ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগল পালন পদ্ধতি

আজ আমরা ছাগল পালন (Goat farmingসম্পর্কেই সম্পূর্ণ তথ্য প্রদান করতে চলেছি।

 ছাগলের অধিকাংশই ব্ল্যাক বেঙ্গল প্রজাতির। বাংলার কালো ছাগল প্রজাতির নাম হলেও কালো রঙ ছাড়া বাদামী এবং সাদা রঙের প্রজাতির ছাগল কম সংখ্যায় দেখা যায়।



ছাগল পালন পদ্ধতি (Goat farming)

  1. ছাগলের ঘর শুষ্ক, উঁচু, জল জমে না, এমন স্থানে স্থাপন করা উচিৎ।
  2.  পূর্ব-পশ্চিমে লম্বালম্বি, দক্ষিণ দিক খোলা এমনভাবে করতে হবে। 
  3.  জল নিষ্কাশনের জন্য উত্তম ব্যবস্থা আছে, এমন স্থানকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ছাগল ঠাসাঠাসি অবস্থায় বাস করতে পছন্দ করে না।
  4.  এরা মুক্ত আলো, বাতাস এবং পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন স্থানে থাকতে পছন্দ করে।
  5. এক জোড়া ছাগলের জন্য ৫ ফুট লম্বা, ১.৫ ফুট চওড়া এবং ৬ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট খোঁয়াড় প্রয়োজন।
  6.  প্রতিটি পূর্ণ বয়স্ক ছাগলের জন্য গড়ে ১০-১৮ বর্গফুট এবং বাড়ন্ত বাচ্চার জন্য ৩-৮ বর্গফুট জায়গার প্রয়োজন।
  7.  ছাগলের ঘর খড়, টিন বা ইঁট নির্মিত হতে পারে।
  8.  তবে ঘরের ভিতর বাঁশ বা কাঠের মাচা প্রস্তুত করে তার ওপর ছাগল রাখা উচিৎ। মাচার উচ্চতা ১ মি. (৩.৩৩ ফুট) এবং মাচা থেকে ছাদের উচ্চতা ৬-৮ ফুট হবে।
  9.  মল-মূত্র নিষ্কাশনের গোবর ও চনা সুবিধার্থে বাঁশের চটা বা কাঠের মাঝে ১ সেমি. ফাঁক রাখতে হবে।
  10. বৃষ্টি যেন সরাসরি ঘরের ভিতর প্রবেশ না করতে পারে, সেজন্য ছাগলের ঘরের চালা ১-১.৫ মি. (৩-৩.৫ ফুট) ঝুলিয়ে দেওয়া প্রয়োজন।
  11.  শীতকালে রাতের বেলায় মাচার উপরের দেওয়ালকে চট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। পাঁঠার জন্য অনুরূপ ভাবে পর্যাপ্ত আলো বাতাস ও মল-মূত্র নিষ্কাশনের উত্তম সুবিধাযুক্ত পৃথক খামার তৈরি করতে হবে।
  12.  শীতকালে মাচার উপর ১.৫ ইঞ্চি পুরু খড় বিছিয়ে তার ওপর ছাগল রাখতে হবে। প্রতিদিন ভালোভাবে পরিষ্কার করে রৌদ্রে শুকিয়ে পুনরায় খড় বিছাতে হবে।

খাদ্য ব্যবস্থাপনা (Feed management) 

