বাংলাদেশের যে কোন আদিবাসীদের ব্যবহৃত ঔষধি উদ্ভিদ সমুহ

চাকমা আদিবাসী কর্তৃক ব্যবহৃত ঔষধি উদ্ভিদ  Medicinal Plants Used by the chakma indigenous people

 ১। বাংলা নাম : অর্জুন ; চাকমাদের স্থানীয় নাম : কহু ।

 উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Terminalia arjana W & A

গোত্র : Combretaceae প্রাপ্তিস্থান।

প্রাপ্তিস্থান ঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ বাংলাদেশের সর্বত্র  

ব্যবহৃত অংশ : গাছের বাকল, পাতা এবং ফল।

 কার্যকারিতা ও ব্যবহার > তাজা পাতার রস কানের ব্যাথা দূর করে। গাছের আমাশয় ও জ্বরের প্রতিযেধক, হৃদরোগের  ও হৃদপিন্ডের বল কারক ঔষুধ । কাটা ছেঁড়া ও মূত্র রোগে উপকারী এবং মূত্র বৃদ্ধিকারক। ছালের গুড়া অধিক উত্তেজনায় আরামদায়ক এবং মৌমাছির হুল ফুটানোর ব্যাথ্যা দূর করে। ফল স্বাস্থ্যকর টনিক ।

২। বাংলা নাম : অরবরি, হরবরি, অলবরি;চাকমাদের স্থানীয় নাম : সরব্যেক গুলা

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Phyllanthus acidus Skiels

গোত্র : Euphorbiaceae  

প্রাপ্তিস্থান: বাংলাদেশের প্রায় প্রতি জেলায় লাগানো হয়েছে, তাছাড়া রাঙামাটি এ খাগড়াছড়িতে বহু প্রাকৃতিক উদ্ভিদ আছে ।

ব্যবহৃত অংশ : ফল, বীজ ও মূল

কার্যকারিতা ও ব্যবহার > ফল সংকোচক, রক্ত পরিষ্কারক,  ক্ষুধাবর্ধক, তৃষ্ণা নিবারক এস টনিক হিসাবে কাজ করে । এছাড়া অর্শ, ব্রংকাইটিশ, যকৃত ও মূত্রাশয়ের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় । মন ও বীজ রেচক এবং জোলাপ হিসাবে ব্যবহৃত হয় ।

৩। বাংলা নাম : অশোক; চাক্‌মাদের স্থানীয় নাম : মমা গাছ;

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Saraca asoca (Roxb) DC. (Saraca indica)

গোত্র : Caesalpiniaceae  

প্রাপ্তিস্থান : বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র বিশেষ করে কাপ্তাই, নানিয়াচর, জুরাছড়ি। (রাঙামাটি), মহালছড়ি, খবং পুরিয়া (খাগড়াছড়ি) প্রভৃতি অঞ্চলে অধিক জন্মে।

ব্যবহৃত অংশ : গাছের বাকল, বীজ এবং ফুল।

কার্যকারিতা ও ব্যবহার> ছাল গর্ভাশয়ের ব্যাথার টনিক, ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়া দূর করে, বন্ধ্যাত্ব দূর। করে। ইহা কৃমিনাশক ও অজীর্ণতা, শরীরের জ্বালাপোড়া, পিত্তাধিক্যজনিত রোগে, টিউমার, অর্শরোগে ও জরায়ুর রক্তক্ষরণ বন্ধ করে, ফুল পিযে পানির সাথে মিশিয়ে খেলে রক্ত আমাশয়, রক্ত পড়া, অর্শরোগ  এবং প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া রোগ দূর করে।  

বাংলায় নাম ঃ অশ্বগন্ধা (আঁইশকান্দা) চাকমাদের স্থানীয় নাম ঃ সামিদক।

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম ঃ Withania somnifera Dunal  গোত্র : Solanaceae

প্রাপ্তিস্থান ঃ বাংলাদেশের সর্বত্র এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের দিঘীনালা, মহালছড়ি খাগড়াছড়ি ।

ব্যবহৃত অংশ >  মূল, পাতা, ফল ও বীজ।

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : প্রশান্তিদায়ক টনিক, উত্তেজক ও যৌন উত্তেজক । এটি ঘা ও পাঁচড়ায় । ব্যবহৃত হয়। মূল উপযোজক, পরিবর্তক ও মূত্র বৃদ্ধিকারক । এছাড়া কফ, উদরী রোগ, হেচকি, শ্বেতী, ঋতুস্রাব ও বার্ধক্য জনিত জটিলতা ভাল করে। মূলের গুড়া সমপরিমান ঘি ও মধুর  সাথে মিশিয়ে খেলে। শক্তিহীনতা বা শুক্র সম্বন্ধীয় দৌর্বল্য দূর হয়। মূল জরের প্রতিষেধক ও ক্রিমিনাশক। তাজা ফল বমন নাশক এবং শুকনা ফল পেটের ব্যাথা দূর করে। মূল ও পাতা অজীর্ণতা দূর করে। ফল হাপানি ও পিত্তাধিক্যজনিত রোগ দূর করে।

৫। বাংলা নাম : অড়হর; চাকমাদের স্থানীয় নাম : দুমর সমি

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Cajanus cajan (L) Millsp

গোত্র : Papilionaceae

প্রাপ্তিস্থান : পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্বত্র সহ বাংলাদেশের সকল জেলা।

ব্যবহৃত অংশ। : পাতা ও বীজ কার্যকারিতা ও ব্যবহার : পাতার রস জন্ডিস ও মুখের ঘা ভাল করে। বীজ বাটা সর্প দংশন ও ফোলা প্রদাহে প্রলেপ দেয়া হয়। পাতা ও বীজ কাশি, ব্রংকাইটিস, বমি ও অর্শরােগে ব্যবহৃত হয়।

৬। বাংলা নাম  : আকন্দ ;চাকমাদের স্থানীয় নাম : আঙার, আংগার পাতা উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Calotropis giganted R. Br.

