ভারতের প্রধান মন্ত্রী  মন কি বাত!

মন কি বাত, মে ২০২৩



আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার। {ভারতের প্রধান মন্ত্রী } মন কি বাত! ‘মন কি বাত’-এ আবার একবার আপনাদের অনেক অনেক স্বাগত জানাই। এবার ‘মন কি বাত’-এর এই পর্ব দ্বিতীয় শতকের শুরু। গত মাসে আমরা সবাই এর বিশেষ  শতকপূর্তি উদযাপন করেছি। আপনাদের অংশগ্রহণই এই অনুষ্ঠানের সবথেকে বড় শক্তি। শততম পর্বের সম্প্রচারের সময় এক অর্থে গোটা দেশ এক সূত্রে বাঁধা পড়েছিল। আমাদের সাফাইকর্মী ভাইবোন হোন বা বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ, ‘মন কি বাত’ সবাইকে এক জায়গায় আনার কাজ করেছে। 

Read More: মধুপুর গড়ে ৩ জানুয়ারি (২০০৪) বনপ্রহরী ও পুলিশের গুলিতে গারো যুবক পীরেন স্নাল (২৮) নিহত হবার পর

আপনারা সবাই যে আত্মীয়তা আর স্নেহ, মন কি বাতের জন্য দেখিয়েছেন, সেটা অভূতপূর্ব, আবেগে পূর্ণ করে দেওয়ার মত। যখন মন কি বাতের সম্প্রচার হয়  তখন পৃথিবীর আলাদা-আলাদা দেশে, ভিন্ন-ভিন্ন টাইম জোনে, কোথাও সন্ধ্যা হচ্ছিল তো কোথাও গভীর রাত ছিল , তা সত্ত্বেও প্রচুর সংখ্যক মানুষ ‘মন কি বাত’-এর শততম পর্ব  শোনার জন্য সময় বের করেছিলেন। হাজার-হাজার মাইল দূরে নিউজিল্যাণ্ডের ওই ভিডিও-ও দেখেছি,  যেখানে একশো বছর বয়সী এক মা আমাকে  তাঁর আশীর্বাদ দিচ্ছেন। ‘মন কি বাত’ নিয়ে দেশবিদেশের মানুষজন তাঁদের ভাবনা ব্যক্ত করেছেন। অনেকে গঠনমূলক বিশ্লেষণও করেছেন। মানুষজন এই ব্যাপারটার প্রশংসা করেছেন যে ‘মন কি বাত’-এ কেবলমাত্র দেশ আর দেশবাসীর উপলব্ধি নিয়ে আলোচনা হয়। আবার একবার এই আশীর্বাদের জন্য আমি সম্পূর্ণ সমাদরে আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।    

Read More: বহুমূত্র ডায়রিয়া আমাশয় জন্ডিস অর্শ্বরোগ হাঁপানি ও কাশি বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে রোগে ব্যবহৃত উদ্ভিদসমুহ

আমার প্রিয় দেশবাসী, অতীতে আমি ‘মন কি বাতে’ কাশী-তামিল সঙ্গমমের কথা বলেছি, সৌরাষ্ট্র-তামিল সঙ্গমমের কথা উল্লেখ করেছি। কিছুদিন আগে বারাণসীতে, কাশী-তেলুগু সঙ্গমমও অনুষ্ঠিত হল। এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারতের ভাবনাকে শক্তিশালী করার এমনই আর এক অনন্য প্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছে দেশে। এই প্রয়াস যুব সঙ্গমের। আমি ভাবলাম, এই ব্যাপারে বিস্তারে তাঁদের কাছ থেকেই জেনে নিই না কেন, যাঁরা এই অনন্য প্রয়াসের অংশীদার। এই জন্য এই মুহূর্তে আমার সঙ্গে ফোনে রয়েছেন দুই তরুণ – একজন অরুণাচল প্রদেশের গ্যামর নৌকুমজী আর দ্বিতীয় জন  হল বিহারের কন্যা বিশাখা সিংজী।


আসুন প্রথমে আমরা গ্যামর নৌকুমের সঙ্গে কথা বলি।


প্রধানমন্ত্রী জীঃ গ্যামরজী নমস্কার।


গ্যামর জীঃ নমস্কার মোদীজী।


প্রধানমন্ত্রী জীঃ আচ্ছা গ্যামরজী, সবার আগে আমি আপনার বিষয়ে একটু জানতে চাই।


গ্যামর জীঃ মোদীজী, সবার আগে তো আমি আপনার এবং ভারত সরকারের প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই যে আপনি খুব মূল্যবান সময় বের করে আপনার সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন আমাকে। অরুণাচল প্রদেশের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে প্রথম বর্ষে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনীয়ারিং নিয়ে পড়ছি আমি।

Read More: বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস ভূক্ত নিম্নলিখিত ২০টি ঔষধ প্রদানকারী উদ্ভিদ (Medicinal Plants)

প্রধানমন্ত্রী জীঃ আর পরিবারে পিতা এবং অন্যান্যরা কী করেন?


গ্যামর জীঃ আমার বাবা ছোটখাটো ব্যাবসা আর তার পরে কিছু চাষবাস সহ নানা কাজ করেন।


প্রধানমন্ত্রী জীঃ আপনি যুব সঙ্গমের খোঁজ পেলেন কিভাবে? যুব সঙ্গমে কোথায় গেলেন, কিভাবে গেলেন, কী হলো সেখানে?


