ঔষধ প্রদানকারী উদ্ভিদ (Medicinal Plants)
এখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস ভূক্ত নিম্নলিখিত ২০টি ভেষজ উদ্ভিদের সাধারণ নাম
গোত্রের নাম, ব্যবহৃত অংশ/ অংশ সমূহ এবং ব্যবহার উল্লেখ করা হল । উল্লেখ্য যে সারা পৃথিবীর
লোক বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে এই ভেষজ উদ্ভিদ বিভিন্ন গুরুত্তপূর্ণ ঔষধ উৎপাদনের জন্য নিম্ম লিখিত উদ্ভিদ ব্যবহার
করে আসছে ।
1. Abroma augusta.
সাধারণ নাম : উলট কম্বল। গােত্রের নাম :
Sterculiaceae ব্যবহৃত অংশ : পাতার ডাটা, মূলের ছাল, ক্ষেত্র বিশেষে সমগ্র উদ্ভিদ
ব্যবহার ঃ
(A) রোগের নাম : আমাশয় ,
ব্যবহার্য অংশঃ পাতার ডাটা
নিয়মাবলী
: ডাটা ছাট ছাট করে কেটে সন্ধ্যায় পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় এবং পরদিন ঐ পানি খেতে হয় ।
(B) রোগের নাম ঃ শারীরিক দুর্বলতায় ।
ব্যবহার্য অংশঃ পাতার ডাটা।
নিয়মাবলী : ডাটা ভেজানো পানি নিয়মিত পান করলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায় ।
(C) রোগের নামঃ প্রস্রাবে জ্বালা যন্ত্রনায়
ব্যবহার্য অংশঃ পাতার ডাটা । নিয়মাবলী : ৩-৪টি পাতার ডাটা ২৫০ মি. লি, পানিতে কচলিয়ে প্রয়জনে সামান্য চিনি।মিশিয়ে সকাল সন্ধ্যায় সেবন করলে বিশেষ উপকার পাওয়া যায় (D) রোগের নাম : জরায়ুর স্থান চ্যুতিতে
ব্যবহার্য অংশ : তাজা মূলের ছাল
নিয়মাবলী : কিছু পরিমান (৫ গ্রাম) তাজা মূলের ছাল পিযে পানিতে মিশিয়ে সামান পরিমাণ চিনি সহ নিয়মিত সেবন করতে হবে ।
2. Abrus Precatorius
সাধারণ নাম : কুঁচ, রতি
গোত্রের নাম : Papilionaceae
ব্যবহৃত অংশ ঃ বীজ
ব্যবহার : (A) রোগের নাম : জন্ম নিয়ন্ত্রনে
ব্যবহার্য অংশ : বীজ।
নিয়মাবলী : বাংলাদেশের নোয়াখালী অঞ্চলে এর সাহায্যে জন্ম নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয় ।
বীজের ভেতরের শাঁস পিসে কলার ভেতর ভরে রাতে শোয়ার আগে খেতে এটা খাওয়ার এক ঘন্টা আগে বা পরে অন্য কিছু খাওয়া নিষেধ। ধার, হয় যে একটি কুঁচ বীজ এক বছর পর্যন্ত জন্ম নিয়ন্ত্রণ করতে পারে । পার্শ-প্রতিক্রিয়া ব্যতীত এ ভেষজ পদ্ধতি গ্রামাঞ্চলে প্রচলিত আছে ।
3. Acalypha indica
সাধারণ নাম : মুক্তোঝুরি ,গোত্রের নাম : Euphorbiaceae
ব্যবহৃত অংশ ; সমস্ত উদ্ভিদ ব্যবহার :
(A) রোগের নাম : হাঁপানি।
ব্যবহার্য অংশঃ পাতার রস নিয়মাবলী পাতার রস এবং পুরাতন ঘি একত্রে মিশিয়ে হালকা গরম করে বুকে মালিশ করলে হাঁপানির কষ্ট দূর হয় ।
(B) রোগের নাম : ছুলি ; ব্যবহার্য অংশঃ পাতা
নিয়মাবলী : পাতা বেটে ছুলিরোগে লাগালে ভাল হয়ে যায় । (C) অন্যান্য রোগে :