  1. ছাগলকে রাস্তার ধার, পুকুর পাড়, জমির আল, পতিত জমি বা পাহাড়ের ঢালে বেঁধে বা ছেড়ে ৮ - ৯ ঘণ্টা ঘাস খাওয়াতে পারলে খুব উপকার হবে। 
  2. এ ধরণের সুযোগ না থাকলে প্রতি ২০ কেজি ওজনের ছাগলের জন্য দৈনিক ০.৫ – ১ কেজি পরিমাণ কাঁঠাল, ইপিল, ঝিকা, বাবলা ইত্যাদি গাছের পাতা অথবা এদের মিশ্রণ দেওয়া যেতে পারে।
  3.  প্রতিটি ছাগলকে দৈনিক ২৫০ - ৩০০ গ্রাম ঘরে প্রস্তুতকৃত দানাদার খাদ্য দেওয়া যেতে পারে।
  4. ১০ কেজি দানাদার খাদ্য মিশ্রণে যেসব উপাদান থাকা প্রয়োজন, তা হল- চাল ভাঙ্গা ৪ কেজি, ঢেঁকি ছাঁটা চালের কুঁড়া ৫ কেজি, খেসারি বা অন্য কোন ডালের ভুষি ৫০০ গ্রাম, মিনারেল মিক্সচার ২০০ গ্রাম এবং লবণ ৩০০ গ্রাম।
  5. ইউরিয়া দ্বারা প্রক্রিয়াজাত খড় ও সাইলেজ খাওয়ালে ভালো হয়।
  6.  কারণ প্রক্রিয়াজাত খাদ্যে আমিষের পরিমাণ বেশী থাকে এবং পরিপাকও ভালোভাবে হয়।
  7.  জন্মের পর থেকেই ছাগল ছানাকে আঁশজাতীয় খাদ্য যেমন কাঁচা ঘাস ইত্যাদিতে ধীরে ধীরে অভ্যস্ত করে তুলতে হবে।
  8. দানাদার খাদ্য খাওয়ানোর পর ছাগলকে পর্যাপ্ত পরিমাণ পরিষ্কার জল খেতে দিতে হবে।
  9.  বাড়ন্ত ছাগলকে দৈনিক প্রায় ১ লিটারের মতো জল পান করানো উচিৎ।
  10. কাঁচা ঘাস কম বা এর অভাব ঘটলে ছাগলকে ইউরিয়া - চিটা গুড় মেশানো খড় নিম্নোক্ত প্রণালীতে বানিয়ে খাওয়াতে হবে।
  11. ছাগলের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা
  12. একথা মনে রাখা প্রয়োজন যে, মুক্ত ভাবে ছাগল প্রতিপালনের তুলনায় আবদ্ধ অবস্থায় ছাগল পালন অনেক বেশী ঝুঁকিপূর্ণ।
  13. এ ব্যবস্থায় বৈজ্ঞানিক চিন্তা-ভাবনা ও প্রযুক্তির সমন্বয় না ঘটালে খামারীকে বিস্তর সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
  14. এজন্য ছাগলের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও স্বাস্থ্যের প্রতি খামারীকে স্বতন্ত্রভাবে দৃষ্টি দিতে হবে।
  15. ছাগলের খামারে রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে মারাত্মক ক্ষতি হয়ে থাকে।
  16. তাই বিভিন্ন রোগ দমনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া অত্যন্ত নেওয়া জরুরি।
  17. তা না হলে খামার থেকে লাভের আশা করা যায় না।
  18. খামারে ছাগল আনার পর থেকে প্রতিদিনই প্রতিটি ছাগলের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে। 
  19. প্রথম পাঁচ দিন সকাল ও বিকালে দু’বার থার্মোমিটার দিয়ে ছাগলের দেহের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে হবে।
  20.  হঠাৎ কোন রোগ দেখা মাত্রই পশুচিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।
  21. তীব্র শীতের সময় ছাগী বা বাচ্চাদের গায়ে চট পেঁচিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
  22.  মাচার নিচ এবং ঘর প্রতিদিন সকালে পরিষ্কার করতে হবে এবং কর্মসূচী অনুযায়ী জীবাণুনাশের ব্যবস্থা নিতে হবে।
  23. কৃমিনাশক ঔষধ প্রয়োগ – সকল ছাগলকে নির্ধারিত মাত্রায় বছরে দু’বার কৃমিনাশক ঔষধ প্রদান করতে হবে।
  24.  কৃমিনাশক কর্মসূচী অনুসরণের জন্য পশু চিকিৎসকের ব্যবস্থা পত্র অনুযায়ী সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।