গ্যামর জীঃ মোদীজি, যুব সঙ্গমের আমাদের যে ইনস্টিটিউশন আছে౼ NIT , ওরা আমায় জানিয়েছিল যে আপনি এটাতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তো আমি তখন ইন্টারনেটে একটু খোঁজখবর করি এবং তখনই জানতে পারি যে এটা খুবই ভালো একটি কর্মসূচী যা কিনা “এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের” আমাদের যে পরিকল্পনা আছে সেখানে সংযোজন করতে পারে এবং আমাকে কিছু নতুন বিষয় শেখার সুযোগ করে দেবে। তখনই আমি ওয়েবসাইটে গিয়ে নাম নথিভুক্ত করি। আমার খুবই মজার অভিজ্ঞতা হয়েছে, এটা খুবই ভালো ছিল।   


প্রধানমন্ত্রী জীঃ আপনাকে কিভাবে বাছাই করতে হয়েছে?  


গ্যামর জীঃ মোদীজি, যখন ওয়েবসাইট খুলে ছিলাম তখন অরুণাচল বাসীদের জন্য দুটো অপশন পেলাম। প্রথমটি, অন্ধ্রপ্রদেশের  তিরুপতি আইআইটি । আর, দ্বিতীয়টি ছিল সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি, রাজস্থান।  আমার প্রথম পছন্দ ছিল রাজস্থান আর দ্বিতীয় পছন্দে রেখেছিলাম  তিরুপতি আইআইটিকে। আমি রাজস্থানের জন্য সিলেক্ট হয়েছিলাম। তারপর আমি রাজস্থান গিয়েছিলাম।




প্রধানমন্ত্রী জীঃ আপনার রাজস্থান যাত্রা কেমন ছিল? আপনি এই প্রথমবার রাজস্থান গেলেন?


গ্যামর জীঃ হ্যাঁ আমি এই প্রথম অরুণাচল প্রদেশের বাইরে কোথাও গেলাম। রাজস্থানের সব দুর্গ আমি শুধুই সিনেমা আর ফোনে দেখেছিলাম, তো আমি যখন প্রথমবার রাজস্থানে গেলাম তো আমার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো ছিল, ওখানকার মানুষ খুবই ভাল ছিলেন আর তারা আমাদের যেভাবে আপ্যায়ন করেছিলেন, তা খুবই  ভালো ছিল। নতুন নতুন জিনিস শেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। রাজস্থানের বড় ঝিল এবং সেখানকার মানুষ যেভাবে বৃষ্টির জল সঞ্চয় করে, তা দেখে অনেক নতুন কিছু শিখলাম, যা এর আগে আমার একেবারেই জানা ছিল না, তো রাজস্থান ভ্রমণের এই আয়োজন খুবই ভালো ছিল।

Read More: যাজক - ফাদার -পুরোহিত । কী ভাবে ক্যাথলিক সম্প্রদায়ে যাজক থেকে বাবা father বলার প্রচল এলো ? কেন ক্যাথলিকরা যাজকে "বাবা " বলেন ?

প্রধানমন্ত্রী জীঃ দেখুন, আপনার সব থেকে বড় লাভ হল যে, অরুণাচল বীরদের ভূমি, রাজস্থানও বীরদের ভূমি এবং রাজস্থান থেকে সেনাবাহিনীতেও প্রচুর পরিমাণে সেনা যোগদান করেন, আর অরুণাচলের সীমান্তে যে সৈনিকেরা আছেন, সেখানে রাজস্থানের মানুষের খোঁজ পাবেন তখন আপনি অবশ্যই তাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন, দেখুন আমি রাজস্থানে গিয়েছিলাম, সেখানকার অভিজ্ঞতা ভাগ করলে আপনার সঙ্গে তাদের বন্ধুত্ব আরো গাঢ় হবে। আচ্ছা ওখানে আপনি নিশ্চয়ই কোন সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছিলেন যা দেখে আপনার মনে হয়েছে যে অরুনাচলেও এমনটা আছে?


গ্যামর জীঃ মোদীজি, আমি যে এক সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছিলাম সেটা ছিল দেশপ্রেম। এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের ভাবনা এবং অনুভূতি আমি দেখেছি। কারণ, অরুণাচলেও মানুষ নিজেদের নিয়ে খুবই গর্বিত যে তারা ভারতীয় আর রাজস্থানেও মানুষ তার মাতৃভূমির জন্য যথেষ্ট গর্বিত। এই বিষয়টা আমার খুবই নজরে এসেছে এবং বিশেষত যুব সম্প্রদায়, কারণ আমি ওখানে অনেক যুবকের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি এবং কথাবার্তা বলেছি, এসবের মধ্যে একটা মিল আমার নজরে এসেছে। ওরা চায় ভারতের জন্য কিছু করতে, ওদের মনে নিজের দেশের জন্য ভালোবাসা আছে, তো এই জিনিসটা দুই রাজ্যের ক্ষেত্রেই আমার এক বলে মনে হয়েছে।   

Read More: বন বিভাগ শত শত নয় হাজার হাজার মামলা দিয়ে বনের আদিবাসিন্দাদের জীবন দুর্বিষহ করে দিয়েছে

প্রধানমন্ত্রী জীঃ ওখানে যাদের সাথে পরিচয় হল, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখলেন না ফিরে এসে ভুলে গেলেন?


গ্যামর জীঃ না না, আমরা কথা বলেছি, যোগাযোগ রেখেছি।


প্রধানমন্ত্রী জীঃ আপনি স্যোশাল মিডিয়াতে আক্টিভ?


