কার্যকারী।
অ্যালোভেরা: প্রতিদিন নিয়ম করে অ্যালোভেরা শরবত খেলে কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি মিলতে পারে।
ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম জাতীয় খাদ্য: প্রতিদিন নিয়ম করে দুধ, ঘি, পনির, ফল, শাকসবজি, বাদাম ইত্যাদি খেলে কোমরের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। আর নিয়মিত শরীরচর্চা করতে ভুলবেন না।
clue online times of India.
Post a Comment
Please do not link comment any spam or drive spams content