(i) বাচ্চাদের পেটে ক্রিমি হলে পাতার রস গরম করে ঠান্ডা হলে ছেকে খাওয়ালে ক্রিমির উপদ্রব কমে
(ii) পাতা বেটে ক্ষতস্থানে লাগালে ক্ষত দ্রুত ভাল হয় ।
(ii) পানিতে মূল সিদ্ধ করে খেলে কোষ্ট পরিষ্কার হয় ।
4. Adhatoda zeylanica
সাধারণ নাম : বাসক, বাউক পাতা ।
গোত্রের নাম : Acanthaceae
ব্যবহৃত অংশ পাতা, ফুল, ছাল ও মূল
ব্যবহার : (A) রোগের নাম কাশি ও হাঁপানি।
ব্যবহার্য অংশঃ পাতার রস।
নিয়মাবলী ঃঃ সামান্য পরিমাণ পাতাচূর্ণ (৩ গ্রাম) ২-৩ চা চামচ মধ ও সামান্য পরিমাণ পিপল চূর্ণ মিশিয়ে দৈনিক ৩-৪ বার সেবন করতে হয়।
B) রোগের নাম ঃ রক্ত অর্শ
ব্যবহার্য অংশঃ পাতা।
নিয়মাবলী: কয়েকটি (৫-৭) রক্ত জবা ফুল এবং ২-৩টি বাসক পাতা ভেজে গরম ভাতের সাথে সকালে খালি পেটে খেতে হয়। সম্পূর্ণ আরােগ্য না হলেও অনেকটা উপকার হয় বলে অনেক ব্যবহারকারী বলেছেন।
5. Aegle marmelos.
সাদধারণ নাম বেল ; গোত্রের নাম ঃRutaceae ব্যবহার অংশ
ঃ ফল, মূলের ছাল, পাতা ও ফুল
ব্যবহারঃঃ
(A) রোগের নাম : আমাশয় ও উদরাময়
ব্যবহার্য অংশ ঃ বেল শুঠ
নিয়মাবলী ঃঃ কাঁচা বেল চাকা চাকা করে কেটে রৌদ্রে শুকানা হয়। এগুলাকে বেলওঁঠ বলা হয় । ঠান্ডা পানিসহ এটা নিয়মিত ব্যবহারে পুরাতন আমাশয় এবং উদরাময়
আরাগ্যো হয়।
(B) রোগের নাম : সর্দি ও সর্দি জ্বর
ব্যবহার্য অংশঃ পাতার রস
নিয়মাবলী : ভালভাবে পাতা বেটে রস ছেকে নিতে হয়। অতঃপর (১০-২০) গ্রাম প্রতি দিনে চার বার করে সেবন করা উচিত।
(C) রোগের নাম : শুক্রতারল্য
ব্যবহার্য অংশ : মূলের ছাল
নিয়মাবলী : মূলের ছাল চূর্ণ এবং তার অর্ধেক পরিমাণ জিরা এক সাথে পিষে গাওয়া ঘি অথবা মধুর সাথে মিশিয়ে সকাল সন্ধ্যায় কয়েকদিন সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়।
6. Aloe indica. সাধারণ নাম: ঘৃতকুমারী, ঘৃতকাঞ্চন, ঘৃতকমল, ঘৃতকচু । গোত্রের নাম : Liliaceae
ব্যবহৃত অংশ : পাতার ভেতরের পিছিল পদার্থ
ব্যবহার :
(i) আগুনে পোড়া বা ঝলসা্নো স্থানে পাতার মজ্জার প্রলেপ দিলে জ্বালা পোড়া বন্ধ হয়।
(ii) পাতার শাঁস বল বর্ধক ও শুক্র বর্ধক । সকালে নিয়মিত কিছু পরিমান শাস খেলে শুক্রমেহ
রোগ ভালো হয়ে যায় ।
(iii) পাতার শাস দৃষ্টি শক্তিকে প্রখর করে।
(iv) পাতার শাঁস মধুর সাথে মিশিয়ে নিয়মিত খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
(v) মজ্জা পিষে ত্বকে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর গোসল করলে ত্বকের লাবন্যতা বৃদ্ধি পায়।
(vi) মাথা গরম থাকলে মাথার তালুতে পাতার মজ্জার প্রলেপ দিলে মাথা ঠান্ডা থাকে। এ ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। অন্যথায় ঠান্ডা লেগে যেতে পারে।
