আঁটোসাঁটো অন্তর্বাস কি ইরেকটাইল ডিসফাংশনের কারণ? পুরুষ বন্ধ্যত্ব কেন বাড়ছে

Clue Online Doctor News Portal 

 ইরেকটাইল ডিসফাংশন নিয়ে অনেক ভ্রান্ত ধারণা আছে। সন্তানধারণের জন্য যেমন সুস্থ ও স্বাভাবিক ডিম্বাশয় ও উৎকৃষ্ট ডিম্বাণু প্রয়োজন, তেমনই সুস্থ-সচল শুক্রাণুও দরকার। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে পুরুষজনিত বন্ধ্যত্ব বা মেল ইনফারটিলিটির একাধিক উন্নত থেরাপি রয়েছে। স্বল্প সংখ্যক শুক্রাণু থাকলেও তার চিকিৎসা করা সম্ভব।



অনেকেরই ধারণা আছে আঁটোসাঁটো অন্তর্বাস পরলে তার থেকে ইরেকটাইল ডিসফাংশন হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টাইট অন্তর্বাসের সঙ্গে ইরেকটাইল ডিসফাংশনের কোনও কারণ নেই। শারীরিক, মানসিক, অভ্যাসগত নানা কারণ ও জীবনযাপনে সংযমের অভাবে বন্ধ্যত্ব হতে পারে। আর চিন্তার ব্যাপার হল, ইদানীং কালে পুরুষ বন্ধ্যত্ব বাড়ছে।

কী কী কারণে বাড়ছে পুরুষ বন্ধ্যত্ব

মেয়েদের তুলনায় এখন বন্ধ্যত্বের সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে পুরুষদের। ৫০ শতাংশ বন্ধ্যত্বের কারণ মেল-ইনফার্টিলিটি ফ্যাক্টর। মহিলাদের পেলভিক ইলফ্ল্যামেটরি ডিজিজ বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের কারণে বন্ধ্যত্ব আসতে পারে। তার চিকিৎসা আছে, সঠিক থেরাপিতে সারিয়ে তোলা যায়। কিন্তু পুরুষজনিত বন্ধ্যত্ব নানা কারণে অবহেলিত থেকে যায়। সঙ্কোচ, লজ্জা, মেল ইগো ইত্যাদি নানা কারণে রোগ লুকিয়ে যাওয়ার প্রবণতা মেল ইনফার্টিলিটি বা পুরুষজনিত বন্ধ্যত্বের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ এখন বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা অনেক উন্নত।

ইনফার্টিলিটি বা বন্ধ্যত্বের কারণ অনেক। স্থূলত্ব বা ওবেসিটি যেমন পুরুষ ও মহিলা উভয়েরই ইনফার্টাইল হওয়ার বড় কারণ, তেমনি জীবনযাপনে কিছু অসংযম, খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান-অ্যালকোহলের নেশা, শরীরচর্চায় অনীহা, অবসাদ-স্ট্রেস-উৎকণ্ঠা এবং নানা রকম ওষুধ খাওয়ার প্রবণতাও বন্ধ্যত্বের সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে। এইসব কিছুর সঙ্গেই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যোগ আছে ডায়াবেটিসের। বিশেষজ্ঞরা বলেন, টাইপ-১ ও টাইপ-২ দুই ধরনের ডায়াবেটিসই ইনফার্টিলিটির জন্য দায়ী। পুরুষদের টেস্টোস্টেরনের সমস্যা, ইরেকটাইল ডিসফাংশন, রিটার্ডেড ইজাকুলেশন, রেট্রোগ্রেড ইজাকুলেশন, শুক্রাণু বা স্পার্মের সংখ্যা কম, মানও খারাপ, হাইপোগোনাডিজম (টেস্টোস্টেরনের সংখ্যা কম)– এসবের কারণ হতে পারে নানারকম কো-মর্বিডিটি।

তাছাড়া বেহিসেবি খাওয়া, নিয়ম না মেনে ডায়েট, জাঙ্ক ফুড, তেল-মশলাদার খাওয়ার প্রবণতা, মদ ও ধূমপানের নেশা, রাত জাগা, প্রচণ্ড মানসিক চাপ ও স্ট্রেস ইরেকটাইল ডিসফাংশনের কারণ হতে পারে। মুটো মুঠো ওষুধ খাওয়ার অভ্যাসও বন্ধ্যত্বের সমস্যা ডেকে আনতে পারে।



কী কী অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে

পুরুষদের শুক্রাণু তৈরি হয় শুক্রাশয় বা টেস্টিস থেকে। প্রতিদিন প্রায় ১২ কোটির বেশি শুক্রাণু তৈরি হয়। এই শুক্রাণুর গঠন ও গতিশীলতা ঠিক আছে কিনা তা জানতে নানা রকম পরীক্ষা করা হয়। শুক্রাণুর ঘনত্ব, স্পার্ম কাউন্ট, স্পার্ম কনসেনট্রেশন, স্পার্ম মটিলিটি, ভাইটালিটি, মরফোলজি ইত্যাদি নানা ফ্যাক্টর দেখে নিতে হয়। তাছাড়া শুক্রাণুতে কোনও কম সংক্রমণ হয়েছে কিনা তাও পরীক্ষা করে দেখে নেওয়া হয়। এই ফ্যাক্টরগুলো যদি অস্বাভাবিক বা অ্যাবনরমাল হয়, তাহলে বন্ধ্যত্ব আসার সম্ভাবনা থাকে।

বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা

পুরুষ বন্ধ্যত্বের অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি হল ইকসি বা ইন্ট্রা-সাইটোপ্লাজমিক স্পার্ম ইঞ্জেকশন দিয়ে থেরাপি। শুক্রাণুর সংখ্যা যদি ১৪-১৫টিও থাকে, মানে খুব কম স্পার্ম কাউন্ট থাকলেও ইন্ট্রা-সাইটোপ্লাজমিক স্পার্ম ইঞ্জেকশন দিয়ে থেরাপি করলে সুফল মেলে। পুরুষজনিত বন্ধ্যত্বের আরও কয়েকটি চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে– যেমন আইইউআই (ইন্ট্রা ইউটেরাইন ইনসেমিনেশন), ডিআই (ডোনার ইনসেমিনেশন), ইকসি (ইন্ট্রা সাইটোপ্লাজমিক স্পার্ম ইঞ্জেকশন) এবং টেসা (টেস্টিকুলার স্পার্ম অ্যাসপিরেশন)। এর মধ্যে ইকসি বা টেসা বন্ধ্যত্বের চিকিৎসায় অসাধারণ কার্যকরী হয়েছে বলা যায়।


Post a Comment

Please do not link comment any spam or drive spams content

Previous Post Next Post