ময়মনসিংহে ধর্মপ্রদেশ সৃষ্টি
রেভাঃ ফাদার পিটার রেমা
ইতিহাসে দেখা যায় ময়মনসিংহের ধর্মপ্রদেশ ছাড়া বাংলাদেশের অন্যান্য ধর্মপ্রদেশগুলো মণ্ডলীর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষদের উদ্যোগেই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কিন্তু ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশ প্রতিষ্ঠা এখানকার জনগণের সুদীর্ঘ আন্দোলনের ফলে বাস্তবায়িত হয়েছে। তথ্যানুসারে ১৯৫৯ খ্রীষ্টাব্দে বৃহত্তর ময়মনসিংহে কাথলিকদের সংখ্যা প্রায় পঞ্চাশ হাজার দাঁড়ালেও ময়মনসিংহে একটি আলাদা ধর্মপ্রদেশ প্রতিষ্ঠা করতে কি একটা সন্দেহে বাধাগ্রস্ত হয়ে মন্ডলীর কর্তৃপক্ষ সামনে আর অগ্রসর হন নি তবে জনগণের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিগণ
ময়মনসিংহে একটি আলাদা ধর্মপ্রদেশ প্রতিষ্ঠার দাবীতে আন্দোলনে নেমে পড়েন। বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ খ্রীষ্টাব্দে ৩০ অক্টোবর বরুয়াকোনা নিবাসী মি: মার্টিন রেমার উদ্যোগে ময়মনসিংহ শহরে কয়েকজন বিশিষ্ট মান্দি নেতৃবৃন্দ এক সভায় মিলিত হন। ময়মনসিংহ ধর্মপল্লীর ক্যাম্পাসে সম্মেলন করার অনুমতি না পেয়ে তাঁরা ময়মনসিংহ শহরে প্রবাসী নামে এক হোটেলে ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশ দাবী আদায়ের সম্মেলন করেন ।
Related Post আদিবাসী গারোদের মধ্যে বংলাদেশের প্রথম বিশপ মধুপুর গড় থেকে First Bishop among Garo in Bangladesh from Madhupur Garh
সেই সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বালুচড়া ধর্মপল্লীর মি: ফিলিপ রংদী ও মি: গাব্রিয়েল রাংসা, বিড়ইডাকুনী ধর্মপল্লীর মি: প্রমোদ মানখিন, মি: গোলাপ দিও ও মি: উইলিয়াম ম্রং, বিরিশিরির মি: বিধি পিটার দাংগ এবং ময়মনসিংহের মি: গাব্রিয়েল মান্দা।
১৯৭৩ খ্রীষ্টাব্দে জানুয়ারী কি ফেব্রুয়ারীতে রাণীখং-এ তাঁরা দ্বিতীয় সম্মেলন করেন। তারপর ১৯৭৪ খ্রীষ্টাব্দে বিড়ইডাকুনীতে পালকীয় সফরে আগত তৎকালীন শ্রদ্ধেয় আর্চ বিশপ গাঙ্গুলীর সঙ্গে তাঁরা সাক্ষাৎ করেন এবং ‘ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশ' দাবী সম্বলিত একটি স্মারক লিপি তাঁকে প্রদান করেন। ১৯৭৫ খ্রীষ্টাব্দে শেখ মুজিবের হত্যার প্রতিবাদে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে টাঙ্গাগাইলের কাদের সিদ্দিকির নেতৃত্বে সীমান্তে কাদের বাহিনীর সশস্ত্র গেরিলা যুদ্ধ বেঁধে যায়।
এই গেরিলা যুদ্ধের সময়ে ধর্মপ্রদেশ দাবীর আন্দোলনের নেতাদের মধ্যে কেউবা সরকারের সন্দেহের শিকার কেউবা আটকের শিকার হলেন । তাই সীমান্তে গেরিলা যুদ্ধ শেষ হলেও ধর্মপ্রদেশ দাবীর আন্দোলনকারী মান্দি নেতাগণ তাঁদের আন্দোলন চালিয়ে নিতে পারলেন না। কিন্তু এক সময় ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশ প্রতিষ্ঠার দাবীটি ধর্মপ্রদেশের যাজকদের মধ্যেই আলোড়ন শুরু
হয়ে গেল। এরপর শুরু হয় এ বিষয়ে ধর্মপ্রদেশের যাজকদের মতামত যাচাই করার পর্যবেক্ষণ। অবশেষে সবগুলো তথ্য জানা ও বিবেচনা করার পর এক নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় রোমে ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশ প্রতিষ্ঠার দাবীর বিষয়টি প্রেরণ করা হল।