7. Andrographis
paniculata. সাধারণ নাম : কালমেঘ, কল্পনাথ। গোত্রের নাম ঃAcanthaceae ব্যবহৃত অংশ : সমগ্র গাছ, বিশেষ পাতা
ব্যবহার : (i) বাচ্চাদের লিভারের অসুখে পাতার রস খাওয়ানো হয়। বাচ্চাদের কিছু পরিমান (১ তোলা) রস নিয়মিত সেবন করালে লিভারের দোষ আরাগ্যো হয়।
(ii) পাতার রস (৪-৫ মিলি) সম পরিমান কাঁচা হলুদের রসের সাথে মিশিয়ে সামান্য চিনি দিয়ে
নিয়মিত সকাল বিকাল সেবন করলে কৃমির উপদ্রব থেকে আরাগ্যো লাভ করা যায়।
(iii) কাঁচাপাতা হালকাভাবে পিষে সকাল বিকাল সেবন করলে ঘা-পাঁচড়ায় বিশেষ উপকার পাওয়া যায়। আক্রান্ত স্থানে পাতা সিদ্ধ পানি দ্বারা ধৌত করলেও উপকার পাওয়া যায়।
(iv) এছাড়া পাতার রস ক্ষুধাহীনতা, অম্ল, অজীর্ণ, আমাশয় এবং সাধারণ দৌর্বল্যে ব্যবহার করা হয়।
8. Azadirachta indica সাধারণ নাম - নিম । গোত্রের নাম : Meliaceae
ব্যবহৃত অংশ : ফুল, পাতা, ছাল, ফল বা বীজ, তৈল।
ব্যবহার ঃ (i) দাঁত মাজার জন্য নিমের ডাল ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হয়। নিয়মিত নিমের ডাল দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁতের কোনো সমস্যা দেখা দেয়না
(ii) চর্মরোগের ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে নিমপাতা ব্যবহৃত হয়। পানিতে নিমপাতা সেদ্ধ করে গোসল করলে চর্মরোগের
আরাগ্যো হয়।
(ii) নিমের আঠা সর্দি, কাশিতে আরামদায়ক, নিমপাতা মধুসহ সেবন করলে কৃমি নাশ হয়।
(iv) নিমের ফুল বেটে মাথায় মাখলে উকুন মারা যায়।
(v) ২৫/৩০ ফোঁটা নিমপাতার রস সামান্য পরিমান মধুর সাথে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে সেবন করলে জণ্ডিস রোগে উপশম হয়।
(vi) এছাড়া কথিত আছে যে, নিমের হাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ভাল ।
9. Boerhaavia repens
সাধারণ নাম গন্ধপূনা, পুননর্ভা
, পুনাইরশাক
গোত্রের নাম ঃ Nyctaginaceae
ব্যবহৃত অংশ > সমগ্র উদ্ভিদ
ব্যবহার :
(1) শোথ রোগে গ্রাম বাংলায়
ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত
হয় । কারো গায়ে পানি দেখা দিলেই তাকে পাতার শাক রান্না করে ভাতের সাথে খেতে দেওয়া হয় । অনেক সময় রস করেও খাওয়ানো হয় ।
(ii) মূত্রথলীতে পাথর হলে ১০/১২ গ্রাম পুর্ণনভা
চূর্ণ ৫-৭ কাপ পানিতে
সিদ্ধ করে ঘন হয়ে গেলে ঐ কাপ সকাল বিকাল দুবেলা খেলে পাথর প্রসাবের সাথে বের হয়ে যায় ।
(iii) অনিদ্রার ক্ষেত্র ১৫/২০ গ্রাম পুর্ণনভা চূর্ণ ৫ কাপ পানিতে জ্বাল দিয়ে ১ কাপ থাকতে নামাতে হবে। এটি সকাল বিকাল অর্ধেক করে খেলে অনিদ্রা কেটে গিয়ে সুনিদ্রা হবে ।
