ভুমি জরিপের ক্ষেত্রে ১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের অধীন প্রণীত প্রজাস্বত্ব বিধিমালা । ১৯৫৫ এর বিধান অনুসারে ভূমি রেকর্ড ও জরিপের কাজ স্তরভিত্তিক সম্পাদিত হয়ে থাকে। নীচে বর্ণিত স্তরগুলো অনুসরণ করে একটি পূর্ণাঙ্গ জরিপ সম্পন্ন করা হয়ে থাকে।
. বিজ্ঞপ্তি প্রচার
ভূমি জরিপের করার পূর্বে সেটেলমেন্ট অফিসার স্থানীয় প্রশাসনসহ ভূমি মালিকগণকে অবহিত করে জরিপ বিজ্ঞপ্তি প্রচার করেন । এ কাজে মাইকিং ও পত্রিকায় বিজ্ঞাপনসহ ব্যাপক জনসংযোগ করা হয় । জরিপ বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার পর পরই ভূমি মালিকগণকে জরিপের প্রস্তুতিমূলক কাজ হিসেবে নিজ নিজ জমির আইল সঠিকভাবে চিহ্নিত করে রাখতে বলা হয়। এ কাজের প্রধান দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা হলেন। সেটেলমেন্ট অফিসার বা সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার।
. ট্রাভার্স। কোন মৌজার নকশা সম্পূর্ণ নতুন করে প্রস্তুত করতে সরেজমিনের সাথে সঙ্গতি রেখে একটি নির্দিষ্ট স্কেলে প্রাথমিক ভাবে নকশা প্রস্তুতের যে কাঠামো স্থাপন করা হয় সেটাই ট্রাভার্স। ট্রাভার্সের উপর ভিত্তি করে পি-৭০ সীটের মাধ্যমে মৌজার নকশা প্রস্তুত করা  হয় । কোন মৌজার পুরানো নকশা অর্থাৎ ব্লু-প্রিন্ট সীটের উপর জরিপ করার ক্ষেত্রে ট্রাভার্স করা হয় না । এ স্তরে জরিপ কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সাথে ভূমি মালিকগণের যোগাযোগের তেমন  প্রয়োজন নেই। তবে ভূমির মালিকগণ জমির আইল/সীমানা চিহ্নিত করে রাখবেন। এ স্তরে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তা হলেন ট্রাভার্স  ক্যাম্প কর্মকর্তা বা ট্রাভার্স সার্ভেয়ার। যদি প্রাকৃতিক বা ভৌগৌলিক  কারণে কোন জমির প্রকৃতি এক তৃতীয়াংশের বেশী পরিবর্তন হয়ে যায়। তাহলে ট্রাভার্স সার্ভের প্রয়ােজন পড়ে। বর্তমান সংশোধনী  জরিপের ক্ষেত্রে ট্রাভার্স সার্ভে করার প্রয়োজন  নাই। তবে নতুন জেগে উঠা চরের জরিপ কালে এই স্তরের মাধ্যমে কাজ শুরু করতে হবে।


. ক্যাডাস্টাল সার্ভে / কিস্তোয়ার। কিস্তোয়ার হলো খন্ডে খন্ডে  বিভক্ত করা। এই স্তরে একটির পর একটি করে খন্ড খন্ড প্লট অংকনের মাধ্যমে  নকশা প্রস্তুতের কার্যক্রম বা পদ্ধতিকে কিস্তোয়ার বলে। এই স্তরে ট্রাভার্স সার্ভের মাধ্যমে যে পি-৭০ সীট। প্রস্তুত করা হয় তার উপর কিস্তোয়ার করা হয়। এ স্তরে পি-৭০ সীটে প্রস্তুত কোন মৌজার নকশা, ট্রাভার্স। সার্ভের সময়ে স্থাপিত বিভিন্ন খুঁটির দূরত্ব স্কেল অনুযায়ী ঠিক আছে কি না তা সরেজমিনে মাঠে গিয়ে পরীক্ষা করা হয় এবং এর মাধ্যমে মৌজার প্রতিটি জমির বাস্তব প্রতিনিধিত্বমূলক প্রতিচ্ছবি বা নকশা পাওয়া যায়।