গোত্র : Asclepiadaceae; প্রাপ্তিস্থানঃও পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের সর্বত্র।  

ব্যবহৃত অংশ: মূল, মূলের বাকল, পাতা, গাছ ও ফলের রস।

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : শ্বেতী রোগে, ঘা, টিউমার, অর্শ, পিত্তের রোগে, যকৃত ও পেটের রোগে ব্যবহৃত হয় । এর রস ক্রিমিনাশক ও দান্ত পরিষ্কারক । মূলের বাকল ঘাম বৃদ্ধিকারক, পরিবর্তক ও রেচক, যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য খুব কার্যকর, থেমে থেমে জ্বর উঠার প্রতিযেধক । ফুল হজমকারক, পেটের ব্যাথার টনিক এবং টিউমারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

৭। বাংলা নামঃ আপাং;চামাদের স্থানীয় নাম : আপাং, উপলেংরা, উফৎলেংরা উদ্ভিদতাত্ত্বিক নামঃ Achyranthes aspera Linn

গোত্র : Amaran thaceae

প্রাপ্তিস্থানঃ পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সমগ্র, বাংলাদেশ।

ব্যবহৃত অংশঃ পাতা, বীজ ও মূল।

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : আপাং রেচক, বায়ুনাশক, মূত্র বৃদ্ধিকারক এবং ইহা তেচকউদরী রোগ, জরায়ু, অর্শরোগে ও প্রস্রাবের অসুখ দূর করে । পাতার রস পাকার কাল কুষ্ঠরোগে, কান ও চোখের সমস্যায় ব্যবহৃত হয় । মূল মুখের ঘা, ও দাতের ব্যাথায় ব্যবহৃত হয় ।  

৮। বাংলা নাম ও আমলা, আমলকী। চাকমাদের স্থানীয় নাম : আমলতি, হাদামলা ।

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নামঃ Phyllanthus emblica Linn

গোত্র.: Euphorbiaceae

প্রাপ্তিস্থানঃ পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ দেশের সর্বত্র।

ব্যবহৃত অংশ ও ফল, মূল, বাকল ও বীজ।

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের শক্তিবর্ধক, হজম কারক, বমি নিবারক , পিপাসা নিবারক । ইহা ভিটামিন-সি, ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন বি-২ এর অভাবজনিত রোগ সমুহ দূর করে । শুস্ক ফল রক্তস্রাব, উদরাময় ও আমাশয়ে উপকারী । মূল ও বাকল সংকোচক। বীজের কাত্থ বল কারক এবং পুরাতন রক্ত আমাশয় নাশক।

৯। বাংলা নাম : উলট চন্ডাল। চাকমাদের স্থানীয় নাম : বিশালানগুলি।

উদ্ভিদ তাত্ত্বিক নাম Gloriosa superba hinn

গোত্র: Liliaceae  

প্রাপ্তিস্থান: আলুটিলা, দিঘীনালা (খাগড়াছড়ি), ফারুয়া (রাঙামাটি) এবং বাংলাদেশের প্রায় জেলার সৌখিন লোকের ফুল বাগানে পাওয়া যায়

ব্যবহৃত অংশ : মূল, কন্দ ও পাতা। কার্যকারিতা ও ব্যবহার : ইহা ক্রিমি, শোথ ও ব্রণ নাশক। বিরেচক, বমন কারক ও বলকারক। হিসাবে ব্যবহৃত হয়। পাতার রস মাথার টাকের জন্য বেশ হিতকর। কন্দমূল পাকস্থলীর গন্ডগোল ও ঋতুস্রাবের অনিয়মে ও গনোরিয়ার জন্য উপকারী । মূল পিষ্ট প্রসবকারী মহিলার হাত ও পায়ের তলায় মালিশ করলে দ্রুত চুল পড়ে থাকে।

১০। বাংলা নাম : নাগেশ্বর;চাকমাদের স্থানীয় নাম : নাকশা।

Trenulfo ad : Mesua nagassarium (Burmf) kost (Mesua ferrea linn)

গোত্রঃClausiaceae

প্রাপ্তিস্থানঃ বাংলাদেশের সমতল ভূমির কতক জেলা ও রাঙামাটি সদর, কুতুবছড়ি, জুরাছড়ি; থানচি, আলীকদম, আজিজনগর