গ্যামর জীঃ হ্যাঁ মোদিজী, আমি স্যোশাল মিডিয়াতে আক্টিভ।  


প্রধানমন্ত্রী জীঃ তাহলেতো আপনার ব্লগ লেখা উচিৎ। আপনার এই যুব সংগমে কি অভিজ্ঞতা হল, আপনি এতে  কিকরে নাম নথিভুক্ত করলেন, রাজস্থানে আপনার কিরকম লাগলো - এই সব কথা লিখুন, যাতে সারা দেশের যুবরা জানতে পারে 'এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত' যোজনাটি কি, এর মাহাত্ম্য কি এবং যুবসম্প্রদায় এর থেকে কিভাবে লাভবান হতে পারে - আপনার গোটা অভিজ্ঞতার ব্লগ লিখুন, যাতে লোকে পড়ে সব জানতে পারে।  


গ্যামর জীঃ হ্যাঁ  হ্যাঁ  আমি নিশ্চয়ই করব।


প্রধানমন্ত্রী জীঃ গ্যামরজী খুব ভাল লাগলো আপনার সাথে কথা বলে। আপনি, আপনার মত যুবরা, দেশের জন্য, দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য অন্ত্যত গুরুত্বপূর্ণ। আর এই ২৫ বছর বয়সটাও খুব মূল্যবান, আপনাদের নিজেদের জীবনেও এবং দেশের জন্যও। আমার অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য।


গ্যামর জীঃ ধন্যবাদ মোদিজী আপনাকে।


প্রধানমন্ত্রী জীঃ নমস্কার ভাই।


বন্ধুরা, অরুণাচলের মানুষজন এত অতিথিবৎসল হন, ওদের সাথে কথা বলতে আমার খুব ভাল লাগে। যুব সংগমে গ্যামরজির অভিজ্ঞতা তো খুব ভাল ছিল। আসুন, এবারে বিহারের কন্যা বিশাখা সিং-এর সঙ্গে কথা বলি।

Read More: বইটির নাম “দি স্ট্রং ওমেন অব মধুপুর” আমেরিকান মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রখ্যাত নৃবিজ্ঞাণী রবিন্স বার্লিং একটি বই লিখেছেন মান্দিদের নিয়ে ।

প্রধানমন্ত্রী জীঃ বিশাখা সিংজী নমস্কার।


বিশাখাজীঃ সর্বপ্রথম ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমার সাদর প্রণাম।  আমার সাথে আসা সমস্ত প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকেও আপনাকে জানাই সাদর প্রণাম।  


প্রধানমন্ত্রী জীঃ আচ্ছা বিশাখাজি, আগে আমাকে আপনার ব্যাপারে কিছু বলুন। তারপর আমি যুব সংগমের ব্যাপারেও জানতে চাই।  


বিশাখাজীঃ আমি বিহারের সাসারাম শহরের বাসিন্দা। আমি যুব সংগমের ব্যাপারে সবার আগে জানতে পারি কলেজের  হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ থেকে। তারপর আমি এই ব্যাপারে আরও খোঁজ খবর নিই, বিস্তারিত তথ্য বের করি। তখন আমি জানতে পারি যে এটা প্রধানমন্ত্রীজির একটি কর্মসূচী – ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর অন্তর্ভুক্ত যুবসঙ্গম। আমি এতে আবেদন করি এবং আমি এটাতে যোগ দেবার  জন্য আগ্রহী ছিলাম খুবই। কিন্তু এই যে তামিলনাড়ু থেকে আমি ঘুরে এলাম , অনেক কিছু জানতে পারলাম, এটা অমূল্য। এটা আমার কাছে খুবই গর্বের বিষয় যে আমি এই যুব সংগমের একজন অংশগ্রহণকারী ছিলাম। আমি খুবই আনন্দিত। আমি আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই, আপনি আমার মত যুবক-যুবতীদের জন্য এত ভাল একটা কর্মসূচী বানিয়েছেন যাতে আমরা ভারতের বিভিন্ন ভাগের সংস্কৃতিক বৈচিত্রর সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারি।   


প্রধানমন্ত্রী জীঃ বিশাখাজী আপনি কী পড়াশুনা করেন?


বিশাখাজীঃ আমি কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং-এর দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।


প্রধানমন্ত্রী জীঃ আচ্ছা বিশাখাজী, আপনাকে কোন রাজ্যে যেতে হবে, কোথায় যোগ দিতে হবে, সেটা কীভাবে ঠিক করলেন?

Read More: মধুপুর গড়ে কেমন আছেন গারো আদিবাসী জনতা;

বিশাখাজীঃ আমি যখন গুগলে যুব সঙ্গম সম্পর্কে সার্চ করা শুরু করি, তখন আমি জানতে পারি যে বিহারের প্রতিনিধিদের তামিলনাড়ুর প্রতিনিধির সঙ্গে  বিনিময় করা হচ্ছে। তামিলনাড়ু আমাদের দেশের একটি অত্যন্ত সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক রাজ্য, তাই সেই সময়েও যখন আমি জানতে পারি যে বিহার থেকে প্রতিনিধিদের তামিলনাড়ুতে পাঠানো হচ্ছে, এটি আমাকে ফর্মটি পূরণ করা উচিত কিনা, সেখানে যাব কিনা, সেই সিদ্ধান্ত নিতে অনেকটাই সাহায্য করেছিল। আমি আজ সত্যিই খুব গর্ববোধ করছি যে আমি এতে অংশগ্রহণ করেছি এবং আমি খুবই খুশি।


প্রধানমন্ত্রী জীঃ আপনি প্রথমবার তামিলনাড়ুতে গিয়েছিলেন?