যথারীতিতে সবকিছু যাচাই ও বিবেচনা করার পর মহামান্য পোপ দ্বিতীয় জন পল টাঙ্গাইল, “বিশ্বাস বিস্তার সংস্থার" মধ্য দিয়ে ১৯৮৭ খ্রীষ্টাব্দে ১৫ মে বাংলাদেশের বৃহত্তর ময়মনসিংহের ৬টি জেলা যথা: ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ-কে নিয়ে ময়মনসিংহের প্রশাসনে অন্তর্ভূক্ত করে ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশ প্রতিষ্ঠার অনুমোদন ঘোষণা দিলেন।
এর প্রথম বিশপ হিসাবে তৎকালে রোমে অধ্যয়ণরত শ্রদ্ধেয় ফাদার ফ্রান্সিস এ গমেজ-কে মনোনিত করা হল। ময়মনসিংহের বিশপ পদে ১৯৮৭ খ্রীষ্টাব্দ ৮ সেপ্টেম্বরে মুষলধারে ভারী বৃষ্টি বর্ষণের বিরতিতে ময়মনসিংহে সালেসিয়ান সিষ্টারদের হলি ফ্যামিলি কনভেন্টের স্কুল মাঠে তাঁর অভিষেক অনুষ্ঠান করা হল । তিনি ২০০৬ খ্রীষ্টাব্দ জুন পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন।
তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন তাঁর সহকারী বিশপ পনেন পল কুবি সিএসসি ২০০৬ খ্রীষ্টাব্দ ১৫ জুলাই ।
নতুন ধর্মপ্রদেশ হওয়ার পর বিশপ ফ্রান্সিসের সময়ে তিনটি নতুন ধর্মপল্লী স্থাপিত হল । ১৯৮৯ খ্রীষ্টাব্দে বালুচড়াকে বিভক্ত করে পূর্বে বরুয়াকোনায় নতুন মিশন খোলা হল । ১৯৯২ খ্রীষ্টাব্দে জলছত্রকে বিভক্ত করে ৭ মাইল উত্তরে পীরগাছায় নতুন একটি মিশন খোলা হল।
২০০৬ খ্রীষ্টাব্দে বিড়ইডাকুনীকে বিভক্ত করে প্রায় ৭ মাইল পশ্চিমে ঝলঝলিয়ায় আরেকটি নতুন মিশন খোলা হল । এছাড়াও ময়মনসিংহ ধর্মপল্লীকে বিভক্ত করে ভবিষ্যতে দক্ষিণ অঞ্চলে একটি মিশন খোলার আশায় ময়মনসিংহ শহর থেকে প্রায় ৩০ মাইল দূরে দক্ষিণে অবস্থিত নলুয়াকুড়িতে ১৯৯২ খ্রীষ্টাব্দে একটি আবাসিক উপধর্মপল্লী খোলা হল ।
বিশপ পনেনের সময়ে ২০০৯ খ্রী: ১৫ ডিসেম্বরে ঘোষণা দিয়ে ১৮ই ডিসেম্বরে রাণীখং ধর্মপলস্নীর বিরিশিরি উত্রাইল উপধর্মপীকে পূর্ণ ধর্মপল্লীতে উন্নীত করা হল। আগামীতে জলছত্রের দরগাচালা উপধর্মপল্লী এবং ময়মনসিংহ ধর্মপল্লীর ঢাকুয়া উপকেন্দ্র ধর্মপল্লীতে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনায় রয়েছে ।
নতুন ধর্ম প্রদেশ হওয়ার পর ময়মনসিংহের বিভিন্ন ধর্মপল্লীর এলাকায় কাজ করার জন্য নতুন নতুন সম্প্রদায়ের মিশনারী যাজকগণ ও সিস্টারগণ ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশে আসতে শুরু করলেন। যাজক সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম ১৯৯০ খ্রীষ্টাব্দে জেবেরিয়ান যাজকগণ, ২০০৮ খ্রীষ্টাব্দে ডন বস্কো সম্প্রদায়ের যাজকগণ এ ধর্মপ্রদেশে আসলেন।
সিস্টার সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম ১৯৯৮ খ্রীষ্টাব্দে এম.সি.বা বাম্বিনো সম্প্রদায়ের সিস্টারগণ বরুয়াকোনায় এবং ২০০২ খ্রীষ্টাব্দে ময়মনসিংহ ধর্মপল্লীতে; এমসি বা মাদার তেরেজা সম্প্রদায়ের সিস্টারগণ ২০০৫ খ্রীষ্টাব্দে জলছত্র ধর্মপল্লীতে, কোরিয়ার সেন্ট ভিনসেন্ট ডি. পলের সম্প্রদায়ের সিস্টারগণ ২০০৬ খ্রীষ্টাব্দে ময়মনসিংহ শহরে, ডটার অব জিজাস সম্প্রদায়ের সিস্টারগণ ২০০৭ খ্রীষ্টাব্দে বিরিশিরি উত্রাইলে এবং ২০০৮ খ্রীষ্টাব্দে ঝলঝলিয়ায় আর.এন.ডি.এম সম্প্রদায়ের সিস্টারগণ আসলেন।
