ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতায় সেনাবাহিনী কী কী করতে পারবে
অধ্যাপক ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সেনাবাহিনীকে এই ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়ার পর এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে নানা আলোচনা চলছে।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক এমদাদুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে বলেন, “এই বিচারিক ক্ষমতা পাওয়ার পর এখন কোনো ধরনের ব্যবস্থা নিতে সেনাবাহিনীকে প্রশাসনের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না।”
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন সরকার গঠন হলেও মাঠ পর্যায়ে এখন শৃঙ্খলা ফেরেনি। এই সংকট কাটাতে সেনাবাহিনীর হাতে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা থাকলে মাঠের পরিস্থিতি বদলাতে পারে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দুই মাস ধরে মাঠে থাকলেও এই প্রথম সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এর ফলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পাওয়া সেনা কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে তারা অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে বা গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিতে পারবেন।
এছাড়া সেনাবাহিনী কর্মকর্তারা আগামী দুই মাস ফৌজদারি অপরাধের বিভিন্ন ধারা অনুযায়ী অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবেন।
সাধারণত দেশে জরুরি অবস্থার পরিস্থিতি ছাড়া সেনাবাহিনীর হাতে এই ক্ষমতা দেয়া হয় না।
বাংলাদেশের সব জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করার সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীকে “ম্যাজিস্ট্রেসি” পাওয়ার দাবি ওঠে।
যা যা করতে পারবে সেনাবাহিনী
বাংলাদেশের যে কোনো স্থানে গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করতে পারবেন সেনা কর্মকর্তারা। গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করতে পুলিশকে নির্দেশও দিতে পারবে তারা। বেআইনিভাবে আটক ব্যক্তিকে উদ্ধারের জন্য তল্লাশি করতে পারবে।
নতুন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই বিভিন্ন দাবিতে রাস্তা আটকে মিছিল সমাবেশ করতে দেখা যাচ্ছে সরকারি বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এখন থেকে সেনা কর্মকর্তারা বেআইনি সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে পারবেন। একই সাথে এটি বন্ধে বেসামরিক বাহিনীকেও ব্যবহার করতে পারবে সেনাবাহিনী।
এছাড়াও স্থানীয় উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন আদেশ জারি করতে পারবে, আটক করতে পারবে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকেও।
Read More Oyster Farming on the Sea coast/ সাগর উপকূলে ওয়েস্টার চাষ
সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক মো. নুরুল হুদা বিবিসি বাংলাকে বলেন, ''কমিশন্ড সেনা কর্মকর্তারা যখন চার্জ নিবে নিবে তখন তারা ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার এক্সেস করতে পারে।''
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে মঙ্গলবার যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে তাতে বাংলাদেশের ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭টি ধারায় সেনা কর্মকর্তারা তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ এবং ১৪২ ধারা অনুযায়ী সেনাবাহিনীকে এই ক্ষমতা দেয়া হয়েছে।
ফৌজদারি কার্যবিধির এসব ধারা অনুযায়ী, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পাওয়ায় এখন থেকে সেনা কর্মকর্তাদের সামনে কোনো অপরাধ হলে অপরাধীদের সরাসরি গ্রেফতার করতে পারবেন, দিতে পারবেন জামিনও।
Post a Comment
Please do not link comment any spam or drive spams content