বিশাখাজীঃ হ্যাঁ প্রথমবার গিয়েছিলাম।


প্রধানমন্ত্রী জীঃ আচ্ছা, আপনি যদি কোনও স্মরণীয় ঘটনার কথা বলতে চান তাহলে কী বলবেন? দেশের যুবক-যুবতীরা আপনার কথা শুনছেন কিন্তু।


বিশাখাজীঃ পুরো যাত্রাটাই আমার জন্য খুবই ভাল ছিল। প্রতিটি ধাপেই আমরা অনেক কিছু শিখেছি। আমি তামিলনাড়ুতে ভাল বন্ধু পেয়েছি। সেখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছি। সেখানকার লোকদের সঙ্গে মেলামেশা করেছি। তবে সবচেয়ে ভাল জিনিস যেটি পেলাম, যা সবাই পায় না, তা হলো ইসরোতে যাওয়ার সুযোগ এবং আমরা প্রতিনিধি দলের থেকে গিয়েছিলাম বলেই আমরা ইসরোতে যাওয়ার এই সুযোগটা পেয়েছিলাম। দ্বিতীয় সেরা জিনিসটি ছিল যখন আমরা রাজভবনে যাই এবং তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করি। এই দুটি মুহূর্ত আমার কাছে খুব স্মরণীয় ছিল এবং আমি মনে করি যে আমরা এই বয়সে, যুবতী হিসেবে এমন সুযোগ পেতামনা, যা এই যুবসঙ্গমের মাধ্যমে পেলাম। তাই এটি বেশ সুন্দর এবং স্মরণীয় মুহূর্ত ছিল আমার কাছে।


প্রধানমন্ত্রী জীঃ বিহারে খাওয়ার ধরন আলাদা, তামিলনাড়ুতে খাওয়ার ধরন আলাদা।


বিশাখাজীঃ হ্যাঁ।


প্রধানমন্ত্রী জীঃ সেটা কি পুরোপুরি মানানো গিয়েছিল?      


বিশাখাজি : যখন আমরা তামিলনাড়ু গিয়েছিলাম, সেখানে তো দক্ষিণ ভারতীয় খাবার। সেখানে যেতেই সবাই আমাদের ধোসা, ইডলি, সাম্বর, উত্তপম, বড়া, উপমা এইসব পরিবেশন করছিল। যখন আমরা সেটা মুখে তুললাম, আমাদের দারুণ লেগেছিল! ওখানকার খাবার খুবই  স্বাস্থ্যকর, আসলে দারুন স্বাদের খাবার  আর আমাদের উত্তর ভারতের  খাবারের থেকে একেবারেই আলাদা, তাই ওখানকার খাবার আমাদের খুব ভালো লেগেছে এবং ওখানকার লোকজনও খুব ভালো।

Read More: মধুপুর গড়ে আদিবাসীদের উপর সবচেয়ে ভয়াবহ নিপীড়ন

প্রধানমন্ত্রী জীঃ তাহলে তামিলনাড়ুতে এখন বেশ কিছু বন্ধুও হয়েছে নিশ্চয়ই?


বিশাখাজীঃ হ্যাঁ। ওখানে আমরা ছিলাম এনআইটি ত্রিচিতে, তারপর ম্যাড্রাস আইআইটিএ। এই দুই জায়গার ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হয়েছে। এছাড়াও, মাঝে একবার সিআইআই-এর অভ্যর্থনা কর্মসূচী ছিল, সেখানকার আশেপাশের কলেজ থেকেও অনেক  ছাত্রছাত্রী এসেছিল। সেখানে আমরা সেই ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেছিলাম আর আমার খুব ভালো লাগলো তাদের সঙ্গে দেখা করে, অনেকে তো এখন আমার বন্ধু। সেখানে বেশ কিছু প্রতিনিধি-দের সঙ্গেও দেখা হয়েছিল যারা তামিলনাড়ু্তে  এসেছিল বিহারের প্রতিনিধি হিসেবে। আমরা তাদের সাথেও আলাপ করেছিলাম আর এখনো আমরা একে অপরের সম্পর্কে রয়েছি, তাই এটা আমার খুব ভালো লাগে।

Read More: প্রথম বর্ষায় চোকা পাতা গারো ভাষায় সিলকিং সুস্বাদু আরেক রকম চোকাপাতার গাছ আদুরাক পাতা মধুপুরে বিলুপ্ত

প্রধানমন্ত্রী জীঃ তাহলে বিশাখাজি, আপনি ব্লগ লিখুন আর স্যোস্যাল মিডিয়া-তে আপনার সম্পূর্ণ অভিজ্ঞতা জানান। প্রথমত, যুবা সঙ্গমের বিষয়ে, তারপর ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারতের’ বিষয়ে এবং তামিলনাড়ুতে আপনি যেরকম ভালোবাসা পেয়েছেন, আদর-আপ্যায়ন পেয়েছেন সেই বিষয়ে। তামিল মানুষদের ভালবাসা পেয়েছেন, সেই সব বিষয়ে দেশকে জানান। তাহলে লিখবেন আপনি?


