সফলতা অর্জন করতে হলে প্রথমে নিজেকে জানতে হবে
তুমি তোমায় নিজের মত কানে বাঁচো'- পরিকল্পনানুযায়। আমরা এখন আবার একই জায়গায় ফিরে আসছি। তুমি এবার নিশ্চয়ই ভালভাবে বুঝে গেছে যে, কিভাবে তুমি নিজের মত করে তুমি বাঁচতে পারবে। তোমার শক্তিটা জাগিয়ে তোলার জন্য তোমার অন্তদৃষ্টিটা কতখানি কাজ করে, তাও তুমি বুঝতে পেরেছে।
তোমার এখন ভাল জামাকাপড় আছে। মোটামুটি স্বাচ্ছন্দ্যও আছে। এখন তুমি যা কিছু কিনতে। ও পরবে সবই তোমার রুচি অনুযায়ী পরবে।
তুমি এখন যদি কোন রেস্তোরাঁয় যাও দেখৰে-বেয়ারারা তোমার কাছে বিভিন্ন ধরনের খাবার। নিয়ে আসছে। কারণ তারা বুঝে গেছে যে তমি ধনী। হোটেলের মালিক এবং ম্যানেজারও তোমার। প্রতি একই ধারণা পোষণ করবে। এখন ওরা যদি আরো কিছু খাবার নিয়ে তোমার কাছে আসতে। চায়, তাহলে তুমি মৃদু হেসে মাথা নাড়বে।
যে ব্যক্তির বিশেষ দক্ষতা বা যোগ্যতা আছে তাকে তুমি উচ্ছসিত প্রশংসা করবে এবং সব সময়। তার মতো হওয়ার জন্য অনুশীলন করবে। কিন্তু কখনোই অনুকরণ করবে না। আমার যৌবনকালে । আমি আর্থার ব্রিজবেনের লেখা নকল করে নিজেকে স্মার্ট মনে করছিলাম, তখন আমার এক বন্ধু। আমাকে বুঝিয়ে দিল যে, এর দ্বারা কোনদিনই আমার নিজস্ব স্টাইল গড়ে উঠবে না। সেই থেকে। আমি ব্রিজবেনকে একপাশে সরিয়ে রেখেছি এবং চিন্তা করেছি—আমার লেখা তার মত নয়, নেপোলিয়ন হিলের মতই পুরো।
শিশুরা সব সময় অন্যকে অনুসরণ করার চেষ্টা করে। সেটার একটা মানে আছে। কিন্তু আমি দেখেছি যে, অনেক বড় হয়ে যাওয়া ছেলেমেয়েরাও প্রতিবেশীদের অন্ধ অনুকরণ করার চেষ্টা করে এবং ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত তাদের দুর্গতির সীমা থাকে না। যতক্ষণ না পর্যন্ত তুমি নিজে নিজের মত হতে চাইছ, ততক্ষণ তুমি নিজেকে জানতে পারছ না।
কাউকে তোমাকে ঘুষ দিতে উৎসাহিত করো না।
যাতে তোমার নিজস্ব সত্তা নষ্ট হয়। তুমি টাকা অর্জন করতে চলেছ, তখন ঠিক সেই মুহূর্ত থেকেই তুমি দেখতে পাবে যে বহু লোক তোমাকে দেখছে। এটা খুব ভাল জিনিস। কিন্তু এই সময়টাতেই বহু লোক নিজেদের হারিয়ে ফেলে, তখন তাদের টাকার প্রতি এত মোহ জেগে ওঠে যে, তারা টাকার নেশায় তখন নিজেরাই নিজেদের থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। তখন তাদের কাছে ঘুষের কোন সুযোগ এলে তৎক্ষণাৎ তা লুফে নেয়। এতে তাদের মনের শান্তিও বিঘ্নিত হয়। আর তারা অন্যের হাতের পুতুল হয়ে পড়ে। | মনের শান্তি বজায় রাখার জন্য কি কি বিষয় কার্যকরী হতে পারে সেই ব্যাপারে আমি একটা তালিকা তৈরি করেছি।