আধুনিক পদ্ধতিতে ছাগল পালনের কিছু তথ্যঃ

  1. মাংস ও চামড়া উৎপাদন, পারিবারিক আয় বৃদ্ধি, কৃষি উৎপাদন সামগ্রীতে ব্যবহার এবং দারিদ্র বিমোচনের জন্য এই ছাগলদের পালন করা হয়।
  2. আমাদের দেশে স্থানীয় কালো জাতের ছাগল সর্বত্র পালন করা হয়।
  3. বোয়ের,সুদানিজ,ডেসার্ট, বারবারি, যমুনাপাড়ি এবং আরও কয়েক জাতের ছাগল বাংলাদেশে পালন করা হয়।
  4. বিশ্ববিখ্যাত চামড়া উৎপাদনের জন্য।
  5. দেশীয় কালো ছাগলের ওজন ১৫-২০ কেজি হতে পারে।
  6. ছাগলের ওজন প্রতিদিন ২০ থেকে ৪৫ গ্রাম বাড়তে পারে।
  7.  আমাদের দেশীয় ছাগলের চামড়া ভাল এবং এটি অপেক্ষাকৃত অধিক হারে বাচ্চা দেয়।
  8. অল্প দুধ এবং বেশি বাচ্চা দেয় বিধায় দুধের অভাবে বাচ্চার মৃত্যুর হার বেশি হয়।
  9. একটি পাঁঠা দ্বারা ১০-১২ টি ছাগীকে পাল দেয়া যেতে পারে।
  10. পারিবারিকভাবে ১০-১২ টি ছাগল পালা সুবিধাজনক।
  11. বসত বাড়ীর আঙ্গিনায় অতিরিক্ত খাদ্য সরবরাহ ছাড়া প্রায় ৫-৬টি ছাগল পালা যাবে।
  12. খাসী ৮-১২ মাসের মধ্যে এবং পাঠী ৬-৭ মাসের মধ্যে বিক্রি করা যায়।
  13. দেশীয় ছাগল ২থেকে ৪ টি বাচ্চা দিতে পারে।
  14. ছাগলের ঘরের পরিবেশ পরিষ্কার, শুষ্ক, দূর্গন্ধমুক্ত, উষ্ণ ও পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
  15. গোবরযুক্ত, স্যাঁতস্যাঁতে, অন্ধকার ও দূর্গন্ধকর পরিবেশে ছাগলের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
  16. সাধারণত ছাগলের নিউমোনিয়া, একযাইমা, চর্মরোগ, পাতলা পায়খানা, পরজীবি এবং খাদ্যে বিষক্রিয়া দেখা দেয়।
  17. রোগ হলে ছাগলের ওজন কমে যায, পেটের বাচ্চা পড়ে যায়, চামড়ার গুণ নষ্ট হয় ও বাচ্চা দেয়া কমে যায়।
  18. ছেড়ে দিয়ে, ঘরে রেখে এবং ঘরে ও বাইরে উভয় অবস্থাতেই ছাগল পালা যায়।
  19. প্রতিটি বড় ও বয়স্ক ছাগলের জন্য ৮-১০ ব.ফুট এবং প্রতিটি বাড়ন্ত বাচ্চা ছাগলের জন্য ৪-৫ ব.ফুট।
  20. ছাগলের ঘর কি কি জিনিস দ্বারা বানানো যায়?
  21. ছন, গোলপাতা, খড় ও বাঁশ দ্বারা ছাগলের ঘর বানানো যায়। আর্থিক অবস্থায় কুলালে পলিথিন ব্যবহার করে ছাগলের ঘর বনানো বা তৈরী করা হয়।
  22. .ছাগলের শীত নিবারণ জন্য তাদের ঘরের বেড়ার সাথে চট দেয়া যেতে পারে।
  23. ছাগল লতাপাতাসহ সব প্রকার খাবার খায়। ছাগলের খাদ্যে বিষক্রিয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
  24. বাচ্চা প্রসবের পরে ছাগলের বাচ্চাকে প্রথম তিন দিন শালদুধ এবং গাভীর সাধারণ দুধ ছাগলের বাচ্চাকে খেতে দেয়া উচিত।
  25.  ছাগল জন্মের পরপরই  নাক ও শরীরের শ্লেষ্মা পরিষ্কার করে শালদুধ খাওয়াতে হবে।
  26. প্রতি কেজি ওজনের জন্য ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম শালদুধ ছাগলের বাচ্চাকে খাওয়াতে হবে।