বর্তমানে ধর্মপ্রদেশের প্রত্যেক ধর্মপল্লীতে সিস্টারগণ রয়েছেন। তাদের কেউ শিক্ষাদানে, কেউ দাতব্য চিকিৎসালয়, কেউবা ক্যাটেখেটিক বা ধর্ম শিক্ষা সেবা কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। উক্ত নবাগত সিস্টার সম্প্রদায়গুলোর আগে এই ধর্মপ্রদেশে কর্মরত পুরাতন সিস্টার সম্প্রদায়গুলো হল: সালেসিয়ান, হলিক্রশ, এসএমআরএ ও মঠবাসী ফ্রান্সিসকান সিস্টারগণ। সিস্টারদের পাশাপাশি কয়েকটি সম্প্রদায়ের ব্রাদারগণও এ ধর্মপ্রদেশে কাজ করার জন্য আসতে শুরু করলেন।
তাঁদের মধ্যে হলিক্রশ ব্রাদারগণ ২০০৫ খ্রীষ্টাব্দে বিড়ইডাকুনীতে এবং ম্যারিষ্ট ব্রাদারগণ ২০০৯ খ্রীষ্টাব্দে পীরগাছায় আসলেন। বহু বছর পর হলিক্রশ ব্রাদারগণ তাঁদের পূর্বসূরী ব্রাদারদের স্থাপিত বিড়ইডাকুনী হাইস্কুল পরিচালনার জন্য আবার ফিরে আসলেন। এখন তাঁরা এখানে স্থায়ী আবাস নির্মাণসহ ছেলেদের জন্য এক বিরাট পাকা ঘরের হোস্টেল নির্মাণ করলেন।
রেভাঃ ফাদার পিটার রেমা |
READ MORE Money will Diverted to Digital Cryptocurrency
Born : 29 June 1956 in Village Dewachala,
Jalchatra Parish, District Tangail.
Ordained Priest : November 19, 1986
Elected Bishop : 25 December, 2003
Consecrated Bishop : February 13, 2004
Appointment as Bishop
of Mymensingh : July 15,2006
Installation in Mymensingh: 1 September 2006
Motto : "Thy Kingdom Come"
Address : Bishop’s House
P.O. Box -37, Bhatikashore
Mymensingh - 2200
Phone : (00 88 091) 51280; 61228
Mobile Phone : (00 88) 01720449741
Fax : (00 88 091) 51280
E-mail : ponenkubi@gmail.com
Patron of the Diocese : ST. PATRICK
Total Area : 16,448 Sq. Kilometers
The Diocese of Mymensingh has under its jurisdiction the civil districts:
Mymensingh, Jamalpur, Kishorganj, Netrakona, Sherpur, Tangail and Sunamgonj.
Total Christian Population : 115’441
Catholic Population : 84,719
Baptists Population : 22,648
Church of Bangladesh : 6,665
Seventh Day Adventists : 1,409
Languages spoken : Bangla, Garo, English, and Hajong.
02. HISTORY OF DIOCESE
Before September 1987, the area which is now Mymensingh Diocese was part of Dhaka Archdiocese. So the early history of Mymensingh Diocese is linked up with the history of Dhaka. In the second part of the 16th century, there were already Catholics in various parts of what is now Mymensingh Diocese, such as at Hoshenpur of Kishorganj District.
When the Mymensingh Diocese was created in 1987 (comprising the Civil Districts of Mymensingh, Jamalpur, Kishorganj, Netrakona, Sherpur and Tangail), eight parishes existed: six of them close to the Indian State of Meghalaya border (from East to West): Baluchora (1930), Ranikhong (1912), Bhalukapara (1926), Biroidakuni (1928), Baromari (1942) and Mariamnagar (1937).
On May 15, 1987, Pope John Paul II erected the Diocese of Mymensingh and named as first Bishop, Fr. Francis Anthony Gomes, who was then studying in Rome.
Post a Comment
Please do not link comment any spam or drive spams content