সারাদিন দপদপ করে মাথা? প্রচণ্ড ঝিমুনি, কোলেস্টেরল বাড়েনি তো!
Clue United Health Research team.
সকালে ঘুম থেকে উঠেই অসহ্য মাথার যন্ত্রণা। যেন ছিঁড়ে যাচ্ছে মাথার একদিক। সে সঙ্গেই বমি বমি ভাব। শরীর কাহিল। মেজাজ যেন তুঙ্গে। এ দিকে সারাদিনে প্রচুর জমা কাজ।
NH RNT Nursing Station Kolkata West Bengal |
এ সমস্যা কি প্রায়ই হয় আপনার? তাহলে একবার রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন। কে বলতে পারে কোলেস্টেরল লেবেল চড়চড় করে বেড়েছে কিনা!
কোলেস্টেরলের বাড়ার সঙ্গে মাথা ব্যথার সরাসরি সম্পর্ক আছে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত করে বলা যায়নি। তবে কোলেস্টেরল এমন এক খারাপ জিনিস যা শরীরে নানা সমস্যা, অসুখবিসুখ ডেকে আনে। রক্তে বেশি কোলেস্টেরল এলেই শারীরিক নানা সমস্যা শুরু হতে পারে।এর প্রভাব শরীরের বহিরঙ্গেও দেখা দেয়। তাই একটু সচেতন হলেই বুঝে যাওয়া যায় কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ছে কি না।
Read More: প্রাথমিক পর্যায়ে স্তন ক্যানসার নির্ণয়ের উপায়
কোলেস্টেরল বেড়ে গেলে তার নানা লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন–চোখের নীচে বা চোখের পাতায় সাদাটে বা হলদেটে ফোলাভাব দেখা যায়। উচ্চ কোলেস্টেরল থাকলে রক্তনালীতে অক্সিজেন সরবরাহ কমে। পর্যাপ্ত অক্সিজেনের অভাবে হৃদযন্ত্রে চাপ পড়ে বুকে ব্যথা হতে পারে। শরীরে অস্বস্তি, অল্প পরিশ্রমেই হাঁফ ধরে যাওয়া, এই উপসর্গগুলো দেখা দিতে থাকে।
নিজের কীডনী রোগ আছে কিনা কিডনী রোগ নিরুপনের জন্য সাধারণ পরীক্ষা চলুন জেনে নেই
আরও একটা সমস্যা হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোলেস্টেরল জমলে মস্তিষ্কেও রক্ত সঞ্চালন কমে। এই কারণে ঘাড়ে ও মস্তিষ্কের পিছনের দিকে মাঝে মাঝে একটানা ব্যথা হয়। মাইগ্রেন না থেকেও যদি প্রচণ্ড মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা এই লক্ষণগুলো থাকে তাহলে সাবধান হতে হবে।
Read More:দুর্বলতা বোধ হলেই ভিটামিন খেলে কি কি ক্ষতি বা রোগ হয় জেনে নিন
কোলেস্টেরল তৈলাক্ত, চর্বিজাতীয় এক ধরনের পদার্থ। ট্রাইগ্লিসারয়েড, লো ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (এলডিএল), হাই ডেনসিটি লিপোপ্রোটিন (এইচডিএল) এবং টোটাল কোলেস্টেরলের মধ্যে শুধুমাত্র এইচডিএল শরীরের জন্য উপকারী।
কিডনির অসুখ শরীরে গোপনে বাড়ছে না তো? দ্রুত মানা শুরু করুন এই বিষয়গুলি
বাকি তিনটিই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়। কোলেস্টেরল চর্বিজাতীয় পদার্থ বলেই সহজে মিশে যেতে পারে না। রক্তনালীতে জমে স্বাভাবিক রক্ত চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় কোলেস্টেরল।
হাই কোলেস্টেরল হলে কী কী প্রভাব পড়ে শরীরে –
Read More:রোগমুক্ত থাকতে চান? নিয়মিত খেতে হবে ১০টি খনিজ পুষ্টি
কোলেস্টেরল হাই থাকা মানে, সেগুলি হার্টের রক্তনালীর দেওয়ালগুলিতে অশুদ্ধি বা প্ল্যাক জমাতে থাকে। এর ফলে নালী সরু হতে থাকে। নালী সরু হওয়া মানে, হার্টে রক্ত-চলাচল বাধা পায়। যার ফল অবশ্যম্ভাবী হৃদরোগ।
বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে, ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সিদের হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে। তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশের পারিবারিক হাইপার কোলেস্টেরলের ইতিহাস আছে। তাঁরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই নিয়ে সচেতন নন। ফলে না হয় পরীক্ষা, না ধরা পড়ে সমস্যা। একেবারে সরাসরি হার্ট অ্যাটাকের মুখে পড়ছেন তাঁরা। এটার প্রবণতা দিনকেদিন বাড়ছে। পরিসংখ্যান বলছে, সারা বিশ্বের নিরিখে ভারতে অনেক বেশি সংখ্যক অল্পবয়সি মানুষ হার্টের এই সমস্যায় পড়ছেন। যার বড় কারণ পারিবারিক হাইপার কোলেস্টেরল।
Read More:কিডনি পাথর থেকে বাঁচতে চাইলে এড়িয়ে চলুন
শারীরিক পরিশ্রম করলে বা কোনও উদ্বেগের কারণে হৃদস্পন্দনের হার হঠাৎ করে বেড়ে যেতে পারে। কিন্তু কোনও কারণ ছাড়া মাঝে মাঝেই হৃদগতি বেড়ে গেলে সেটা চিন্তার কারণ। মাঝে মাঝেই বুক ধড়ফড়, বুকে চাপ, মাথা ব্যথা, ঝিমুনি থাকলে সময় নষ্ট না করে রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভাল। খুব ভাল করে লক্ষ্য করে দেখবেন,
চোখের মণির চারপাশে ধূসর রঙের কোনও গোল দাগ দেখা যাচ্ছে কিনা! তা হলে বুঝতে হবে চোখের সমস্যা নয়, বরং কোলেস্টেরল মাত্রা বেড়ে গেছে। দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লাইফস্টাইল ম্যানেজমেন্ট খুব দরকার
প্রতিদিনের জীবনে কিছু নিয়ম মানাও ভাল। কোলেস্টেরলের রোগীদের প্রসেসড মাংস, মটন, গরুর মাংস খেতে একেবারেই নিষেধ করছেন ডাক্তাররা। আধুনিক যুগে তাড়াহুড়োতে রান্নার জন্য অনেকেই প্রসেসড মাংসের প্রতি ঝোঁকেন। কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে এগুলো এড়িয়ে যেতে বলছেন ডাক্তাররা। সসেজ, বেকন এগুলো বেশি পরিমাণে খেলে হার্টের অসুখ যেমন হতে পারে, তেমনই কলন ক্যানসারও ধরা পড়ে কখনও কখনও।
Read More: ওজন কমাতে, ক্যান্সার প্রতিরোধ করবে যে ফল
প্যাকেটজাত বা প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চেষ্টা করুন পাতে টাটকা ও প্রাকৃতিক খাবার রাখতে। প্রক্রিয়াজাত খাবারে অতিরিক্ত চিনি ও লুকনো ট্রান্স ফ্যাট মেদ জমায়। আজকাল প্যাকেটজাত প্রসেসড মিট খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। প্রসেসড মিট বেশি খেলে কোলেস্টেরল সাঙ্ঘাতিকভাবে বেড়ে যায়। সেই সঙ্গেই পাকস্থলিতে কিছু ক্ষতিকারক ব্যাকটিরিয়া দ্রুত গতিতে বাড়তে শুরু করে৷ যা মাংসের কারনিটিন নামের উপাদান ভেঙে গিয়ে ট্রাইমিথাইল্যামিন যৌগে পরিণত হয়। রক্তে শোষিত হয়ে, লিভারের বিপাক ক্রিয়ায় ভেঙে ট্রাইমিথাইল্যামিন-এন-অক্সাইডে পরিণত হয় যা হার্টের সূক্ষ্ম রক্তনালিতে চর্বি জমিয়ে ইসকিমিক হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। সব রকম খাবারই রাখতে হবে খাদ্যতালিকায়। তাতে যেমন প্রোটিন থাকবে, তেমনই ফ্যাট ও শর্করাও। সবই রাখতে হবে পরিমাণ মতো। সে ক্ষেত্রে ফ্যাট নিতে হবে প্রয়োজনীয় মাছ-মাংস বা রান্নায় যেটুকু তেল লাগছে তা থেকেই। বাড়তি ফ্যাটযুক্ত খাবার তালিকায় না রাখাই ভাল। আর অ্যালকোহলের নেশা ত্যাগ করাই শ্রেয়।
আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোন প্রশ্ন থাকে তবে নীচে কমেন্ট করে জানান । আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন । কোন সাজেশন থাকলে নির্ধিদায় আমাদের কে জানান, কমেন্টস করুন । পুরো পোস্ট টি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।
Post a Comment
Please do not link comment any spam or drive spams content