ব্যবহৃত অংশ  বাকল, পাতা, মুকুল, ফুল, ফল ও বীজ। কার্যকারিতা ও ব্যবহার : মূলের বাকল বাত জুর ও পায়ুপথের জ্বালা পোড়ায় উপকারী। পাতা রক্ত আমাশয় ও অর্শরােগে ব্যবহৃত হয়। ফল পেট ব্যাথা ও কফ বের  করতে ব্যবহৃত হয়। ইহা পাকস্থলীর জন্যও উপকারী। বীজতেল বাতজ্বরের ব্যাথা ও পাঁচড়ায় ব্যবহৃত হয়।

১১। বাংলা নাম : নিশিন্দা; চাকমাদের স্থানীয় নাম : গাউরবো

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Vitex negundo Linn

গোত্র Verbenaceae

প্রাপ্তিস্থান পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সর্বত্র।

ব্যবহৃত অংশ : মূল, পাতা, ফুল ও ফল।

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : পাতা বাতের ব্যাথা, প্রদাহ, মচকানো ব্যথায় ব্যবহৃত হয়। ফুল বমি ও অতিরিক্ত তৃষ্ণা সম্বলিত জ্বরে ব্যবহৃত হয়। ফলের নির্যাস অনিয়মিত ও স্বল্প ঋতুস্রাবে ব্যবহৃত হয় মূল জ্বর নিবারণ করে।

১২। বাংলা নাম : পুদিনা;চাকমাদের স্থানীয় নাম : বাওর হাদা।

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম। : Mentha viridis Linn (M. spicata Crantz)

গোত্র: Lamiaceae (Labiatae)

প্রাপ্তিস্থান: পার্বত্য চট্টগ্রামের বিলাইছড়ি, ফারুয়া, কাপ্তাই এবং বাংলাদেশের সর্বত্র।

ব্যবহৃত অংশঃ সম্পূর্ণ উদ্ভিদ

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : ইহা হজমকারক, বায়ু, নিঃসারক ও পাকস্থলীর ব্যাথা নিবারক। বমি ভাব ও অরুচিতে পাতার চাটনি-বেশ উপকারী। কাঁচা পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেয়ে পানি পান করলে প্রস্রাবের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং প্রস্রাবের রং স্বাভাবিক হয়। বাকলের শুকনো গুঁড়ো দন্তরোগে ভাল করে। এ ছাড়াও উহা পাকস্থলী ও যকৃতের শক্তিবর্ধক, ঋতুস্রাব পরিস্কারক ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।।

১৩। বাংলা নাম : রক্তজবা; চাকমাদের স্থানীয় নাম : উলফুল

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Hibiscus rosa sinensis Linn | গোত্র: Malvaceae

প্রাপ্তিস্থান: সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় চাষ করা হয় এবং বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়।

ব্যবহৃত অংশ: মূল, পাতা এবং ফুল

কার্যকারিতা ও ব্যবহারঃ  জবার মূল আরামদায়ক ও ব্যাথা নিবারক । তাজা মুলের রস গনোরিয়া ও গুঁড়া মুল অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ব্যবহৃত হয় । এটি রক্ত বমি  ও পেটের সমস্যা দূর করে । পাতা ও কান্ডের বাকল  গর্ভপাত ঘটায় ।  ফুল কোষ্ঠকাঠিন্য হাইপোগ্লোসমি, যৌন উত্তেজনা ও ইন্দ্র লুপ্তির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। শরীরে জ্বালাপোড়া, বহুমূত্র, ঋতুস্রাবের অনিয়ম ও অর্শরোগের জন্য উপকারি ।

পাতা ও ফুল ঘা সারাবার জন্য, চুলের বৃদ্ধি ও চুলের রং কালো করতে ব্যবহৃত হয়

 ১৪। বাংলা নাম >  বেল; চামাদের স্থানীয় নাম : বেলগুলু  

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নামঃ Aegle marmelos Corr

গোত্র: Rutaceae

প্রাপ্তিস্থানঃ পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের সর্বত্র।

ব্যবহৃত অংশ : ফল, মলের বাকল, পাতা এবং ফলের শাস  কার্যকারিতা ও ব্যবহার > সংকোচক, বানুনাশক, নষ্ট স্বাস্থ্য  ও শক্তি পুনরুদ্ধারকশবমিনাশক ও দাস্ত পরিস্কারক। এটি মলাশয় প্রদাহ, পেটের গুল বেদনা, আমাশয়, ডায়রিয়া, কষ্টের ঋতুস্রাব প্রভৃতি চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় । মূলের বাকল থেমে থেমে জ্বর আসা, স্নায়ুবিক রোগে বুকের ধড়ফড় ভাল করে । কাঁচা বা আধাপাকা ভূল কৃমিনাশক ও হজম কারক। গাছের অন্যান্য অংশ তৃষ্ণা, পেটের ব্যাথা, কোষ্ঠ কাঠিন্য, বমিভাব, রাত জ্বর ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়।

মারমা উপজাতি কর্তৃক ব্যবহৃত ঔষধি উদ্ভিদ। (Medicinal plants used by the marma Tribe)

১। বাংলা নাম : বেল; মারমাদের স্থানীয় নাম ও ওয়া-রাই-রোপান্ড।

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Aegle marmelos Corr.