বিশাখাজীঃ হ্যাঁ, অবশ্যই।


প্রধানমন্ত্রী জীঃ আমার তরফ থেকে আপনাকে জানাই অনেক শুভকামনা ও অনেক অনেক ধন্যবাদ।


বিশাখাজীঃ প্রধানমন্ত্রী জী অনেক অনেক ধন্যবাদ। নমস্কার।


গ্যামর ও বিশাখা, আপনাদের দু’জনকেই অনেক অনেক শুভকামনা জানাই। যুবা সঙ্গমের মাধ্যমে আপনারা যা শিখলেন, তা আজীবন আপনাদের সঙ্গে থাকবে। আপনাদের সকলকে আমার শুভকামনা জানাই।

বন্ধুরা, বৈচিত্রের মধ্যেই রয়েছে ভারতের শক্তি। আমাদের দেশে দেখার মত অনেক কিছু রয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখেই শিক্ষা মন্ত্রক ‘যুবাসঙ্গম’ নামের এক অনন্য উদ্যোগ শুরু করেছে।

Read More: মধুপুর গড়ে আদিবাসীদের উপর একটি মামলার বিবরণ বন বিভাগের একটি মামলার বিবরণ

এই প্রচেষ্টার উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ বাড়ানো। এছাড়াও  যুবক-যুবতীদের মধ্যে মেলামেশার সুযোগ করে দেওয়া। বিভিন্ন রাজ্যের উচ্চশিক্ষা সংস্থাকে এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। 'যুবসঙ্গমে' যুবক-যুবতীরা অন্য রাজ্যের শহর ও গ্রামে যান, সেখানে তারা বিভিন্ন ধরনের মানুষের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ পান। যুব সঙ্গমের প্রথম পর্বে প্রায় ১২০০ যবে-যুবতী দেশের বাইশটি রাজ্যে ঘুরে এসেছেন। যে যুবকই এর অংশ হয়েছেন, তারা এমন কিছু স্মৃতি নিয়ে ফিরছেন যা সারাজীবন তাদের হৃদয়ে গেথে হয়ে থাকবে। আমরা দেখেছি অনেক কোম্পানির মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক , বিজনেস লিডারসরা  ব্যাদ প্যাকারসদের মত ভারতে সময় কাটিয়েছেন। আমি যখন অন্য দেশের লিডারদের সঙ্গে দেখা করি, তখন তারা বলেন যে তারাও তাদের যুবাবস্থায় ভারত ঘুরতে এসেছিলেন। আমাদের ভারতে এত কিছু জানার এবং দেখার আছে যে প্রত্যেকবার আপনার ঔৎসুক্য বাড়তেই থাকবে। আমি আশা করি যে এই সমস্ত রোমাঞ্চকর তথ্য জানার পর আপনারাও দেশের বিভিন্ন স্থানে যাবার জন্য নিশ্চয়ই অনুপ্রানিত হবেন।  


আমার প্রিয় দেশবাসী কিছুদিন আগে আমি জাপানের হিরোশিমায় গিয়েছিলাম। ওখানে আমার হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। এটা একটি আবেগঘন অনুভূতি ছিল। যখন আমরা ইতিহাসের স্মৃতিকে যত্ন করে সামলে রাখি তো সেটা আগামী প্রজন্মের অনেক ভাবে সাহায্য করে। অনেক সময় মিউজিয়াম-এ আমরা নতুন অভিজ্ঞতা হয়, তো কখনো কখনো অনেক কিছু শিখতে পারি। কিছু দিন আগে ভারতে আন্তর্জাতিক সংগ্রহশালার এক্সপোর আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বিশ্বের ১২০০-এর ও বেশী মিউজিয়াম এর বিশেষত্ব প্রদর্শন করা হয়েছিল। আমাদের এখানে ভারতে ভিন্ন ভিন্ন ধরনের অনেক মিউজিয়াম আছে, যা আমাদের অতীত এর সঙ্গে জড়িত অনেক অজানা তথ্যকে প্রদর্শন করে, যেরকম গুরুগ্রামে একটি ক্যামেরার অনন্য সংগ্রহশালা আছে, এখানে ১৮৬০ সালের পর থেকে ৮০০০ এরও বেশি ক্যামেরার সংগ্রহ রয়েছে।

 তামিলনাড়ুর মিউজিয়াম অফ পসিবিলিটজে আমাদের ভিন্ন ভাবে সক্ষম বন্ধুদের কথা মাথায় রেখে নকশা করা হয়েছে। মুম্বাইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ বাস্তু  সংগ্রহালয় একটি এমন মিউজিয়াম যেখানে ৭০ হাজারেরও বেশি সামগ্রী সংরক্ষিত করা হয়েছে। ২০১০ সালে স্থাপিত ইন্ডিয়ান মেমারি প্রজেক্ট এক ধরনের অনলাইন মিউজিয়াম। এটি পৃথিবীব্যাপী পাঠানো ছবি এবং গল্পের মাধ্যমে ভারতের গৌরবময় ইতিহাসের সংযোগ সূত্রকে জোড়ার কাজ করে চলেছে।  বিভাজনের বিভীষিকার সঙ্গে জড়িত স্মৃতিকেও সামনে আনার প্রয়াস করা হচ্ছে। বিগত বছরেও আমরা ভারতে নতুন নতুন ধরনের মিউজিয়াম আর স্মারক তৈরি হতে দেখেছি। স্বাধীনতা সংগ্রামে আদিবাসী ভাই বোনেদের অংশগ্রহণের উপর সমর্পিত দশটি নতুন মিউজিয়াম তৈরি করা হচ্ছে। 