তুমি খুব মন দিয়ে এগুলো দেখে যাও, দেখবে—তুমিও মনের শান্তি খুঁজে পাবে। বিষয় গুলো হল :
১. যে মানুষ সুসময় এবং দুঃসময়ে নিজের মাথা ঠান্ডা রেখে কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারে অর্থাৎ সবর পরিস্থিতিতেই নিজের মাথা ঠাণ্ডা ও স্থির রেখে সুশৃখল ভাবে কাজ করতে পারে—সেই ব্যক্তি শান্তি পায়।
২, যে মানুষ সব সময়ই তার আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।
৩. যে কাজই তাকে করতে হোক না কেন, সে সব কাজেই আত্মবিশ্বাসী।
৪, সে কখনোই এত সম্পন্ন করার জন্য অমনোযোগী হয়ে কোন কাজ করে না।
৫, সে কাজে সফল হলেও নিজের কাজকে সব সময় নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।
৬, সে কখনো কোন বিষয় বা প্রকার সম্পর্কে নালিকা ও তত করে না।
৭, সে কখনো অপরকে দোষারোপ করে না।
৮. বিনা প্রয়োজনে সে নিজের সম্পর্কে কিছু বলেনা । অহঙ্কার কখনো করেনা ।
৯. সে কখনো কাউকে বা কোন বস্তুকে ভয় করেনা ।
১০. সে সমস্ত সমস্যা গুলো কে শান্ত অবিচল নিজের হাতে সমাধান করতে পারে।
১১. কোন মত প্রকাশ করার আগে সে নিশ্চিত হয়ে নেয় যে , সে সেটা জানে কিনা। আর "আমি জানিনা " এই কথাটা বলতে সে কখনো লজ্জা বোধ করেনা ।
১২. তার খাদ্য স্বাভাবিক ধরনের । সে সব সময়ই অতিরিক্ত খাদ্য খাওয়াটো বর্জন করে।
১৩. সবজান্তা ভাব সে কখনাে দেখার না। যদি সে কোন বিষয় না জানে সে সেটা বলে না। সে নিজেকে বিশেষ বা এক্সপার্ট হিসাবে দাবি করে না।
১৪. সে একজন দায়িত্বশীল নাগরিক যে রাজনীতির প্রভাবে প্রভাবান্বিত হয়ে কোন কাজ করে না। সে দেশের | ব্যাপারই হোক বা অর্থের ব্যাপালেই হােক।
১৫. সে কাউকে শ্ত্রু করার মত কাজ বা কথা কোনটাই বলে না ।
১৬. সে নিজের মনে এবং সমস্ত মানবতা নিয়ে শাস্তিতে থাকে।
১৭. সে কখনােই দুঃখী বা দারিদ্র হতে পারে না, কারণ যা কিছুই আসুক না কেন সে আনন্দে থাকে।
১৮. তার পরিবাঘের সলেই তাকে ভালবাসে এবং তার পায়ের শব্দ শুনে শিহরিত হয়।
১৯. প্রতিদিনই সে যাতে সৃষ্টি কর্তার কাছ থেকে আশীবাদ পায় তার জন্য সে আতদিনই সৃষ্টিকর্তাকে কৃ্তজ্ঞতা জানায়। আর প্রাপ্ত আশির্বাদ সকলের সাথে ভাগ করে নেয় ।
২০ সে যখন কারোর সপকে কিছু বলে তখন চেষ্ট করে তার দোষ গুলিকে যথা সম্ভব উল্লেক না করার।
২১.অতীতের দিকে তাকিয়ে সে ভবিষ্যৎ গঠন করে। ইতিহাসটা সাজিয়ে নিয়ে সে নতুন করে জীবন গঠন । | এবং সে বুঝতে পারে সবকিছু পরিবর্তন হলেও জীবনের সত্তা বদলায় না।