গোত্র: Rutaceae

প্রাপ্তিস্থানঃপার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের সর্বত্র।

ব্যবহৃত অংশ: ফল, মুলের বাকল, পাতা এবং ফলের শাস। কার্যকারিতা ও ব্যবহার : সংকোচক, বায়নাশক, নষ্ট স্বাস্থ্য ও শক্তি পুনরুদ্ধারক, বমি নাশক ও দাও পরিস্কারক। এটি মলাশয় প্রদাহ, পেটের শুল বেদনা, আমাশয়, ডায়রিয়া, কষ্টের ঋতুস্রাব ও জ্বর। প্রভৃতি চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। মূলের বাকল থেমে থেমে জ্বর আসা, স্নায়বিক রোগে, উনাদি রোগ ও বুকের ধড়ফড় ভাল করে। কাঁচা বা আধাপাকা ফল কৃমিনাশক ও হজম কারক। গাছের অন্যান্য অংশ তৃষ্ণা, পেটের ব্যাথা, কোষ্ঠ কাঠিন্য বমিভাব, রাতে জ্বর ইত্যাদিতে ব্যবহৃত হয়।

২। বাংলা নাম। : রক্ত জবা; মার্মাদের স্থানীয় নাম : হিন্দুমা পাঙ্গী,

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম :Hibiscus rosa-sinensis Linn গোত্রঃ: Malvaceae

প্রাপ্তিস্থান: সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় চাষ করা হয় এবং বাংলাদেশের সর্বত্র পাওয়া যায়।

ব্যবহৃত অংশ : মূল, পাতা এবং ফুল

কার্যকারিতা ও ব্যবহার> জবার মূল আরামদায়ক ও ব্যাথা নিবারক। তাজা মূলের রস গনোরিয়া ও গুড়া মূল অতিরিক্ত  রক্ত ক্ষরণে ব্যবহৃত হয়। এটি রক্ত বমি ও পেটের সমস্যা দূর করে। পাতা ও কান্ডের বাকল গর্ভপাত ঘটায়। ফুল কোষ্ঠকাঠিন্য, হাইপোগ্লোমোমিক, যৌন উত্তেজনা ও ইন্দ্র লুপ্তির চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। শরীরে জ্বালাপোড়া, বহুমূত্র, ঋতুস্রাবের অনিয়ম ও অর্শরোগের জন্য উপকারী পাতা ও ফুল ঘা সারাবার জন্য ও চুলের বৃদ্ধি ও চুলের রং কালো করতে ব্যবহৃত হয়।

৩। বাংলা নাম : আকন্দ;মারমাদের স্থানীয় নাম : মারুফু

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Calotropis gigantea R. Br.

গোত্র: Asclepiadaceae

প্রাপ্তিস্থান > পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের সর্বত্র

ব্যবহৃত অংশ: মূল, মূলের, বাকল, পাতা, গাছ ও ফলের রস।

কার্যকারিতা ও ব্যবহার> শ্বেতী রোগ, ঘা, টিউমার, অর্শ, পিত্তের রোগ যকৃত ও পেটের রে ব্যবহৃত হয় । এর রস ক্রিমিনাশক ও দাস্ত পরিষ্কারক। মূলের বাকল ঘাম বৃদ্ধিকারক রেচক, যৌন শক্তি বৃদ্ধির জন্য খুব কার্যকর, থেমে থেমে জ্বর উঠার প্রতিষেধক। ফুল হজমকার,পেটের ব্যাথার টনিক এবং টিউমারের চিকিৎসায় বৃবহৃত হয় ।

৪। বাংলা নাম : আপাং; মামাদের স্থানীয় নাম : চাইকাক্ৰীলু।

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Achyranthes aspera Linn

গোত্রঃ Amaran thaceae

প্রাপ্তিস্থান: পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সমগ্র বাংলাদেশ।

ব্যবহৃত অংশ : পাতা, বীজ ও মূল।

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : আপাং রেচক, বায়ুনাশক, মূত্র বৃদ্ধিকারক। ইহা হেচকি হে উদরী রোগে, জরায়ু, অর্শরোগ ও প্রস্রাবের অসুখ দূর করে। পাতার রস পোকার কামড় কুষ্ঠরোগ, কান ও চোখের সমস্যায় ব্যবহৃত হয়। মূল মুখের ঘা ও দাঁতের ব্যাথায় ব্যবহৃত হয় ।

৫। বাংলা নামঃ কেশরাজ; মারমাদের স্থানীয় নাম : ক্ৰংমাই।

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Eclipta alba Hassk

গোত্র: Asteraceae (Compositae)

প্রাপ্তিস্থান: পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের সর্বত্র ।

ব্যবহৃত অংশঃ সম্পূর্ণ উদ্ভিদ।

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : ইহা লিভার ও পিত্তথলির অসুখে কার্যকরী টনিক। ইহা ক্রিমিনাশক ক বহিস্কারক এবং হাঁপানি নিবারক। এটি প্রদাহ, হার্নিয়া, চক্ষুরোঁগ, চর্মরোঁগ ও রক্ত শূন্যতা সারায় । এর নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুলপড়া বন্ধ হয় । কোন স্থান কেটে রক্ত পড়লে এর পাতা পিষ্ট করে প্রলেপ দিলে রক্ত পড়া বন্ধ হয় এবং দ্রুত ক্ষত আরোঁগ্য হয়