  27. শালদুধ দিনে ৮-১০ বার খাওয়াতে হবে।
  28. শালদুধ খাওয়ানোর উপকারিতা হল শালদুধে ছাগলের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
  29.  প্রতি ছাগলের শালদুধ থেকে দুটি বাচ্চাকে খাওয়ানো সুবিধাজনক।
  30. বেশি বাচ্চা হলে গাভীর দুধ ও ভাতের মাড় খাওয়ানো যেতে পারে।
  31. প্রথম সপ্তাহের পরপরই বাচ্চাকে ঘাস খাওয়ানোর অভ্যাস করানো দরকার।
  32. ঘাস খাওয়ার অভ্যাস করতে প্রায় ২৫-৩০ দিন সময় লাগবে।
  33. সকল ছাগলকে কচি ঘাস, দূর্বা, সেচি, আরাইল্যা, মাশকালাই, খেসারী আর উন্নত কচি ঘাস হিসাবে নেপিয়ার, রোজি, প্লিকাটুলাম, এন্ড্রোপোগন, সেন্ট্রোসোমা ইত্যাদি ঘাস খাওয়ানো যেতে পারে।
  34. বয়স বাড়ার সাথে সাথে ছাগলকে যে খাবার খাওয়াতে হবে তা হল, এক সপ্তাহ থেকে বার সপ্তাহ পর্যন্ত ২০০ গ্রাম থেকে শুরু করে প্রতি সপ্তাহে ৫০ গ্রাম ছাগলের দুধ খাওয়াতে হবে।
  35. ভাতের মাড় দুই থেকে চার সপ্তাহে দুধের সাথে সামান্য পরিমাণে ভাতের মাড় এবং পাঁচ থেকে বার সপ্তাহের মধ্যে প্রতি সপ্তাহে ৫০ গ্রাম পর্যন্ত বাড়াতে হবে।
  36. কচি ঘাস দুই থেকে পাঁচ সপ্তাহ পর্যন্ত সামান্য পরিমাণে এবং পরবর্তীতে বার সপ্তাহ পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে কচি ঘাস খাওয়াতে হবে।
  37. জন্মের পর বাচ্চার নাভী চামড়ার কাছ থেকে ৫-৭ সে.মি. রেখে কাটতে হবে।
  38. বাচ্চার ঘরের তাপমাত্রা ২৫-২৮ ডিগ্রী সে. থাকতে হবে।
  39. অতিরিক্ত দুধ খাওয়ালে ছাগলের বাচ্চার পাতলা পায়খানা হতে পারে।
  40. দেশীয় ছাগলের বাচ্চার ওজন ৩-১২ সপ্তাহ বয়সে বেশি বাড়ে।
  41. ছাগলের বাচ্চাকে ৩-৪ সপ্তাহের মধ্যে খাসী করানো হয়।
  42. খাসী করানোর সময় অভিজ্ঞ ব্যক্তির দ্বারা খাসী করাতে হবে এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে ভালো জীবাণুনাশক প্রয়োগ করতে হবে।
  43. সব বয়সের ছাগলের খাবার এক ধরণের হবে না, প্রজনন ও মাংস-প্রদানকারী ছাগলের জন্য নিয়মমাফিক আলাদা আলাদা খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।
  44. শরীরের ওজনের ৪-৫% হারে শুষ্ক পদার্থ দেয়া উচিৎ।
  45. দানাদার খাদ্য দুই মাস বয়সে ১০০ গ্রাম হিসাবে প্রতি মাসে ৫০ গ্রাম বাড়াতে হবে এক বছর পর্যন্ত।
  46. দৈহিক ওজনের তুলনায় দুগ্ধবতী ছাগীর শরীরের ওজনের ৫-৬% হারে খাবার খায়।
  47. তিন বছর বয়সে একটি ছাগীর ওজন প্রায় ২০-২৫ কেজি হয়। এই সময় একটি ছাগী ১.৫ কেজি খাবার খায়।
  48. প্রতিদিন একটি ছাগী সাধারণত ৪০০ মি.লি. থেকে ১ লি. দুধ দেয়।
  49. বাচ্চা দেওয়ার তিন সপ্তাহ পর ছাগল গরম হয়।
  50. সুস্থ্য ছাগী বছরে দু’বার বাচ্চা দেয়।
  51. জন্মের পর বাচ্চার গড় ওজন ১.২৫ কেজ হয়।