(iv) পাতার রস জন্ডিস ও লিভারের অসুখের ক্ষেত্রে
প্রয়োগ করা হয়।
10. Cassia alata.
সাধারণ নাম দাদ মদন, দাদলাডি কৃমিগাছ।
গোত্রের নাম : Caesalpin
CaLegamiliaceae
ব্যবহৃত অংশ : পাতা
ব্যবহার>
(i) দাদরোগে ব্যবহার করা হয় । আক্রান্ত
স্থানটি পরিষ্কার
করে সেখানে
পাতা বেটে লাগালে রোগ নিরাময়
হয় ।
(ii) রোগীকে সকালে পাতার রস অথবা পাতা শাক করে খাওয়ালে কৃমি ধ্বংস হয় । কাপ্তাই অঞ্চলে দাদ মর্দন গাছ কৃমি গাছ হিসেবে ব্যাপক
পরিচিত ।
11. Centella asiatica
সাধারণ নাম : থানকুনি, গাছ ফুলকুড়ি, টাকা মানিকের গাছ, ব্ৰহ্ম কুটি
গোত্রের নাম : Apiaceae
বৰহত অংশ : পাতা
ব্যবহার
i) বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র আমাশয় রোগ নিরাময়ের জন্য থানকুনি পাতার রস খাওয়ানো হয় ।
পুরানো আমাশয় রোগের জন্য এটা বেশ কার্যকর। (২-০) গ্রাম রস প্রত্যহ ২-বার পরিমানমত চিনিসহ সেবন করলে ভাল ফল পাওয়া যায় ৷
(ii) অপুষ্টির কারণে মাথার চুল উঠে গেলে পাতার রস ৫/৬ চামুচ দুধের সাথে মিশিয়ে নিয়মিত খেলে চুল পড়া বন্ধ হয়। সাথে সাথে এক লাবন্য ও প্রশান্তি ফিরে আসবে
(iii) স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি করতে ২/৩ তোলা রস সামান্য দুধ এবং ১ চামচ মধুসহ নিয়মিত কিছুদিন সেবন করা যেতে পারে।
(iv) বিভিন্ন চর্মরোগে, দংশনজনিত ক্ষতে পাতার রস ২/৩ চামচ পরিমান দিনে ২ বার মধুসহ সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়।
(v) তোতলামি নিরাময়ের জন্য প্রত্যহ সকালে ২/৩ টি থানকুনি পাতা সেবন করা যেতে পারে।
12. Datura metel.
সাধারণ নাম -ধুতুরা, ঘটাকা পুষ্প ।
গোত্রের নাম : Solanaceae
ব্যবহৃত অংশ : পাতা, মূল, ফল এবং বীজ,
ব্যবহার :
(i) পাতার রস মাথায় মাখলে উকুন মারা যায়।
(ii) কানে পাতার রস দিলে কান ব্যাথা
দুর হয়
(iii) পাঁচ ফোটা মাত্রায় পাতার রস সেবনে কৃমি দুর হয় ।
(iv) ধুতুরা পাতার রসের সাথে সরিষার তেল মিশিয়ে গরম করে মালিশ করলে বাতের ব্যাথা কমে যায়।
(v) পাতার রসের সাথে সামান্য ঘি মিশিয়ে ফোয় দিলে ফোড়া শীর্ষ পেকে যায় এবং ফেটে যায়।।
(vi) স্ত্রীলোকদের স্তনের ব্যাথায় পাতার রস ও সামান্য হলুদ গুঁড়ো মিশিয়ে লাগালে ব্যাথা ও ফুলা ভালো হয় ।
(vii) হাড়ের জোড়ায়; বাতজনিত স্ফীতি, ব্যাথাযুক্ত টিউমার ; স্নায়ুশূল, পায়ের নখের ব্যাথা বা শরীরের ।
কোথাও ব্যাথা যুক্ত স্ফীত প্রভৃতিতে ধুতুরা পাতা প্লাস্টার করলে বা পাতা গরম করে জড়িয়ে দিলে অত্যন্ত উপকার পাওয়া যায় ।
(viii) ধুতুরার বীজ স্রাব নিবারক, ব্যাথা নিবারক উত্তেজক, পেটের গ্যাস নিবারক এবং মত্ততা কারক ;
13. Terminalia arjuna
সাধারণ নাম : অর্জুন ।
গোত্রের নাম :
Combretaceae
ব্যবহৃত অংশ : প্রধানত ছাল, কোন কোন ক্ষেত্রে পাতা ও ফল
ব্যবহার
(i) হৃদরাগে অর্জুনের ছাল ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় । সাধারণত হৃদপিন্ডের শক্তি বৃদ্ধি ও সাধারণ দূর্বলতায় ছালের রস সামান্য চিনি ও গরুর দুধসহ প্রত্যহ এক গ্লাস সেবন করা যেতে পারে ।
(ii) একভাগ অর্জুন ছাল ১০ ভাগ পানিতে জ্বাল দিয়ে যে ক্বাথ পাওয়া যায় তার ১.৫ আউন্স মাত্রায় সেবন করলে রক্ত অর্শ, উদরাময় ও রক্ত আমাশয়ে উপকার পাওয়া যায়
(iii) কোন স্থানে হাড় ভেঙ্গে গেলে সম পরিমাণ অর্জুন ছাল ও রসুন বেটে উক্ত স্থানে প্রলেপ
দিলে হাড় জোড়া লাগে, অর্জুন ছাল চূর্ণ দুধের সাথে খেলে আঘাতজনিত ব্যাথা নিরাময় হয়