৬। বাংলা নাম গুলাঞ্চি, কাঠ গোলাপ ;মারমাদের স্থানীয় নাম : আংগারা

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Puneria Ibra Linn

গোত্র: Apocynaceae

প্রাপ্তিস্থানঃ  পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্বত্র এবং বাংলাদেশের সকল জেলা।

ব্যবহৃত অংশ : মূল, বাকল, পাতা, শাখা এবং ফুল। কার্যকারিতা ও ব্যবহার : মূল টনিক, মূত্র বৃদ্ধিকারক, ঘর্ম বৃদ্ধিকারক এবং দাস্ত পরিস্কারক। মলের।বাকল শক্তিশালী রেচক, চুলকানী, জ্বর ও যকৃত সংক্রান্ত রোগের প্রতিষেধ; পাতা জ্বরের প্রতিষেধক। গাছের বাকল ডায়রিয়া প্রতিযেধক। পাতার নির্যাস বা ফুল নারিকেল ও ঘি এর সাথে মিশিয়ে খাওয়ালে; জন্ম নিরোধক এর কাজ করে

৭।বাংলা নামঃ থানকুনি; মারমাদের স্থানীয় নাম : মাংখুরা।

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম: Centella asiatica (Linn) Urban

গোত্র: Apiaceae (Umbelliferae)

প্রাপ্তিস্থানঃপার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের সকল জেলা

ব্যবহৃত অংশঃ  সম্পূর্ণ গাছ

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : এটি স্নায়ুবৈকল্য প্রশমিত করে, সংকোচক, রক্ত পরিস্কারক ও মূত্র বর্ধক। এ ছাড়া চর্মরোগ, রক্ত শূন্যতা, বহুমূত্র, কফ ও উন্মাদতা ভাল করে। পাতা টনিক হিসাবে স্মরণশক্তি। ব্যবহৃত হয়। পাতা প্রচন্ড মাথা ব্যাথায় ব্যবহৃত হয়;

বদ্ধি করে। পাতার রস চোখের ছানী ও অন্যান্য চোখের রােগ, বাচ্চাদের জুর, আমাশয়, ও ডায়রিয়ায়

৮। বাংলা নামঃ দাদমর্দন। মারমাদের স্থানীয় নাম : পুইশিবাং

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Cassia alata Linn

গোত্র: Caesalpiniaceae

প্রাপ্তিস্থান: মহালছড়ি, দিঘীনালা, কাপ্তাই, রাঙামাটি সদর, থানচি, আলীকদম এবং বাংলাদেশের প্রায় সকল জেলা। ব্যবহৃত অংশঃ পাতা।

 কার্যকারিতা ও ব্যবহার : পাতার রস অত্যন্ত কার্যকরী বিরেচক। পাতা সিদ্ধ রস যৌন রোঁগ, হারপেস এর চিকিৎসায় এবং ব্রংকাইটিশে কাশি বহিস্কারক হিসাবে ফলপ্রসু। পাতা বাটা চর্মরোগ,বিশেষ করে দাদ এর চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকর

৯। বাংলা নাম : চামেলী ;মারমাদের স্থানীয় নাম : বিলাই লোকচারী

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Jasminum grandiflorum Linn

গোত্র : Oleaceae

প্রাপ্তিস্থানঃ থানচি, আলীকদম, নোয়াপাড়া সহ বাংলাদেশের সকল জেলা।   

ব্যবহৃত অংশঃ সম্পূর্ণ গাছ, মূল, পাতা এবং ফুল কার্যকারিতা ও ব্যবহার : ক্রিমিনাশক ও মূত্র বৃদ্ধি কারক। ফুল ও পাতা যৌন উত্তেজনাবদ্ধি এবং ঋতুস্রাবের অনিয়ম দূর করে। ফুল ও পাতার নির্যাস হাড় ভাঙ্গায় প্রলেপ দেয়া হয়। ফুল চর্মরোগ, মাথা। ব্যাথা ও চক্ষর দুর্বলতায় লাগালে ভাল  হয়। এলকোহলিক নির্যাস অথবা বায়বীয় অংশ রক্তের নিম্নচাপ ও ক্যান্সারের প্রতিষেধক। গাছটি পোড়া ঘায়ে ব্যবহার করা হয়।

১০। বাংলা নাম : চালমুগ্রা ;মারমাদের স্থানীয় নাম : গ্ৰাংবাং, বলগাছ।

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : HydnoCarpus kuzii Warb

গোত্রঃ Flacourtliaceae

প্রাপ্তিস্থান: খাগড়াছড়ি ।।

ব্যবহৃত অংশ: বীজ ও বাকল

কার্যকারিতা ও ব্যবহার: ও কুষ্ঠ রোগের চিকিৎসায় এর তেল অত্যন্ত কার্যকর। এ ছাড়াও বিভিন্ন চর্মরোগে ফলপ্রসু ।বাকল জ্বর নিবারক। চালমুদ্রা চূর্ণ এক বা আধা গ্রাম মাত্রায় চা বিকালে গরম পানিসহ খেলে মধু মেহ ভাল হয়। চামুগ্রার তেল পাচ/সাত ফোটা ঠান্ডা মিশিয়ে খেলে পেটের বায়ুর উপশম হয়। দশ ফোটা চালুমূগ্রার তেল বাতাসার সাথে প্রত্যহ খেলে সারা শরীরের শির শির করা, মাঝে মাঝে টান টান ভাব বা খিল ধরা ভাল হয় ।

১২। বাংলা নাম : সর্পগন্ধা ;মারমাদের স্থানীয় নাম :ভূমারাজা

উদ্ভিদতাত্তিক নাম : Rauolfia serpentina  (Linn) Benth.