. সীমানা চিহ্ন নির্মাণ সীমানা চিহ্ন নির্মাণ বলতে পাশাপাশি তিনটি মৌজার সংযোগ স্থলকে বুঝানো হয়েছে। এই স্তরে তিনটি মৌজার।  সংযোগ স্থলে পিলার (খুঁটি) স্থাপন করা হয়। স্থাপিত পিলার বা খুঁটিকে  ত্রি-সীমানা পিলার (Tri-junction pillar) বলা হয়। মৌজার আয়তন খুব বড় হলে মৌজা সীমানার ভিতরেও কিছু স্থায়ী পিলার স্থাপন করতে হয়। এই সব পিলারের অবস্থান নকশায় চিহ্নিত করতে হয়। এখানে উল্লেখ্য যে, যখন পি-৭০ সীটে কাজ করা হয় অর্থাৎ নতুন করে কোন এলাকায় জরিপ করা হয় তখন উপরের তিনটি স্তরের কাজই করতে হয়। কিন্তু ইতোপূর্বে জরিপ হয়েছে এমন  মৌজার জরিপ ব্লু-প্রিন্ট সীটের উপর করতে হয় বলে উপরের তিনটি স্তরের প্রয়োজন হয় না।
৫। খানাপুরীঃ খানাপুরী করা বলতে খানা বা শুণ্যস্থান পূরণ করা বুঝায় ।  এই স্তরে সর্দার আমিন বিধি মোতাবেক খতিয়ান কলামে জমির মালিকের জমির বিবরণ লিপিবদ্ধ করে থাকেন। এই পদ্ধতিকে খানাপরী বলা হয় । এই স্তরের কিয়োস্তাকৃ্ত  পি-৭০ সীটে বা ব্লু-প্রিন্ট সীটে প্রত্যেকটি ভূমিখন্ডে একটি করে নম্বর দেওয়া হয় । এই নম্বর  প্রদান কিস্তোয়ারকৃত মৌজা নকশায় উত্তর-পশ্চিম কোণ হতে শুরু হয়ে দক্ষিণ-পর্ব কোণে শেষ হয় । এই নম্বরগুলোকে দাগ নম্বর বলে । এই স্তরে দাগ নম্বর দেয়ার পাশাপাশি ভূমি মালিকের নাম, ঠিকানা, জমির  শ্রেণী, ভূমির প্রিন্ট সীটের পরিবর্তে পি-৭০ সীটে কিস্তোয়ার করার জন্য খানাপুরীর পর প্রতিটি দাগের ভূমির পরিমাণ নির্ণয়ের জন্য প্রদত্ত সীটটি এরিয়া এস্টিমেটরের নিকট প্রেরণ করা হয় । অতঃপর খতিয়ানে এ দাগের পরিমাণ লেখা হয় । এ সময়ে প্রস্ততকৃত খতিয়ানকে খসড়া খতিয়ান বা মাঠ পর্চা বলে । এ সময়ে নীল কালো কালিতে লেখা হয় । এটা এক ধরণের মালিকের জমির হিসাবও বটে এই সময়ে ভূমি মালিকদের প্রধান কাজ হচ্ছে যথাসময়ে নিজে  জমিতে উপস্থিত হয়ে আমিনকে জমির মালিকানা  ও দখল সংক্রান্ত প্রমাণাদি উপস্থাপন করে খতিয়ানে ঐ সব তথ্য লিপিবদ্ধ করানো
৬ ক, বুঝারত
 বঝারত অর্থ জমি বুঝিয়ে দেয়া। এ স্তরে নতুন আমিনদল কর্তৃক খতিয়ান বা পর্চায় জমির পরিমাণ উল্লেখ করে বিনামূল্যে উক্ত পর্চা জমির মালিককে সরবরাহ (বুঝারত) করা হয়, যা মাঠ পর্চা' নামে। পরিচিত। পর্চা বিতরণের তারিখটি পূর্বেই নোটিশ/পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি  প্রচার/এলাকায় মাইকিং এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হয়। পর্চা বিতরণের নির্ধারিত তারিখে ভূমি মালিকগণ নিজে উপস্থিত থেকে জরিপ। কর্মচারীগণের নিকট থেকে পর্চা সংগ্রহ করবেন। ভূমি। মালিকগণ পৰ্চার সঠিকতা যাচাই করে দেখবেন এবং প্রাপ্ত পৰ্চার ভুল-ভ্রান্তি সংশোধন বা পরিবর্তন আবশ্যক । হলে নির্দিষ্ট বিবাদ (ডিসপুট) ফরম পূরণ করে তা আমিনের নিকট জমা দিবেন । হল্কা অফিসার সংশ্লিষ্ট পক্ষগণের শুনানির মাধ্যমে দ্রুত ঐ সকল বিবাদ নিষ্পত্তি করবে।
খানাপুরী স্তরে কোন কারণে মালিকের নাম, ঠিকানা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য খতিয়ানে রেকর্ডভক্ত হয়নি এমন ভূমি মালিকগণ বুঝারত স্তরে হল্কা অফিসারের নিকট  আবেদনক্রমে ঐ সকল তথ্য রেকর্ড করার সুযোগ পাবেন। ভূমি মালিকগণকে মনে রাখতে হবে মাঠ পর্যায়ে সরেজমিন  রেকর্ড করার এটাই শেষ সুযোগ ।  এরপরে রেকর্ড সংশোধন/প্রণয়নের সুযোগ থাকলেও তা হবে অপেক্ষাকৃত দূরবর্তী কোন ক্যাম্প অফিসে যা জটিল ও যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ। এ স্তরে সরকারি সেবা  নিয়োজিত কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ হলেন- সরদার  আমিন/হল্কা অফিসার বা কানুনগো/ক্যাডাস্ট্রাল সার্কেল অফিসার। এ স্তরে খতিয়ান বা খসড়ার কোন পরিবর্তন করতে হলে তা সবুজ কালি দিয়ে করা হয়