Read More: জমি-জমা সংক্রান্ত কাগজপত্রের পরিচিতি

কলকাতার ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল-এর বিপ্লবী ভারত গ্যালারিই হোক বা জালিয়ানওয়ালাবাগ মেমোরিয়ালকে পুনরুদ্ধার, দেশের সব পূর্ব প্রধানমন্ত্রীদেরকে সমর্পিত পি এম মিউজিয়ামও আজ দিল্লীর শোভা বর্ধন করছে। দিল্লির ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল এবং পুলিশ মেমোরিয়াল-এ প্রত্যেকদিন অনেক মানুষ শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে আসেন। ঐতিহাসিক ডান্ডি যাত্রাকে সমর্পিত ডান্ডি মেমোরিয়াল হোক বা স্ট্যাচু অফ ইউনিটি মিউজিয়াম। যাই হোক, আমাদের এখানেই থেমে যাওয়া উচিত কারণ দেশ ব্যাপী সংগ্রহশালাগুলির তালিকা অনেক লম্বা আর প্রথমবার দেশে সমস্ত মিউজিয়ামের সম্বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংকলন করা হচ্ছে। মিউজিয়াম কোন থিম এর উপর তৈরি করা হয়েছে, ওখানে কোন ধরনের কি বস্তু রাখা আছে,  সংগ্রহশালার সঙ্গে কি ভাবে যোগাযোগ করা যাবে, এই  সমস্ত কিছুই একটি অনলাইন ডিরেক্টারির মধ্যে একসঙ্গে রাখা হচ্ছে।  


আমি আপনাদের অনুরোধ করছি আপনারা যখনই সুযোগ পাবেন, নিজের দেশের এই সংগ্রহশালাগুলো অবশ্যই দেখতে যাবেন। আপনারা সেখানে আকর্ষণীয় ছবিগুলি #(হ্যাশট্যাগ) Museum Memories এ সকলের সঙ্গে ভাগ করতে ভুলে যাবেন না যেন। এইভাবে আমাদের গৌরবময় সংস্কৃতির সঙ্গে আমাদের ভারতীয়দের সংযোগ আরও শক্তিশালী হবে।

Read More: বিশ্বের প্রাচীন সভ্যতায় উদ্ভিদ ও উদ্ভিজ্জ বাইবেলে কোরানে গ্রিক ও রোমান সভ্যতার

আমার প্রিয় দেশবাসী, আমরা সবাই নিশ্চয়ই একটি কথা বহুবার শুনেছি, বারবার শুনেছি- বিন পানি সব সুন। জল ছাড়া জীবন সংকট তো দেখা দেবেই, ব্যক্তি এবং দেশের উন্নয়নও থমকে যায়। ভবিষ্যতের এই চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে আজ দেশের প্রতিটি জেলায় ৭৫টি অমৃত সরোবর কাটা হচ্ছে। আমাদের অমৃত সরোবর এইজন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ, এইগুলি স্বাধীনতার অমৃত কালের সময় নির্মিত হচ্ছে এবং এতে মানুষের অমৃত প্রচেষ্টা জড়িয়ে আছে। আপনারা জেনে খুশি হবেন যে এখনও পর্যন্ত ৫০ হাজারেরও বেশি অমৃত সরোবর কাটা হয়েছে। জল সংরক্ষণের লক্ষ্যে এটি একটি বড় পদক্ষেপ।


বন্ধুরা, আমরা প্রতি গ্রীষ্মে এইভাবে, জল সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জগুলি নিয়ে কথা বলতে থাকি। এবারও আমরা এই বিষয়ে বলব, তবে এবার আমরা আলোচনা করব জল সংরক্ষণ সম্পর্কিত নতুন উদ্যোগ নিয়ে। একটি স্টার্ট-আপস আছে – ফ্লাক্সজেন। এই স্টার্ট- আপ, আইওটি এনাবেল্ড প্রযুক্তির মাধ্যমে জল সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনার বিকল্প দেয়। এই প্রযুক্তি জল ব্যবহারের ধারাকে  বদলে দেবে এবং নিত্য ব্যবহারে সাহায্য করবে৷ আরেকটি স্টার্ট আপ হল  লিভ-এন-সেন্স। এটি কৃত্রিম মেধা এবং মেশিন লার্নিং- এর উপর ভিত্তি করে একটি প্ল্যাটফর্ম। এর সাহায্যে জল বন্টনের  কার্যকরী তত্বাবধান করা যাবে। এর থেকে এটাও জানা যাবে কোথায় কতটুকু জল অপচয় হচ্ছে। আরেকটি স্টার্ট আপ হল 'কুম্ভী কাগজ' (Kumbhi Kagaz)। এই 'কুম্ভী কাগজ'  এমন একটি বিষয়, আমার সম্পূর্ণ বিশ্বাস যে, আপনাদেরও খুব ভালো লাগবে। ‘কুম্ভী কাগজ’ নতুন উদ্যোগ সংস্থাটি একটি বিশেষ কাজ শুরু করেছে। এরা কচুরিপানা থেকে কাগজ তৈরির কাজ শুরু করেছে, অর্থাৎ, এক সময় যে কচুরিপানা, কখনো, জলস্রোতের সময় সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হতো, এখন কাগজ তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে।      

Read More রাবার চাষের ফলে মধুপুর ও চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক বন, শালবন, প্রাণবৈচিত্র ধবংস হয়ে গেছে বিভিন্ন রিপোর্টে তথ্য

বন্ধুরা, অনেক যুবকযুবতী যেরকম উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে কাজ করছেন, আবার এমন অনেক যুবকযুবতী রয়েছেন যারা সমাজকে সচেতন করার মিশনে  নিয়োজিত । যেমন ছত্তিশগড়ের বালোদ জেলার যুবসম্প্রদায়। এখানকার যুবক-যুবতীরা জল বাঁচাতে প্রচার শুরু করেছে। তারা বাড়ী-বাড়ী গিয়ে মানুষকে জল সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতন করে। যেখানেই বিবাহের মতো অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়, সেখানে, তরুণদের এই দল-টি যায়, কীভাবে জলের অপব্যবহার বন্ধ করা যায়, সে সম্পর্কে তথ্য দেয়। ঝাড়খণ্ডের খুঁটি জেলাতেও জলের দক্ষ ব্যবহার সম্পর্কিত একটি প্রচারমূলক প্রচেষ্টা করা হচ্ছে৷ খুঁটির মানুষ জল সংকট মোকাবিলায় বস্তা দিয়ে বাঁধ নির্মাণের পথ খুঁজে পেয়েছেন। বস্তা বাঁধের মাধ্যমে জল জমিয়ে এখানে শাক সবজিও ফলতে শুরু করেছে। এতে মানুষের আয়ও বাড়ছে, এলাকার চাহিদাও পূরণ হচ্ছে। সাধারণের যে কোনো উদ্যোগ, কীভাবে অনেক পরিবর্তন নিয়ে আসে, তার এক উজ্জ্বল উদাহরণ হয়ে উঠেছে খুঁটি। এই প্রচেষ্টার জন্য আমি এখানকার মানুষকে অভিনন্দন জানাই।