গোত্র: Apocynaceae

প্রাপ্তিস্থান: কুতুবছড়ি, জুরাছড়ি, বাঘাইছড়ি, মহালছড়ি, দিঘীনালা এবং বাংলাদেশের। প্রায় সকল জেলা।

ব্যবহৃত অংশ : মূল। কার্যকারিতা ও ব্যবহার : এটি উত্তেজনা নাশক, শান্তকারক, শক্তি বর্ধক ও ক্রিমিনাশক। মূলের রস। দ্রিাকারক ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রক। কালাজ্বর নিরাময়ে ঈশ্বর মূলের শিকড়ের সাথে সর্প গন্ধার। শিকড়ের ব্যবহার উপকারী। পাতার রস চোখের ঝাপসা দেখার সমস্যা দূর করে।

১৩। বাংলা নাম ও সাজনা, সজিনা। ; মারমাদের স্থানীয় নাম  গাজেলী

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Moringa oleifera Lam

গোত্র: Moringaceae

প্রাপ্তিস্থান: পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের সর্বত্র

ব্যবহৃত অংশ : মূল, ফুল, ফল ও বীজ

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : এটি ক্ষুধা বৃদ্ধি করে, হজমে সহায়তা করে, হৃদপিন্ডের জন্য ও চক্ষুর সমস্যায় উপকারী বাকল গর্ভনিরোধক; ফুল লিভারের ব্যাথা ও প্যারালাইসিস দূর করে এবং পিওরস ও যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধি করে। বীজের তেল বাত জুরে লাগালে ভাল ফল পাওয়া যায়। মূলের বাকল দিয়ে সেক দিলে খিচুনী দূর হয়।

১৪। বাংলা নামঃ নাগেশ্বর ;মারমাদের স্থানীয় নাম : বেইন গোবাঙ

উদ্ভিদতাত্তিক নাম : Mesua nagassarium (Burmf) kost (Mesua ferrea Linn)

গোত্র: Clausiaceae

প্রাপ্তিস্থান : রাঙামাটি সদর, কুতুব ছড়ি, জুরাছড়ি, থানচি, আলীকদম, আজিজনগর। এবং বাংলাদেশের সমতল ভূমির কতক জেলা

ব্যবহৃত অংশ : বাকল, পাতা, মুকুল, ফুল, ফল ও বীজ। কার্যকারিতা ও ব্যবহার : মূলের বাকল বাত জুর ও পায়পথের জ্বালা পােড়ায় উপকারী। পাতা রক্ত আমাশয় ও অর্শরােগে ব্যবহৃত হয়। ফল পেট ব্যাথা ও কফ বের করতে ব্যবহৃত হয়। ইহা পাকস্থলীর জন্যও উপকারী। বীজতেল বাতজুরের ব্যাথা ও পাচড়ায় ব্যবহৃত হয়।

ত্রিপুরা আদিবাসী কর্তৃক ব্যবহৃত ঔষধি উদ্ভিদ।

(Medicinal plants used by the Tripura Tribe)

১। বাংলা নাম: অপরাজিতা;ত্রিপুরাদের স্থানীয় নাম : ঘুমকালী উদ্ভিদতাত্ত্বিক নামঃ Clitoria ternatea Linn

গোত্র: Papilionaceae

প্রাপ্তিস্থানঃ পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের সর্বত্র

ব্যবহৃত অংশঃ মূল, পাতা ও বীজ

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : মূল দাস্ত পরিস্কারক, রেচক এবং মূত্রবর্ধক। জ্বর ও পেটের পীড়ার জন্য উপকারী। আদিবাসীরা  গর্ভপাতে এটি ব্যবহার করে। ভাজা বীজের গুড়ো পেটের ব্যাথা দূর করে ।

২। বাংলা নাম : অড়হর;ত্রিপুরাদের স্থানীয় নামঃ কোপলিং

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Cajanus cajan (L) Millsp. গোত্র: Papilionaceae

প্রাপ্তিস্থান: পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশ সর্বত্র চাষ হয় ব্যবহৃত অংশ : পাতা ও বীজ

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : পাতার রস জন্ডিস ও মুখের ঘা ভাল করে। বীজ বাটা, সর্প দংশন ও ফোলা প্রদাহে প্রলেপ দেয়া হয়। পাতা ও বীজ কাশি, ব্রংকাইটিস, বমি ও অর্শরোগে ব্যবহৃত হয়।

৩। বাংলা নামঃ আকন্দ;ত্রিপুরাদের স্থানীয় নাম : আঙার, আংগার পাতা। উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Calotropis gigantea R. Br.

