করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ‘ওমিক্রন’ কীভাবে তার নাম পেল

  >> নিউ ইয়র্ক টাইমস 

Published: 28 Nov 2021 03:56 PM BdST Updated: 29 Nov 2021 10:53 AM BdS

দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত করোনাভাইরাসের এ ভ্যারিয়েন্টটির নাম দেওয়া হয়েছে গ্রিক বর্ণমালার পঞ্চদশ অক্ষরের নামে। এই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে বিশ্বজুড়ে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) চলতি বছরের মে মাসে নামকরণের এই পদ্ধতি ঘোষণা করে। সংস্থাটি ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে গণযোগাযোগ সহজ হয়েছে ও বিভ্রান্তি কমেছে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ভারতে করোনাভাইরাসের যে ভ্যারিয়েন্টটি প্রথম শনাক্ত হয়স সেই বি.১.৬১৭.২ ধরনটি পেয়েছে গ্রিক বর্ণমালার চতুর্থ বর্ণ ডেল্টার নামে।

ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, এখন সাতটি ‘মনোযোগ সৃষ্টিকারী ভ্যারিয়েন্ট’ বা ‘উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট’ আছে, এর প্রত্যেকটির জন্যই একটি গ্রিক বর্ণ বরাদ্দ করা হয়েছে।

গ্রিক বর্ণ দিয়ে চিহ্নিত আরও কয়েকটি ভ্যারিয়েন্ট থাকলেও সেগুলো ‘উদ্বেগজনক ধরনের’ স্তরে পৌঁছেনি, তাই সেগুলো নিয়ে আলোচনাও হয়েছে কম। আর ডব্লিউইএচও ওমিক্রণের ঠিক আগে ‘নিউ’ ও ‘শি’ বর্ণ দুটি এড়িয়ে গেছে। 

শনিবার ডব্লিউএইচওর মুখপাত্র তারিক জাহারেভিক বলেন, “‘নিউ’ খুব সহজে ইংরেজি শব্দ ‘নিউ’ এর সঙ্গে বিভ্রান্তি তৈরি করবে আর ‘শি’ ব্যবহার করা হয়নি কারণ এটি প্রচলিত নামের শেষাংশ।”

তিনি জানান, সংস্থাটি রোগের নামকরণের ক্ষেত্রে ‘কোনো সংস্কৃতিক, সামাজিক, জাতীয়, আঞ্চলিক, পেশাদার বা জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যেতে পারে’ এমন নাম এড়িয়ে যাওয়াকে শ্রেয় মনে করে।

ডব্লিউএইচও বলেছে, ভ্যারিয়েন্টগুলোর বৈজ্ঞানিক নামের চেয়ে এই নামকরণ পদ্ধতি সহজ ও বোধগম্য, বৈজ্ঞানিক নামগুলো ‘বলা ও মনে রাখা কঠিন হতে পারে এবং প্রতিবেদনগুলোতে প্রায়ই ভুলভাবে আসে।

তাদের এ বক্তব্যের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছেন কিছু গবেষক।

কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাসবিদ ডা. অ্যাঙ্গেলা রাসমুসেন জানান, চলতি বছর গ্রিক নামকরণ পদ্ধতি ঘোষণার আগে তিনি সাংবাদিকদের অনেক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আর বি.১.১.৭ এবং বি.১.৩৫১ ভ্যারিয়েন্টের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তিতে বারবার হোঁচট খেয়েছেন।

“কথা বলার সময় ধারবাহিকভাবে এসব নাম ব্যবহার করা সত্যি কষ্টকর। শেষ পর্যন্ত মানুষ এগুলোকে যুক্তরাজ্য ভ্যারিয়েন্ট বা দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্যারিয়েন্ট বলা শুরু করে,” বলেন তিনি।

এই দুটি ভ্যারিয়েন্ট এখন আলফা ও বেটা নামে পরিচিত। প্রথমটির আবির্ভাব যুক্তরাজ্যে আর পরেরটির দক্ষিণ আফ্রিকায়। 

রাসমুসেন জানান, ডব্লিউএইচওর গ্রিক নামকরণ পদ্ধতিতে যাওয়ার এটি আরেকটি বড় কারণ, নামকরণের পুরনো রীতিটি ভাইরাসটি যেখানে আবির্ভূত হয়েছে সেখানকার মানুষের জন্য অন্যায্য ছিল।

ডব্লিউএইচও জাতীয় কর্তৃপক্ষ ও গণমাধ্যমগুলোকে নতুন নাম ব্যবহার করতে উৎসাহিত করেছে। তবে তারা বৈজ্ঞানিক নামগুলো পাল্টে দেয়নি, যা বিজ্ঞানীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করে এবং গবেষণাকালে ব্যবহৃত হয়।  



Post a Comment

Please do not link comment any spam or drive spams content

Previous Post Next Post