বাজারচলতি বেবিফুড নয়, ছোট্ট সোনাকে কোন বয়সে কী খাওয়াবেন জানুন

বাড়িতে নবজাতক এলেই তাকে নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। নতুন বাবা–মা হলেন যাঁরা, তাঁদের তো উদ্বেগের শেষ নেই। তার ওপর গুরুজন, পরিজনেরা বাচ্চার স্বাস্থ্য বিষয়ে নানারকম বিধান দিয়ে থাকেন। কোনটা ঠিক আর কোনটা বেঠিক, এই গোলকধাঁধায় পড়ে পথ হারান অনেক মায়েরা। এ দিকে বাচ্চার পুষ্টির বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি আর স্বচ্ছ জ্ঞান থাকা বিশেষ প্রয়োজন। কী উপায়ে বাচ্চার পুষ্টির চাহিদা সম্পূর্ণ হবে, একাধিক বিশেষজ্ঞের মতামত একত্রিত করে রইলো গাইডলাইন।

জন্মের পরই কোলোস্ট্রাম

শিশুর জন্মের ঠিক পরই মায়ের স্তন থেকে হালকা হলুদ রঙের বা স্বচ্ছ একটি তরল পদার্থ নিঃসরণ হয়। একে কোলোস্ট্রাম বলে। প্রত্যেক সদ্যোজাতর জন্যেই এই কোলোস্ট্রাম প্রথম পথ্য হওয়া উচিত। কোলোস্ট্রামে থাকে প্রচুর প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন ও খনিজ লবণ, যা শিশুর মস্তিষ্ক, হার্ট ও চোখের পূর্ণ বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে। বাচ্চার ইমিউন সিস্টেম সুগঠিত হয় কোলস্ট্রামে।

মায়ের দুধেই বাড়বে শিশু

জন্মের পর প্রত্যেক শিশুর একমাত্র খাদ্য ও পথ্য হল মায়ের বুকের দুধ। কোনও কোনও শিশু মাতৃদুগ্ধ থেকে বঞ্চিত হয়। তাদের জন্য বিকল্প হিসেবে গরুর দুধ খাওয়ানো হয়। কিন্তু শিশুদের অন্তত ৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মাতৃদুগ্ধ পান করানোই উচিত। এতে বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ সর্বাঙ্গিক সুন্দর হয়।

৬ মাস বয়সের পর খাওয়াদাওয়া

ধীরে ধীরে নরম ভাত, পাতলা করে ডাল, সবজি সেদ্ধ, পাতলা রুটি, সুজি, রাগি, ওট্স্‌ ইত্যাদি খাওয়ানো শুরু করা যায়। বাজারচলতি বেবি ফুড খাওয়ানো একেবারেই ঠিক নয়। ১ বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত বাচ্চার খাবারে নুন ও চিনি মেশানোর প্রয়োজনীয়তা নেই। ৯ মাস বয়স হলে বাচ্চাকে মাখন, মাছ, মাংস, ডিম এইসব খাওয়ানো যায়। সবজি ও যে কোনও একটি ফল, বিশেষ করে কলা বাচ্চার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখা খুব জরুরি। কচি ডাবের জলও ছোট বাচ্চাকে খাওয়ানোর জন্য ভীষণ ভাল। শিশু জন্মের পর যদি এভাবে খাদ্যাভ্যাস করানো যায় তাহলে তার ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে। 



৩ বছর বয়স হলে…

৩ ‌বছর বয়সের পর বাচ্চারা সবই খেতে পারে। রোজকার খাবারের তালিকায় এইসময় যোগ করুন ইমিউন বুস্ট খাবার। যেমন প্রোবায়োটিক অর্থাৎ দই, লেবু জাতীয় ফল (‌সাইট্রাস ফ্রুট)‌, সবুজ শাকসবজি, তরিতরকারি, বাদাম জাতীয় খাবার, প্রোটিন সমৃদ্ধ মাছ, মাংস, ডিম, দুধ।

বাড়িতে তৈরি করা ব্যালান্সড ডায়েট বা সুষম খাদ্য প্রতিটি শিশুর ইমিউনিটি বৃদ্ধিতে উপযোগী। ইমিউনিটি ভাল থাকলে বাচ্চারা প্রাণবন্ত থাকবে এবং সুস্থভাবে বেড়ে উঠবে। বাইরের খাবার, ভাজাভুজি অতিরিক্ত খেলে বাচ্চার খাদ্যাভ্যাস ভাল হবে না। এর প্রভাব আজীবন ভুগতে হতে পারে। তাই ছোট থেকেই বাচ্চার সঠিক খাদ্যাভ্যাস তৈরিতে যত্নবান হন।

Post a Comment

Please do not link comment any spam or drive spams content

Previous Post Next Post