আমার প্রিয় দেশবাসী, ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের সময় আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রী জয় জওয়ান, জয় কিষান স্লোগান দিয়েছিলেন।

Read More : কেন কিভাবে কি কারনে ধ্বংস হলো ঐতিহ্যবাহী শালবন

পরবর্তীকালে অটলজি তার সঙ্গে জয় বিজ্ঞান যোগ করেছিলেন। কয়েক বছর আগে দেশের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বলার সময় আমি জয় অনুসন্ধানের কথা বলেছিলাম। মন কি বাতে আজ এমন এক ব্যক্তির কথা, এমন এক সংস্থার কথা  বলব, যারা জয় জওয়ান, জয় কিষান, জয় বিজ্ঞান এবং জয় অনুসন্ধান এই চারটিরই প্রতিফলিত। এই ভদ্রলোক হলেন মহারাষ্ট্রের শ্রীমান শিবাজী শামরাও ডোলেজি। শিবাজী ডোলে নাসিক জেলার একটি ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা। তিনি দরিদ্র জনজাতি কৃষক পরিবারের সন্তান এবং একজন প্রাক্তন সৈনিকও বটে। সেনাবাহিনীতে থাকাকালীন তিনি দেশের  সেবায় নিয়জিত ছিলেন । অবসর গ্রহণের পর তিনি নতুন কিছু শেখার সিদ্ধান্ত নেন এবং কৃষি বিজ্ঞানে ডিপ্লোমা করেন। অর্থাৎ জয় জওয়ান থেকে জয় কিষানের দিকে অগ্রসর হন। এখন প্রতিমুহূর্তে তাঁর চেষ্টা এটাই থাকে, যে কী ভাবে কৃষি ক্ষেত্রে অধিকতর অবদান রাখা যায়। নিজের এই অভিযানে শিবাজী ডোলেজি কুড়ি জনের একটি ছোট টিম তৈরি করেছেন এবং কয়েকজন প্রাক্তন সৈনিককেও এতে যুক্ত করেছেন। এরপর তাঁর এই টিম ভেঙ্কটেশ্বর কো-অপারেটিভ পাওয়ার এন্ড অ্যাগ্রো প্রসেসিং লিমিটেড নামের একটি সহকারী সংস্থার পরিচালনার দায়িত্ব নিজেদের হাতে নিয়েছেন। এই সহকারী সংস্থাটি নিষ্ক্রিয় হয়ে পরে ছিল। তাকে পুনরুজ্জীবিত করার গুরুদায়িত্ব তারা নিয়েছেন। দেখতে দেখতে আজ ভেঙ্কটেশ্বর কো-অপারেটিভের প্রসার অনেক জেলাতে হয়ে গেছে। আজ এই দলটি মহারাষ্ট্র আর কর্নাটকে কাজ করছে। এতে প্রায় ১৮ হাজার মানুষ যুক্ত হয়েছেন, যার মধ্যে যথেষ্ট সংখ্যক  সেনাবাহিনীর প্রাক্তনীরাও রয়েছেন।

Read More যে বনে গাছ নেই এখন এলাকাবাসী ব্যবহৃত এন্টীবায়োটিক চরম স্বীকার

নাসিকের মালেগাঁওতে এই দলের সদস্যরা ৫০০ একরেরও বেশি জমিতে অ্যাগ্রো ফার্মিং করছে। এই দলটি জল সংরক্ষণের জন্য অনেক জলাশয় তৈরি করার কাজেও যুক্ত আছে। আরেকটা বিশেষ ব্যাপার হল এই যে তারা প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে আর দোহ শিল্প অর্থাৎ ডেয়ারিও শুরু করেছেন। এখন তাদের ফলানো আঙ্গুর ইউরোপেও রপ্তানি করা হচ্ছে। এই দলের যে দুটি বড় বৈশিষ্ট্য আমার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে তা হল জয় বিজ্ঞান এবং জয় অনুসন্ধান। এর সদস্যরা প্রযুক্তি ও আধুনিক কৃষিকাজের নানা পন্থাপদ্ধতি যত বেশি সম্ভব ব্যবহার করছেন। দ্বিতীয়ত তারা রপ্তানির জন্য প্রয়োজনীয় অনেক রকম সার্টিফিকেশনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। "সহকার থেকে সমৃদ্ধি" এই ভাবনার সঙ্গে কাজ করা এই দলটিকে আমি অভিনন্দন জানাই। এই প্রয়াসের মাধ্যমে শুধু বহু সংখ্যক মানুষের ক্ষমতায়ন হয়েছে তাই নয়, জীবিকারও অনেক সংস্থান হয়েছে। আমার বিশ্বাস এই প্রয়াস মান কি বাত এর প্রত্যেক শ্রোতাকে অনুপ্রাণিত করবে।  