৬ খ. খানাপুরী-কাম-বুঝারত যখন কোন মৌজার র-প্রিন্ট সীটের জরিপ কাজ করা হয় তখন খানাপুরী ও বুঝারত স্তরের কাজ এক করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে যে জোনাল জরিপ কাজ পরিচালিত হচ্ছে তার বেশীর ভাগই ব্লু-প্রিন্ট জমা উপর করা হচ্ছে । জরিপ চলাকালীন  কোন মৌজা/উপজেলা সীমানা সম্পর্কীয় বিষয়ে কোন বিরোধ দেখা দিলে সেটেলমেন্ট অফিসার খানাপুরী-কাম-বুঝারত স্তরে উক্ত বিরোধ  দেখা বিধিমতে নিষ্পত্তি করবেন ।
. তসদিক বা এ্যাটেষ্টেশন (Attestation) তসদিক অর্থ সত্যায়িতকরণ। ভূমি রাজস্ব অফিসার ভূমির মালিকানা সম্পর্কিত কাগজপত্র যাচাই করে প্রজাস্বত্ব বিধিমালার ২৮ বিধি মোতাবেক সত্যায়িত করেন । এই প্রক্রিয়াকে তসদিক বা এ্যাটেষ্টেশন বলা হয়। কখনও কখনও এটাকে ২৮ ধারা বলে সাধারণ জনগণ বুঝে থাকেন। ব্যাপক প্রচারের মাধ্যমে তসদিক স্তরের কাজ সম্পাদিত হয় ক্যাম্প অফিসে। এর জন্য তারিখ নির্দিষ্ট করে মৌজা অনুযায়ী ভূমির  মালিকগণকে জানিয়ে দেয়া হয়। এই স্তরে বুঝারতের সময়ে যে খসড়া খতিয়ান ভূমি মালিকদের দেয়া হয়। তার সকল কাগজপত্র ও প্রমাণাদির শুদ্ধতা যাচাই করে একজন রাজস্ব অফিসার বা কানুনগো সত্যায়িত করে থাকেন । এই স্তরে ভূমি মালিকগণ পূর্ববর্তী স্তরে প্রণীত পর্চা ও নকশায় কোন সংশোধন প্রয়োজন মনে করলে বিবাদ(ডিসপুট) দাখিল করতে পারেন এবং উপযুক্ত প্রমাণ উপস্থাপন করে তা সংশোধনের সুযোগ নিতে পারেন। তসদিককুত পৰ্চা জমির মালিকানার প্রাথমিক আইনগত ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়। তাই এই স্তরের কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই স্তরে দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা হলেন তসদিক অফিসার/ উপ-সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার ।
. খসড়া খতিয়ান প্রকাশনা (Draft Publication) ও আপত্তি দায়ের। তসদিক সমাপ্ত হলে রেকর্ড পরীক্ষা করে সমগ্র মৌজার রেকর্ড বর্ণ ক্রম অনুসারে সাজিয়ে খতিয়ানে পুনরায় নতুন নম্বর দিয়ে ৩০ দিনের জন্য সর্বসাধারণ তথা ভূমি মালিকদের পরিদর্শনের জন্য নোটিশ বোর্ডে খোলা রাখা হয়।  এ সময় ভূমি মালিকগণ রেকর্ড পরিদর্শন করে কোন ভুল ভ্রান্তি আছে কিনা তা যাচাই করতে পারেন । জনগণের পরিদর্শনের জন্য প্রজাস্বত্ব বিধিমালার ২৯ বিধি মোতাবেক ৩০ কর্ম দিবস খোলা রাখার প্রক্রিয়াকে খসড়া প্রকাশনা বলে । খসড়া প্রকাশনা উম্মুক্ত রাখার সময়কাল উল্লেখপূর্বক ক্যাম্প অফিস হতে এজন্য বিজ্ঞপ্তিও প্রচার করা হয়। ভূমি মালিকগণের নামের আদ্যোক্ষর অনুযায়ী খতিয়ান বা পর্চা ক্রমবিন্যাস করা হয় বিধায় তসদিককৃত খতিয়ানটির নম্বর পরবর্তীতে বদলে যায়। তাই তসদিককৃত সিটিজেন চার্টার খতিয়ানের নতুন নম্বর অর্থাৎ ডিপি নম্বরটি সংগ্রহের জন্যও ভূমি মালিকগণকে নিজ নিজ পর্চাসহ খসড়া প্রকাশনা (ডিপি) ক্যাম্পে উপস্থিত হতে হয়। ডিপিতে প্রকাশিত খতিয়ান সম্পর্কে কারো কোন আপত্তি বা দাবী থাকলে সরকার নির্ধারিত ১০.