২২. সে দৃঢ় আশাবাদী ও বলিষ্ঠ মনকে ধরে রাখে।
২৩.সে কোন বিষয়ে অভিযােগ করার ব্যাপারে দ্রুতগতি। কিন্তু ক্ষমা করার ব্যাপারে ধীরগতি।
২৪, যখন সততার বশবর্তী হয়ে কেউ কোন ভুল করে তখন সে তার ভাতা বাড়িয়ে দেয়।
২৫, সে ঝশের দায় থেকে নিজেকে সব সময় মুক্ত রাখে।
২৬, সব রকম সম্পদ অর্জন করার ফলে সে তা অপরের কল্যাণে ব্যবহার করতে পারে।
২৭, সে সব রকম প্রতিকুলতা ও পরাজয়কে বিজয় রূপান্তরিত করতে পারে।
২৮, সে সব রকম সমস্যা ও পরাজয়ের মুখােমুখি হতে পারে, কেননা সে জানে যে এগুলাে সবই অস্থায়ী।
২৯.সে কর্মী হিসাবে সব সময় নিজেকে রাখে।
৩০, তার সামনে যদি কোন বাধা আসে এবং সে যদি ওই বাধার মুখােমুখি হয় তাহলে তার থেকে সে নতুন | অভিজ্ঞতা লাভ করে লাভবান হতে পারে।
৩১, সে যা চায়, জীবনকে ঠিক সেভাবেই গড়ে তােলে।
৩২, তার মনের মধ্যে সাফল্যের ছবিগুলাে পরপর এমনভাবে ফুটে ওঠে—যে কথা নয়—তার জীবনে কাজই বড়
ও প্রধান বন্ধু হয়ে ওঠে। ওই কাজ দিয়েই সে তার দৃষ্টান্ত রাখতে চায়।
৩৩. জাতিধর্ম নির্বিশেষে বিভিন্ন ধরনের মানুষই তাকে পছন্দ করে।
৩৪, সে যা হতে পারে যখন সে তার মনের মধ্যে নিজের কর্তৃত পায় এবং সে তখন নিজেও বেঁচে থাকে ও অপরকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে।
৩৫. সে কখনাে ব্যবসা-সংক্রান্ত হতাশায় এবং আতঙ্কের দ্বারা বিভ্রান্ত হয় না।
৩৬. অপরের পরিপূর্ণ ও আন্তরিক সহযােগিতায় জয়লাভ করাটাই তার কাছে সহজ বলে মনে হয়
৩৮, লে সবরকম খাতলতাই হাসিমুখে জয় করতে পারে। বাস্তবিক পক্ষে সে হচ্ছে অপরাজেয়। কেননা তার। | এমন একটা শক্তি আছে যেটা অনেকের পক্ষেই অজানা। ৩৯, সে হতাশাকে কাটিয়ে উঠতে পারে। কেননা, সে জানে যে স্পষ্ট কোন কারণ ছাড়া কিছুই ঘটে না।
৪০. সে যথাসম্ভব সবরকম ভাল কাজ করে যায়, এবং পরিস্থিতি যখন তার প্রতিকুলে যায় তখন সে এরকম অনুভব করে না যে, এরকম কাজের জন্য তাকে কারুর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
এই আইটেমের মধ্যে কতকগুলাে তুমি তােমার জন্য বেছে নিলে। যদি তােমার মধ্যে । এই গুণগুলোর এক-তৃতীয়াংশও থেকে থাকে, তাহলে তুমি জানবে তােমার মনের উপর প্রভুত্ব করা। শক্তি তােমার জন্মেছে।
সুতরাং ভয় পেয়াে না। আত্মবিশ্বাসে পরিপূর্ণ হয়ে তুমি নিজের লক্ষ্যপথে এগিয়ে চল।।
To be successful, you must first know yourself
Post a Comment
Please do not link comment any spam or drive spams content