  52. ছাগলকে দানাদার খাদ্য হিসাবে গম, ভূট্টা, ভাঙ্গাঁ-চাল ১২%, গমের ভূষি ও কুঁড়া ৪৭%, যেকোন ভূষি ১৬%, খৈল ২১.৫%, খনিজ ২%, লবণ ১% এবং খাদ্যপ্রাণ ও খনিজ ০.৫% দিতে হবে।
  53. ছাগলকে ইউরিয়া সার যায়, খড়:ইউরিয়া:চিটাগুড =৮২%+৩%+১৫% হারে খাওয়াতে হবে।
  54. ছাগলকে সরাসরি চিটাগুড় খাওয়ানো যাবে না কারণ পাতলা পায়খানা বা বিষক্রিয়া দেখা দিবে।
  55. একটি ছাগী কোন বয়সে যৌবনপ্রাপ্ত হয়?
  56. পাঁচ থেকে ছয় মাস বয়সে।
  57. সাত থেকে আট মাস বয়সের ছাগীকে পাল দেয়া হয়?
  58. যৌবনপ্রাপ্ত বয়সে ছাগীর ওজন সাধারণত প্রায় ১২-১৩ কেজি হয়?
  59. প্রাপ্ত বয়স্ক ছাগীর গরম হওয়ার লক্ষণগুলো হল যোনীতে শ্লেষ্মা নির্গত হয়, ঘন ঘন অস্বাভাবিক ডাকাডাকি করে ও অন্য ছাগীর উপর উঠানামা করে।
  60. পাল দেয়ার সঠিক সময় হল গরম হওয়ার ১২-৩৬ ঘন্টা পরে।
  61. সকালে গরম হলে বিকালে আর বিকালে গরম হলে সকালে পাল দিতে হবে।
  62. সব সময় ছাগলের সাধারণ রোগের প্রতিরোধের জন্যটিকা ও কৃমিনাশক প্রয়োগ করতে হবে ও পশু-চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
  63. ছাগলের সবচেয়ে ক্ষতিকর রোগ হল পিপিআর ও গোট-পক্স।
  64. বছরে দুই বার ছাগলকে কৃমিনাশক খাওয়াতে হবে।
  65.  এপ্রিল-মে এবং অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ছাগলকে কৃমিনাশক খাওয়াতে হবে।
  66. চর্মরোগ দেখা দিলে ছাগলকে খামার থেকে কমপক্ষে ১৫-২০ দিন আলাদা করে ফেলতে হবে।
  67. পর্যাপ্ত ঘাস ও দানাদার খাদ্য সরবরাহ করে ছাগলকে আস্তে আস্তে ঘরে থাকতে অভ্যস্ত করতে হবে।
  68. ছাগলকে মোট খাবারের ৬০-৮০% পরিমাণ আঁশ-জাতীয় খাদ্য দিতে হবে।
  69. ছাগলের আঁশ-জাতীয় খাদ্য বলতে ঘাস, লতা, পাতা ও খড় ইত্যাদি বুঝায়।
  70. ছাগলের দানাদার খাদ্য বলতে কুঁড়া, ভূষি, চাল ও ডাল ইত্যাদি খাদ্যকে বুঝায়।
  71. ব্লাক বেঙ্গল ছাগল আমাদের দেশে ভালভাবে বাঁচতে পারে কেন কারণ এদেশের আবহাওয়া ও খাদ্য-সামগ্রী ব্লাক বেঙ্গল ছাগলের জন্য খুবই উপযোগী।
  72. প্রসবের পর সাত দিন পর বাচ্চাকে ছাগীর সাথে রাখতে হবে।
  73. এ ধরণের পালন পদ্ধতিকে ব্রুডিং পেন পদ্ধতি বলে।
  74. ব্রুডিং পেন পদ্ধতি বলতে বুঝায় পরিমিত জায়গায় এবং তাপমাত্রায় বাচ্চাকে যে খাঁচায় রাখা হয় তাকে কে।
  75. ব্রুডিং পেনে কিভাবে পরিমিত তাপমাত্রা রক্ষা করা হয়?
  76. ১৫ ডিগ্রি সে.- এর নিচে নামলে খাঁচায় ১০০ ওয়াটের একটি বাল্ব জ্বালাতে হবে।
  77. ছাগীকে গরীবের গাভী বলা হয় কারণ মাত্র কয়েকটি ছাগল থেকে একজন খামারী বা মহিলা সংসারের ব্যয়ভার মেটাতে পারেন।
  78.  দেশী ছাগলের খামার শুরু করতে যে সমস্যা হতে পারে তাহল, দেশী ছাগলের প্রকৃত জাতের অভাব, সস্তা দামের সুষম খাদ্যের অভাব, চারণ-ভূমির স্বল্পতা ও জৈব-নিরাপত্তার অভাব ইত্যাদি।