14. Gloriosa superba.
সধারণ নাম ঃ উলট চন্ডাল, অগ্নিশিখা
গোত্রের নাম : Liliaceae ;
ব্যবহৃত অংশ : লতা, মূল,
(i) প্রসবের পর ফুল পড়তে দেরি হলে উলট চন্ডালের মূল পিষ্ট করে প্রসুতির হাত ও পদতলে ঘষলে উপকার পাওয়া যায় ।
(ii) পাতার রস ও সম পরিমান নারিকেল তেল মাথায় মাখলে উকুন মারা যায়
(iii) মূল ও গোল মরিচ (৩ : ১) বেটে সামান্য গরম করে ব্যাথাযুক্ত স্থানে প্রলেপ দিলে বাত সহ অন্যান্য ব্যাথা নিরাময় হয়।
(iv) পাকস্থলীর গন্ডগোলে, ঋতুস্রাবের অনিয়মে মূল সেবনে উপকার পাওয়া যায় ।
15 Holarrhena antidysentrica.
সাধারণ নাম >> কুড়চি, ইন্দ্রযব, গিরিমল্লিকা
গোত্রের নাম : Apocynaceae
ব্যবহৃত অংশ : ছাল, বীজ
ব্যবহার
(i) রক্ত আমাশয়ে এটি অব্যর্থ ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর জন্য ছালের রস প্রত্যহ ২ বার খেতে দেওয়া হয় ।
দেওয়া হয়। আবার ১৫-২০ গ্রাম ছাল আধা চূর্ণ করে পানিতে জ্বাল করে ছেকে নিয়ে ঠান্ডা করে নিয়মিত প্রত্যহ ২/৪ বার খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়।
(ii) ডায়রিয়ায় ৫-১০ gm ছাল ২/৩ কাপ পানিতে জ্বাল করে আধা কাপ হলে ছেকে প্রত্যহ ২/৩ বার খেলে ডায়রিয়া ভাল হয়
(iii) বীজচূর্ণ (১/২ gm) মধুর সাথে মিশিয়ে প্রত্যহ ২ বার এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যায় ।
16. Oeimum sanctum.
সাধারণ নাম | ঃ তুলসী ; গোত্রের নাম _Lamiaceae ব্যবহৃত অংশঃ পাতা, শিকড়, বীজ
ব্যবহার
(i)সর্দি কাশিতে তুলসী পাতার রস আমাদের দেশের সর্বত্র ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। পাতায়। সাথে সামান্য পরিমান আদার রস ও মধুসহ সেবন করলে উপকার পাওয়া যায় । হাঁপানী রোগেও আরাম পাওয়া যায় ।
(ii) পাতার সাথে সমপরিমাণ দূর্বাঘাসের ডগা ভাল ভাবে পিয়ে আক্রান্ত স্থানে ৪/৫ দিন লাগছে ঘামাচি ও চুলকানিতে উপকার পাওয়া যায় ।
(iii) (২/৪) চা চামচ পরিমান পাতার রস প্রতিদিন ৩-৪ বার খেলে দ্রুত হাম ও বসন্তের হাত থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
(iv) পাতার রস সামান্য গরম করে কানে প্রয়োগে করলে কানের ব্যাথা উপশম হয় ।
(v) পাতা ও শিকড়ের ক্বাথ ম্যালেরিয়া জ্বরে উপকারী। ম্যালেরিয়া প্রতিরোধের জন্য অনেকে নিয়মিত
সকালে গোঁল মরিচের সাথে তুলসী পাতার রস খায়
(vi) তুলসী পাতার রসের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে সেবন করলে ক্রিমি রোগের হাত থেকে পরিত্রান
পাওয়া যায়।
(vii) ভীমরুল, বিছা, প্রভৃতি বিষাক্ত কীট পতঙ্গ দংশন করলে আক্রান্ত স্থানে তুলসী পাতার রস গরম করে লাগালে জ্বালা যন্ত্রনা কমে যায় ।
17. Rauwolfia
serpentina.