গোত্র: Asclepiadaceae

 প্রাপ্তিস্থান: পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের সর্বত্র।

ব্যবহৃত অংশ। : মূল, মূলের বাকল, পাতা, গাছ ও ফলের রস। কার্যকারিতা ও ব্যবহার : শ্বেতী রোগ, ঘা, টিউমার, অর্শ, পিত্তের রোগ, যকৃত ও পেটের রোগে ব্যবহৃত হয় । এর রস ক্রিমিনাশক ও দাস্ত পরিষ্কারক। মূলের বাকল ঘাম বৃদ্ধিকারক, পরিবর্তক ও রেচক, যৌনশক্তি বৃদ্ধির জন্য খুব কার্যকর, থেমে থেমে জ্বর উঠার প্রতিষেধক। ফুল হজমকারক,পেটের ব্যাথার টনিক এবং টিউমারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

৪।বাংলা নাম : আমলকী। ত্রিপুরাদের স্থানীয় নাম : আমলা।

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Phyllanthus emblica Lim

গোত্র: Euphorbiaceae

প্রাপ্তিস্থান: পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ দেশের সর্বত্র।

ব্যবহৃত অংশ। ও ফলা, মূল, বাকল ও বীজ।

কার্যকারিতা ও ব্যবহার> হৃদযন্ত্র ও মস্তিষ্কের শক্তিবর্ধক,  হজম কারক, বমিলিত নিবারক। ইহা ভিটামিন-সি, ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন বি-২ এর অভাবজনিত কোন শুস্ক ফল  রক্তস্রাব, উদরাময় ও আমাশয়ে উপকারী। মূল ও বাক্য সংকোচক। বীজের এবং পুরাতন রক্ত আমাশয় নাশক।বাজের কৃাথ বলকারক জন্ম কারক, বমি নিবারক, এবং পিপাসা এর অভাবজনিত রোগ  সমূহ দূর করে।

৫। বাংলা নাম : গাদা ;ত্রিপুরাদের স্থানীয় নাম ও ক্ষেতারা।

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Tagetes erecla Linn

গোত্র: Asteraceae (Compositae)

প্রাপ্তিস্থান: পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের সর্বত্র ব্যবহৃত অংশ। : পাতা ও ফুল। কার্যকারিতা ও ব্যবহার : ইহা রক্ত রোধক, ঘাম বৃদ্ধিকারক ও মূত্র বর্ধক। ফুল পানিতে লোশনের মত হাড় মচকানো ও ভাঙ্গায় লাগালে ভাল হয়। ফুল ও গাছি ঘা, কাটা স্থানে লাগান হয়।

৬। বাংলা নাম গুলঞ্চ; ত্রিপুরাদের স্থানীয় নাম : ডুংসা সুন্দরী

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Tinosopora cordifolia Willd

গোত্র: Menispermaceae

প্রাপ্তিস্থান: আলুটিলা, খবংপুরিয়া, দিঘীনালা এবং বাংলাদেশের প্রায় প্রতি জেলা।

ব্যবহৃত অংশ : কান্ড ও পাতা।

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : এটি সাধারণ দুর্বলতা ও জ্বরের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। সিফিলিস বহুদিন বাতজুর, থেমে থেমে আসা জ্বর ইত্যাদি রোগে ব্যবহৃত হয়। ইহা জ্বর, জন্ডিস,  জ্বালাপোড়া বর্তমান। অর্শরোগ, চর্মরোগ, শ্বাসনালীর অনিয়ম  ও স্নায়ুশূল রোগে ব্যবহৃত হয় । তাজা গাছের রস মন

বৃদ্ধিকারক এবং গনোরিয়া চিকিৎসায় উপকারী।

৭। বাংলা নাম : গুলাঞ্চি, কাঠ গোলাপ; ত্রিপুরাদের স্থানীয় নাম : গুলচী।

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Pumeria rubra Linn

গোত্র: Apocynaceae

প্রাপ্তিস্থান: পার্বত্য চট্টগ্রামের সর্বত্র এবং বাংলাদেশের সকল জেলা।

 ব্যবহৃত অংশ : মূল, বাকল, পাতা, শাখা এবং ফুল । কার্যকারিতা ও ব্যবহার : মূল টনিক, মূত্রবৃদ্ধি কারক, ঘর্ম বৃদ্ধিকারক এবং দাস্ত পরিস্কারক। মূলের। বাকল শক্তিশালী রেচক, চুলকানী, জ্বর ও যকৃত সংক্রান্ত রোগের প্রতিষেধক। পাতা জ্বরের প্রতিষেধক ।গাছের বাকল ডায়রিয়া প্রতিযেধক। পাতার নির্যাস বা ফুল নারিকেল ও ঘি এর সাথে মিশিয়ে খাওয়ালে জন্ম নিরোধক এর কাজ করে।।

৮।বাংলা নামঃ ছাতিম; ত্রিপুরাদের স্থানীয় নাম : ছাতুয়ান।

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম: Alstonia scholaris R. Br.