ছোট ও বড় সকল ছাগলের খাদ্য তালিকা সমূহঃ

 বেশি দানাদার দিলে অবশ্যই খাবারে এমোনিয়াম ক্লোরাইড ব্যবহার করতে হবে। পরিমান হবে ১% মোট দানাদার খাবারের এর ফলে পাঠা বা খাসির প্রস্রাব রাস্তায় পাথর হবেনা। বয়স অনুযায়ী ছাগলের খাবারের তালিকা সম্পর্কে আমাদের সবার জানা উচিত। ছাগল পালনে উপকারে খাদ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই চলুন জেনে আসি ছাগলের খাদ্য তালিকা সম্পর্কে কিছু তথ্যঃ-

ছোট বা বাচ্চা ছাগলের খাদ্য তালিকা তে খাদ্যের উপাদন ও পরিমান সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো;

ক্রমিক নংখাদ্যের উপাদনখাদ্যের পরিমান
০১ছোলা ভাঙ্গা১৫%
০২গম ভাঙ্গা৩৫%
০৩খৈল ভাঙ্গা২৫%
০৪ ভুসি২০%
০৫খনিজ মিশ্রণ৪%
০৬লবণ০১%
০৭ পানিপরিমান মত
মোট =১০০%

 

সাবলম্বী বা বড় ছাগলের খাদ্য তালিকা তে খাদ্যের উপাদন ও পরিমান সম্পর্কে কিছু আলোচনা করা হলো;

ক্রমিক নংখাদ্যের উপাদনখাদ্যের পরিমান
০১ছোলা ভাঙ্গা২০%
০২গম ভাঙ্গা২০%
০৩খৈল ভাঙ্গা৩৫%
০৪ ভুসি২০%
০৫খনিজ মিশ্রণ৪%
০৬লবণ০১%
০৭ পানিপরিমান মত
মোট =১০০%

Post a Comment

Please do not link comment any spam or drive spams content

Previous Post Next Post