০০ (দশ) টাকার কোর্ট ফি দিয়ে আপত্তি দায়ের করা যাবে। এটিই ৩০ বিধির আপত্তি। এই স্তরে সেবা প্রদানে নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তা হলেন তসদিক অফিসার/ খসড়া প্রকাশনা অফিসার (উপ/সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার)।
, আপত্তি শুনানি। এই স্তরে সরকারি সেবা প্রদানে নিয়োজিত কর্মকর্তা হলেন সংশ্লিষ্ট আপত্তি অফিসার/ সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার বা উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসার। দেওয়ানী কার্যবিধি অনুসরণে এটি একটি বিচারিক কার্যক্রম। পক্ষগণ নিজে অথবা প্রয়োজনে মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে নিজ নিজ দাবী আপত্তি অফিসারের নিকট উপস্থাপন করতে পারেন। এখানে উল্লেখ্য যে, আপত্তি কেস দাখিলের পরে বাদীকে অবশ্যই কেস নম্বর  কেসের রশিদ গ্রহণ করতে হবে। কারণ এই রশিদ ছাড়া আপত্তি কেস দায়ের করার কোন প্রমাণ করা যাবেনা । এই স্তরে দাখিলকৃত আপত্তি কেসসমূহ নিষ্পত্তির জন্য সেটেলমেন্ট অফিসারের অধ:স্তন সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসারের কোর্টে পাঠাবেন এবং দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার নোটিশের মাধ্যমে বাদি-বিবাদী পক্ষকে করে পক্ষ-বিপক্ষের বক্তব্য শুনবেন ও বিশ্লেষণপূর্বক রায় প্রদান করবেন এবং অবশ্যই রায় মোতাবেক রেকর্ড সংশোধন করবেন।তিনি আবেদনপত্রে ও খতিয়ানে বেগুনি রঙের কালি ব্যবহার করে থাকেন। আরো একটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ।তা হলো আপত্তি কেসের রায়ের নকল দ্রুতআবেদনকারীকে সরবরাহ করা। যাতে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ ইচ্ছা করলে ৩০ দিনের মধ্যে আপীল কেস দায়ের করতে পারেন সন্তোষজনক। কারণ উল্লেখ না  করে কোন একটি পরে অনুপস্থিতিতে  আপত্তি মামলা নিষ্পত্তি করার কোন বিধান নেই।
.১. আপীল গ্রহণ বা দায়ের -আপত্তি কেসের রায় দ্বারা কোন পক্ষ সংক্ষুব্ধ হলে, তিনি রায় প্রদানের ৩০ দিনের মধ্যে নির্ধারিত ফরমে ও নির্ধারিত ফিস প্রদান করে সিনিয়র সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসারের নিকট ৩১ বিধিতে আপীল দায়ের করতে পারেন। আপীল অফিসার সংশ্লিষ্ট পক্ষগণকে নোটিশ প্রদান করে এবং ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমতা প্রাপ্ত প্রতিনিধিদের  মাধ্যমে শুনানীর সুযোগ প্রদান করে আপীল  নিষ্পত্তি করবেন। আপীল রায় মোতাবেক প্রয়োজনে খতিয়ান সংশোধন করা হয়। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আপত্তি মামলার রায়ের নকল সেটেলমেন্ট অফিসার বরাবর আবেদন দাখিলের মাধ্যমে সর্বাগ্রে উত্তোলন করতে হবে।আপীল একটি বিচারিক কার্যক্রম এবং আপীলে ঘোষিত রায়ই চূড়ান্ত।  আপীল স্তরের পরে প্রণীত রেকর্ড বিষয়ে কেবলমাত্র তঞ্চকতা ও করণিক ভুলের অভিযোগে সেটেলমেন্ট অফিসারের নিকট প্রতিকার  চাওয়া যায়।