সাধারণ নাম : সর্পগন্ধা, ছোটচাদ
গোত্রের নাম : Apocynaceae
ব্যবহৃত অংশ : মূল ।
ব্যবহার :
(i) মানসিক রোগীদের চিকিৎসায় সর্পগন্ধার জুড়ি নেই । মূল (২০০-৩০০ mg) প্রতিদিন ১-২ বার দুধ ও চিনিসহ সেবন করলে ভাল ঘুম হয় এবং মানসিক রোগ থেকে আরাগ্যো লাভ হয় ।
(ii) উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য সর্পগন্ধার ব্যবহার বর্তমানে বেশ প্রচলিত। ১০০-২০০ মি গ্রাম মূল চুর্ণ প্রতিদিন সকালে পানিসহ সেবন করলে রক্তচাপ কমে আসে ।
(iii) ছোট বাচ্চারা অনেক সময় ঘুমাতে চায় না, কান্নাকাটি করে । এ রকম অবস্থায় মূল ভালভাবে ধুয়ে বাচ্চার মুখে দিলে ধীরে ধীরে সে ঘুমিয়ে পড়বে ।
18. Tinospora Cordifolia.
সাধারণ নাম : গুলঞ্চ, গুরচিনি, ঘামাচিলতা ।
গোত্রের নাম ; Menispermaceae
ব্যবহৃত অংশঃ পাতা ও লতা।
ব্যবহার :
(i)সকল প্রকার চর্মরোগে গুলঞ্চ ব্যবহার করা হয়। কাঁচা কান্ড (১০/১২ mg) পিসে পানিতে ভিজিয়ে বেখে কিছুক্ষণ পর ভালভাবে কচলিয়ে ছেকে নিতে হয় । এভাবে প্রাপ্ত পানিটুকু প্রতিদিন ২/৩ বার সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়
(ii) কান্ডের রস অত্যন্ত তিক্ত স্বাদযুক্ত । এ কারণে প্রতিদিন নিয়মিত ২/৩ চা চামচ পরিমাণ দিনে ২/৩ বার সেবন করলে ক্রিমির বিনাশ ঘটে ।
(iii) পাতা অথবা কান্ড থেতো করে পানিতে কয়েক ঘন্টা ভিজিয়ে রাখার পর ভালভাবে কচলিয়ে ছেকে যে পানি পাওয়া যায় তা প্রত্যহ ২/৩ বার সেবন করলে পুরাতন জ্বর উপশম হয়
19. Vitex negundo.
সাধারণ নাম > নিসিন্দা
গোত্রের নাম > Verbenaceae
ব্যবহৃত অংশঃ পাতা ও বীজ
ব্যবহার :
i) বাতের ব্যথায় নিসিন্দা বেশ কার্যকরী। ৫gm পাতাচুর্ণ সামান্য পরিমাণ লবঙ্গ চূর্ণ এবং ২/৩ চা চামচ মধু মিশিয়ে দৈনিক সকাল সন্ধায় সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়। এছাড়া পাতা পানিতে
জাল দিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে শরীরের ব্যথা আরোগ্য হয় ।
(ii) পাতার রস মধু অথবা চিনির সাথে মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেলে কৃমির বিনাশ ঘটে ।
(iii) গোল মরিচের সাথে নিসিন্দা পাতার রস মিশিয়ে প্রত্যহ ২/৩ বার সেবন করলে সর্দিজ্বর ও মাথাব্যথা থেকে আরাম পাওয়া যায় ।
20. Withania somnifera.
সাধারণ নাম : অশ্বগন্ধা ।
গোত্রের নাম : Solanaceae
ব্যবহৃত অংশ : মূল
ব্যবহার ঃ
(i) মূল ভালভাবে চূর্ণ করে ৩/৪ gm নিয়ে ১ কাপ গরম দুধের সাথে মিশিয়ে দিনে ২ বার সেবন করলে শারীরিক দূর্বলতা দূর হয়
(ii) মূলের রস সকাল সন্ধ্যা নিয়মিত কিছুদিন খেলে যৌন দূর্বলতা দুর হয় । মূলের রস খাওয়ার পর ১ কাপ দুধ খাওয়া ভাল
(iii) অশ্বগন্ধা মূল চূর্ণ (৩/৪ gm) প্রয়োজনমত চিনি ও ঘি মিশিয়ে রাত্রে ঘুমানোর আগে সেবন করলে অনিদ্রা দূর হয় ।
(iv) অশ্বগন্ধা মূল নারিকেল তেলসহ বেটে মুখের ভেতর লাগালে মুখের ঘা সেরে যায়
Post a Comment
Please do not link comment any spam or drive spams content