আমার প্রিয় দেশবাসী, আজ ২৮ শে মে, মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী বীর সাভারকারের জন্মদিন। তাঁর ত্যাগ, সাহস ও সংকল্পশক্তির সঙ্গে যুক্ত কাহিনীগুলি আজও আমাদের সবাইকে উদ্বুদ্ধ করে। আমি সেই দিনটা ভুলতে পারব না, যখন আমি আন্দামানে সেই কুঠুরিতে গিয়েছিলাম যেখানে বীর সাভারকর দ্বীপান্তরের সাজা ভোগ করছিলেন। বীর সাভারকারের ব্যক্তিত্ব দৃঢ়তা ও বিশালত্বের আধার ছিল। তার নির্ভীক ও আত্মাভিমানী স্বভাব  দাসত্বের মানসিকতা একেবারেই বরদাস্ত করতে পারত না। শুধু স্বাধীনতা সংগ্রামই নয়, সামাজিক সাম্য ও ন্যায়ের জন্য বীর সাভারকর যা কিছু করেছেন তার জন্য তাকে আজও স্মরণ করা হয়।

Read More কর আদায় ও বন সম্পদ লুন্ঠন করার জন্য ঔপনিবেশক ব্রিটিশ শাসকেরা জুমচাষ বন্ধ করেছিলো

বন্ধুরা, কয়েকদিন পর চৌঠা জুন সন্ত কবীরদাসজিরও জন্মদিন। কবীরদাসজি আমাদের যে পথ দেখিয়েছেন তা আজও ততটাই প্রাসঙ্গিক। কবীরদাসজি বলতেন,


"কবীরা কুয়া এক হ্যায়, পানি ভরে অনেক


বর্তন মে হি ভেদ হ্যায়, পানি সব মে এক"।


অর্থাৎ কুয়ো থেকে যতই আলাদা আলাদা ধরনের মানুষ জল ভর্তি করতে আসুক না কেন কুয়ো কারোর মধ্যে কোন তফাৎ করে না। প্রত্যেকটা পাত্রে থাকা জল একই। সাধক কবীর সমাজকে যেকোনোভাবে ভাগ করার মত কু-প্রথার বিরোধিতা করেছেন, সমাজকে এই বিষয়ে সচেতন করার চেষ্টা করেছিলেন। আজ যখন দেশ উন্নত হওয়ার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে এগোচ্ছে তখন আমরা সাধক কবীরের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণ করে সমাজের ক্ষমতায়নে নিজেদের উদ্যোগ বৃদ্ধি করতে পারি।   


আমার প্রিয় দেশবাসী, এখন আমি আপনাদের সঙ্গে দেশের এমন এক মহান ব্যক্তির কথা আলোচনা করব যিনি রাজনীতি এবং চলচ্চিত্র জগতে নিজের আশ্চর্য প্রতিভার জোরে বিশেষ নিদর্শন রেখেছেন। এই বিখ্যাত ব্যক্তির নাম এন টি রামারাও যাঁকে আমরা সকলে এন টি আর নামেও চিনি। আজ এন টি আরের শততম জন্মজয়ন্তী। নিজের বহুমুখী প্রতিভার মাধ্যমে তিনি শুধু তেলেগু সিনেমার একজন মহানায়ক হিসেবেই উপস্থাপিত হননি; বরং তিনি কোটি কোটি মানুষের মন জয় করেছিলেন। আপনারা জানেন যে উনি ৩০০ থেকেও বেশি সিনেমায় কাজ করেছেন? উনি অনেক ঐতিহাসিক চরিত্রকে নিজের অভিনয়ের মাধ্যমে জীবন্ত করে তুলেছিলেন। ভগবান কৃষ্ণ, রাম এবং এমন অনেক ভূমিকায় এন টি আরের অভিনয় মানুষ এতটাই পছন্দ করেছেন যে মানুষ তাঁকে আজও মনে রেখেছেন। এন টি আর সিনেমা জগতের সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতিতেও নিজের বিশেষ পরিচিতি তৈরি করেছিলেন। এখানেও তিনি মানুষের সম্পূর্ণ ভালবাসা এবং আশীর্বাদ পেয়েছেন। এই দেশ, এই পৃথিবীর লক্ষ লক্ষ মানুষের মনে বিশেষ জায়গা তৈরি করে নেওয়া এন টি রামারাওজিকে আমি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছি।


আমার প্রিয় দেশবাসী, ‘মন কি বাত’ এবার এই পর্যন্তই। পরেরবার নতুন কিছু বিষয়ের সঙ্গে আপনাদের মাঝে আসবো, ততদিনে কিছু জায়গায় ভীষণ গরম পড়বে। কিছু জায়গায় হয়তো বৃষ্টি শুরু হয়ে যাবে। আবহাওয়ার যে কোন পরিস্থিতিতেই আপনাদের নিজেদের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে হবে। একুশে জুন আমরা আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালন করব, এই বিষয়ে দেশে-বিদেশে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। আপনারা এই প্রস্তুতির বিষয়ে নিজেদের মনের কথা আমায় লিখতে থাকুন। কোন অন্য বিষয়েও কিছু যদি আপনারা জেনে থাকেন তা আমায়ও জানান। আমি  চেষ্টা করি ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে আপনাদের থেকে আসা অনেক পরামর্শ অন্তর্ভুক্ত করতে। আবারো আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। পরের মাসে আবার দেখা হবে, ততদিনের জন্য আমায় বিদায় দিন। নমস্কার।   

সূত্র : Connect with the PM       

Narendra Modi 




Post a Comment

Please do not link comment any spam or drive spams content

Previous Post Next Post