১০. চুড়ান্ত প্রকাশনা>আপিল স্তর শেষে খতিয়ান চূড়ান্ত করার পূর্বে   খতিয়ানসমূহ পুনরায় যাচ বা নিরীক্ষা করা হয়। একে চূড়ান্ত। final বলে। চূড়ান্ত যাচের পর যাচকত খতিয়ানসমূহ মুদ্রণ করা হয় এবং  মুদ্রিত খতিয়ান পূর্ব নির্ধারিত কোন। প্রকাশ্য স্থানে ৩০ দিনব্যাপী জনসাধারণের অবগতি ও পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়। একে চূড়ান্ত প্রকাশনা বলা হয়। চূড়ান্ত প্রকাশনার জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলায় একটি ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। চূড়ান্ত প্রকাশনার নোটিশ যথাসময়ে জারী করতে হয়। চুড়ান্ত প্রকাশনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রকাশনা, সময়কাল উত্তীর্ণ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে সেটেলমেন্ট অফিসার উক্ত খতিয়ান বা রেকর্ড অব রাইটস চুরান্ত ভাবে প্রকাশিত হয়েছে বলে প্রত্যয়ন করে থাকেন।  এরপর সংশ্লিষ্ট এলাকা বা মৌজার স্বত্বলিপি চুরান্ত ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে এই মর্মে  সরকার একটি প্রজ্ঞাপন সরকারি গেজেটে প্রকাশ করে থাকেন। সংশ্লিষ্ট এলাকা বা  মৌজাসমূহের স্বতলিপি যথাযথভাবে প্রণয়ন বা সংশোধন করা হয়েছে মর্মে এই প্রজ্ঞাপন বা প্রামাণ্য দলিল  হিসেবে গণ্য  হবে। এই প্রজ্ঞাপনের আর একটি তাৎপর্য এই যে, এ বিষয়টি প্রকাশের পর খতিয়ানের যাবতীয় বিবরণী সাক্ষ্য প্রমাণ দ্বারা মিথ্যে প্রমাণিত না হলে আদালত কর্তৃক সঠিক ও যথার্থ বলে গন্য করা হয়। এ স্তরে ভূমি মালিকগণ মুদ্রিত নকশা ও পর্চা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে ক্রয় করতে পারেন ।
 প্রতিটি পর্চা ৬০.০০ টাকা এবং প্রতিটি নকশা ৩৫০.০০ টাকা। কোন মৌজার চুড়ান্ত প্রকাশনা কোন কার্যালয়ে কবে থেকে আরম্ভ হবে সে সম্পর্কে নোটিশ/পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ স্তরে সরকারের  সেবা  প্রদানে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী হলেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা সেটেলমেন্ট অফিসার
ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল ও আপীলেট ট্রাইব্যুনাল।
 মৌজা রেকর্ড চূড়ান্ত প্রকাশনা সংক্রান্ত গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ১ বছরের মধ্যে চূড়ান্ত প্রকাশিত রেকর্ডের। বিষয়ে কোন আপত্তি থাকলে সে সম্পর্কে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন-১৯৫০ এর ১৪৫ এ ধারার। বিধান বলে গঠিত ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল আদালতে প্রতিকার প্রার্থনা করা যাবে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে। কেহ প্রতিকার না পেলে তিনি ল্যান্ড সার্ভে আপীলেট ট্রাইব্যুনালেও আপীল করতে পারেন


Post a Comment

Please do not link comment any spam or drive spams content

Previous Post Next Post