গোত্র: Apocynaceae

 প্রাপ্তিস্থান পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা। ব্যবহৃত অংশঃ বাকল,মূল, নির্গত রস ও আঠা

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : বাকলের নির্যাস উচ্চ রক্তচাপ ও ক্যান্সার ভাল করে। ইহা জ্বর নিবারক, ক্রিমিনাশক, সংকোচক ও বলকারক। এর রস, আঠা ও মূল টিউমার ও ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। টাটকা ছালের রস আদার সঙ্গে প্রসুতিকে সেবন করালে তার শরীর দ্রুত ভাল হয়। শিকড়ের রস দুধের সাথে খেলে কুষ্ঠ রোগে উপকার হয় ও  পেটের ক্রিমি বিনষ্ট হয়।

৯। বাংলা নাম: তেঁতুল ত্রিপুরাদের স্থানীয় নাম : থন্দ্রই।

উদ্ভিদতাত্ত্বিসক নাম: Tamarindus indicus

গোত্র: Caesalpiniaceae

প্রাপ্তিস্থান: পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ব্যবহৃত অংশ: ফল, পাতা ও ফুল

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : তেঁতুলের পাতা যে কোন ফুলা বা ঘায়ে লাগালে তা কমে যায়। বাকল সংকোচক টনিক এবং ঘা শুকায়। ফুল হজমকারক, পাকস্থলীর বায়ুনাশক, দাস্ত পরিস্কারক ও পিত্তাধিক্যের প্রতিষেধক। এটি মানষিক বিকার গ্রস্থ রোগের জন্য উপকারী। ফলের ছালের গুড়া

অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ও গনোরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

১০। বাংলা নাম : তেলাকুচা; ত্রিপুরাদের স্থানীয় নাম : বিম্বি

বৈজ্ঞানিক নাম : Coccinia grandis Linn = Cephalandra indica

গোত্র: Cucurbitaceae

প্রাপ্তিস্থান: পার্বত্য চট্টগ্রাম সহ বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ব্যবহৃত অংশ> মূল, পাতা ও ফল।

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : পাতার রস বহুমূত্র ব্যাধির প্রতিযেধক। এটি পাকস্থলীর বায়ুনাশক, জ্বরের। প্রতিযেধক ও দুগ্ধবর্ধনকারী। মূলের গুড়া পানির সাথে খেলে বমি বন্ধ হয় এবং পেষ্ট করে মাথায় লাগালে মাথা ব্যাথা দূর হয় এবং চামড়া ফাটা বন্ধ হয়। পাতার রস ফোড়া, রক্ত আমাশয়, পিত্ত ও বহুমূত্রের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। ফল ও মূলের রস বহুমূত্র রোগে ব্যবহৃত হয় ।

১১। বাংলা নাম : থানকুনি ;ত্রিপুরাদের স্থানীয় নাম : শাকুম বাক্লা

উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম : Centella asiatica

গোত্র: Apiaceae (Umbelliferae)

প্রাপ্তিস্থান: পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের সর্বত্র।

ব্যবহৃত অংশ ও সম্পূর্ণ গাছ ।

কার্যকারিতা ও ব্যবহারঃ পাতার রস অত্যন্ত কার্যকরী বিরেচক। পাতা সিদ্ধ রস হারপেস এর চিকিৎসায় এবং ব্রংকাইটিশের কাশি বহিস্কারক হিসাবে ফলপ্রসু। পাতা বাটা  বিশেষ করে দাদ এর চিকিৎসায় অত্যন্ত কার্যকর।

১২। বাংলা নাম : নয়ন তারা; ত্রিপুরাদের স্থানীয় নাম : খুম বৈরাগী

উদ্ভিদতাত্তিক নাম: Catharanthus roseus D. Don (Vinca rosea)

গোত্র: Apocynaceae

প্রাপ্তিস্থান: পার্বত্য চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের সর্বত্র

ব্যবহৃত অংশ>  সম্পূর্ণ উদ্ভিদ।

কার্যকারিতা ও ব্যবহার : এটি ক্যান্সার নিবারক, বিশেষ করে শিশুদের লিউকোমিয়ার চিবিতেদায় এবং হজকিল রোগে যুগান্তকারী ফলপ্রসু ঔষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এর উচ্চচাপ রোধ ও উত্তেজনা প্রশমণ গুণও আছে। ডায়াবেটিসের চিকিৎসায়ও ব্যাপক ব্যবহৃত হয়।

১৩। বাংলা নাম : নাগেশ্বর; ত্রিপুরাদের স্থানীয় নাম : ঘুমতাই

উদ্ভিদতাত্তিক নাম : Mesua nagassarium  (Burm. f.) Kast. (M. Ferrea Linn)

গোত্র: Clausiaceae

প্রাপ্তিস্থান: রাঙামাটি সদর, কুতুবছড়ি, জুরাছড়ি, থানচি, আলীকদম, আজিজনগর। এবং বাংলাদেশের সমতল ভূমির কতক জেলা।

ব্যবহৃত অংশ : বাকল, পাতা, মুকুল, ফুল, ফল ও বীজ। কার্যকারিতা ও ব্যবহার : মূলের বাকল বাত জ্বর ও পায়ুপথের জ্বালা পোড়ায় উপকারী, পাতা রক্ত। আমাশয় ও  অর্শরোগে ব্যবহৃত হয়। ফল পেট ব্যাথা ও কফ বের করতে ব্যবহৃত হয়; ইহা পাকস্থলীর জন্যও উপকারী। বীজতেল বাতজ্বরের ব্যাথা ও পাচড়ায় ব্যবহৃত হয়।

যে সকল পুস্তকের সহায়তা গ্রহন করা হয়েছে

>>। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত ঔষধি উদ্ভিদ-১ম খন্ড - পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়, গণ প্রজান্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।

>>। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যায় ভেষজ উদ্ভিদ পরিচিত, চাষ ও ব্যবহার বিধি- ১ - স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রণালয়, গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।